উৎপত্তি স্থল | ভারত |
---|---|
অঞ্চল বা রাজ্য | ঔরঙ্গাবাদ, মহারাষ্ট্র |
মূল উপকরণ | নারিকেল, পোস্ত (খুশ-খুশ), মাটন, পিয়াল, দাহি (দই) বা লেবু |
রান্নার বই: নান কালিয়া মিডিয়া: নান কালিয়া |
নান কালিয়া হল ভারতের মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে উদ্ভূত একটি খাদ্যের পদ। এটি মাটন ও বিভিন্ন ধরনের মশলার একটি সংমিশ্রণ। নান হল একটি রুটি যা তন্দুরে (গরম চুল্লি) তৈরি করা হয়, অন্যদিকে কালিয়া হল মাটন বা গরুর মাংস ও বিভিন্ন মশলার মিশ্রণ।[১][২]
যখন মোহাম্মদ তুঘলক তার রাজধানী দিল্লি থেকে দৌলতাবাদে স্থানান্তরিত করেন, তখন দিল্লি থেকে দৌলতাবাদে বিপুল সংখ্যক লোক চলে যায়। দৌলতাবাদের পথে তুঘলকের বিশাল সৈন্যদল ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এত বড় সৈন্যবাহিনীকে খাদ্য সরবরাহ করা ছিল কঠিন কাজ। তাই শাহী বাবুর্চি (রাজকীয় বাবুর্চি) একটি গরম চুল্লি খুঁড়ে হাজার হাজার নানের ঘূর্ণি তৈরি করলেন। এদিকে, ধীরে ধীরে গরুর মাংস বা মাটন রান্না করে ও বিশাল ডেকের কড়াইতে স্থানীয় মশলা যোগ করে কালিয়া প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, এই খাদ্য পদটি সাধারণত সিপাহী সৈন্যরা খেতেন এবং এটিকে 'সিফাইও কা খানা' বা 'ফৌজি কা খানা'ও বলা হত। এটি সাধারণত ঔরঙ্গাবাদে ও বিশেষত বিবাহের পাশাপাশি বিশেষ অনুষ্ঠানে তৈরি করা হয়।[৩]
নান একটি খোলা মাটির চুলায় প্রস্তুত করা হয়, যা মাটির একটি গর্তের মধ্যে লাগানো হয়। পাশের গর্ত থেকে আগুন লাগানো হয়। রুটিওয়ালা (সাধারণত ভাটিয়ারা বলা হয়) চুলার পাশে বসে নানকে সেঁকার জন্য চুলায় রাখে, এই নানগুলি বিশেষভাবে নকশাকৃত লাঠি দিয়ে তোলা হয়। এই নানগুলো বেশ তুলতুলে। এই নানগুলির প্রত্যেকটি সেঁকার সাথে সাথে হলুদ ও গুড়ের পানি দিয়ে ঝাড়া দেওয়া হয়। ফলে এটি নানকে সোনালি রংয়ের করে তোলে এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী করে।
কালিয়া হল একটি স্যুপি তরকারি, যা বেশ কয়েকটি উপকরণ ও একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়। ঔরঙ্গাবাদের কাছাকাছি শহর জুড়ে মশলা ও উপকরণের মধ্যে বেশ কিছু বৈচিত্র্য রয়েছে। ঔরঙ্গাবাদের কালিয়া দই ভিত্তিক, অন্যদিকে খুলদাবাদের একটি লেবু ভিত্তিক। ডেক নামক একটি বড় কড়াইতে কালিয়া প্রস্তুত করা হয়, এতে তেলের উপরের স্তর থাকে। উপরে এই মশলাদার তেলকে তড়ি বলে।