পূজা হেগড়ে | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | বাণিজ্যে স্নাত্তকোত্তর |
পেশা | |
কর্মজীবন | ২০১২ – বর্তমান |
পূজা হেগড়ে (জন্ম: ১৩ অক্টোবর ১৯৯০) মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণকারী একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, যিনি মূলত তেলুগু এবং হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে থাকেন। তিনি একজন প্রাক্তন সুন্দরী প্রতিযোগী, তিনি মাইসকিনের তামিল সুপারহিরো চলচ্চিত্র মুগামুদী (২০১২)-তে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশের আগে মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া ২০১০ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছিলেন। এরপরে হৃতিক রোশনের সাথে আশুতোষ গোয়ারিকরের মহেঞ্জো দাড়ো (২০১৬) চলচ্চিত্রে মুখ্য অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয় করতে স্বাক্ষর করার সময়ে তিনি তেলুগু চলচ্চিত্র ওকা লাইলা কোসাম এবং মুকুন্দা (২০১৪) তে অভিনয় করেছিলেন।[১]
পূজা হেগড়ে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেখানেই বেড়ে উঠেছিলেন। তার পিতা-মাতা মঞ্জুনাথ হেগড়ে এবং লতা হেগড়ে কর্ণাটকের মাঙ্গলুরুর বাসিন্দা ছিলেন। তার মাতৃভাষা তুলু, এছাড়া তিনি ইংরেজি, মারাঠি এবং হিন্দিতেও সাবলীল।[২] তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, তিনি এম.এম.কে. কলেজে পড়াশুনা করতেন। তিনি নিয়মিত আন্তঃকলেজীয় প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে এবং নৃত্য ও ফ্যাশন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চেষ্টা করতেন।[৩]
হেগড়ে মিস ইন্ডিয়া ২০০৯ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন, তবে মিস ইন্ডিয়া ট্যালেন্টেড ২০০৯ সম্মান জেতা সত্ত্বেও প্রথম দিকেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরের বছর তিনি পুনরায় আবেদন করেছিলেন এবং মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া ২০১০ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছিলেন, এছাড়াও তিনি পার্শ্ব প্রতিযোগিতা মিস ইন্ডিয়া সাউথ গ্ল্যামারাস হেয়ার ২০১০-এর মুকুট জিতেছিলেন। তিনি মাইসকিনের তামিল সুপারহিরো চলচ্চিত্র মুগামুদী (২০১২)-তে জীবের বিপরীতে নারী মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি সে'বছরের আগস্টে বক্স অফিসে দুর্দান্ত এক উদ্বোধন করেছিল। তবে চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র ও নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করেছিল এবং দূর্ভাগ্যবশত এটি বাণিজ্যিক ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছিল।[৪] হেগড়ের অভিনয়ও মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করেছিল; সিফি ডট কম-এর একজন সমালোচক উল্লেখ করেছিলেন, তিনি "আশা পূর্ণ করতে পারেননি", যদিও দ্য হিন্দু-এর একজন সমালোচক উল্লেখ করেছিলেন, "প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য তার তেমন সুযোগ নেই।"[৫] তিনি ২য় দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ তামিল নবাগতা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন অর্জন করেছিলেন, কিন্তু লক্ষ্মী মেননের কাছে পরাজিত হন।[৬]
তার অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি ছিল তেলুগু ভাষার ওকা লাইলা কোসাম (২০১৪), যেখানে তিনি নাগা চৈতন্যের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন। একই সময়ে তিনি ৬২তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (দক্ষিণ)-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছিলেন।[৭] একটি প্রযোজনা সংস্থা এবং পরিচালক বিজয় কোন্ডার পূর্ববর্তী উদ্যোগের সাফল্য তাকে এই প্রকল্পে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। তিনি মুখ্য নারী চরিত্রে অভিনয়ে সহায়তার জন্য তেলুগু ভাষা রপ্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মুকুন্দা চলচ্চিত্রে অভিনেতা চিরঞ্জীবীর ভাগ্নে বরুণ তেজ'র সাথে অভিনয় করেছিলেন। একটি গ্রামের পটভূমিতে নির্মিত প্রণয়-মারপিটধর্মী কাহিনীর চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালের শেষদিকে মুক্তি পায়।[৮][৯] চলচ্চিত্রটিতে হেগড়ে গোপিকাম্মা গানে তার অবিস্মরণীয় অভিনয়ের মাধ্যমে সকলকে মুগ্ধ করেছিল।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে হেগড়ে সিন্ধু সভ্যতার পটভূমিতে নির্মিত আশুতোষ গোয়ারিকরের পর্যায়কালীন চলচ্চিত্র মহেঞ্জো দাড়ো-তে হৃতিক রোশনের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক করেছিলেন। গোয়ারিকরের স্ত্রী তাকে একটি বিজ্ঞাপনে লক্ষ্য করেছিলেন এবং অডিশনে ডাকার পরে তাকে চলচ্চিত্রটির জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল, যা তিনি সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছিলেন।[১০][১১] চলচ্চিত্রটির প্রতি তার প্রতিশ্রুতির ফলস্বরূপ, তিনি প্রকাশ করেছিলেন যে তিনি তার হিন্দি চলচ্চিত্রটি মুক্তি না পাওয়া অবধি আঞ্চলিক ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলিতে কাজ করা থেকে বিরতি নেবেন এবং মণি রত্নম পরিচালিত চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ প্রত্যাখান করেছিলেন।[১২][১৩] ২০১৬ সালে মহেঞ্জো দাড়ো মুক্তি পাওয়ার পর সমালোচকদের দ্বারা নিন্দা পেয়েছিল[১৪] এবং বক্স অফিসে বড় ফ্লপ হয়ে গিয়েছিল।[১৫] ২০১৭ সালে তিনি তেলুগু ভাষার কৌতুক-মারপিটধর্মী চলচ্চিত্র দুভভাডা জগন্নাধাম-এ অল্লু অর্জুনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।[১৬]
২০১৮ সালে তিনি তিনটি তেলুগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। প্রথমটি হল "জিগুলে রানী" গানে রাঙ্গাস্থালাম চলচ্চিত্রে বিশেষ উপস্থিতি। পরবর্তী চলচ্চিত্রগুলি ছিল বল্লমকোন্ডা শ্রীনিবাসের বিপরীতে সাক্ষ্যম[১৭] এবং জুনি. এনটিআরের বিপরীতে ত্রিবিক্রম শ্রীনিবাসের পরিচালনায় মারপিটধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্রে অরবিন্দা সামেথা বীর রাঘব।[১৮] ২০১২ সালেও তিনি তিনটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন, মহর্ষি, গাড্ডালাকোণ্ডা গণেশ এবং হাউজফুল ৪। মহর্ষি একটি তেলুগু ভাষার মারপিটধর্মী চলচ্চিত্র, যেটি পরিচালনা করেছিলেন বংশী পৈডিপল্লি এবং মুখ্য অভিনেতা ছিলেন মহেশ বাবু। এটি মুক্তির পর মিশ্র সমালোচনা পেয়েছিল।[১৯] একই বছরে তার অভিনীত দ্বিতীয় তেলুগু চলচ্চিত্রটি ছিল হরিশ শঙ্কর পরিচালিত মারপিটধর্মী-থ্রিলার চলচ্চিত্র গাড্ডালাকোণ্ডা গণেশ, যেটি ২০১৪ সালের তামিল ভাষার চলচ্চিত্র জিগরটান্ডা-এর পুনর্নির্মাণ ছিল। চলচ্চিত্রটিতে পূজার সাথে বরুণ তেজ এবং অথর্ব অভিনয় করেছিলেন।[২০] ফরহাদ সামজি পরিচালিত সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কৌতুকধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিন বছরের ব্যবধানে পূজা বলিউডে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি রাজকুমারী মালা ও পূজা (পুনর্জন্ম) চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[২১] চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে প্রায় ₹২৮০ কোটি উপার্জন করেছিল।[২২] পূজা ত্রিবিক্রম পরিচালিত ২০২০ সালের তেলুগু ভাষার মারপিটধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্র আলা বৈকুন্ঠপুরামলো-এ অল্লু অর্জুনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন, যেটি প্রায় ₹২৫০ কোটি উপার্জনের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বাধিক উপার্জনকারী তেলুগু চলচ্চিত্রগুলির একটিতে পরিণত হয়েছিল।[২৩]
তার আসন্ন প্রকল্পগুলির মাঝে রয়েছে প্রভাসের বিপরীতে বহুভাষিক প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র[২৪] এবং আখিল আক্কিনেনির বিপরীতে মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর, যেটি পরিচালনা করবেন বোম্মারিলু ভাস্কর এবং প্রযোজনা করবেন বানি বাসু ও বাসু বর্মা।[২৫][২৬] এছাড়াও তিনি সালমান খানের বিপরীতে তার আসন্ন চলচ্চিত্র কাভি ঈদ কাভি দিওয়ালি-তে অভিনয় করবেন, এটি পরিচালনা করবেন ফরহাদ সামজি।[২৭]
এখনও মুক্তি না পাওয়া চলচ্চিত্রগুলি বোঝায় |
বছর | শিরোনাম | চরিত্র | ভাষা | টীকা | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
২০১২ | মুগামুদী | শক্তি | তামিল | অভিষেক | [২৮] |
২০১৪ | ওকা লাইলা কোসাম | নন্দনা | তেলুগু | [২৯] | |
মুকুন্দা | গোপিকা | [৩০] | |||
২০১৬ | মহেঞ্জো দাড়ো | চানি | হিন্দি | [৩১] | |
২০১৭ | দুভভাডা জগন্নাধাম | পূজা | তেলুগু | [৩২] | |
২০১৮ | রাঙ্গাস্থালাম | জিগেলু রানী | "জিগেলু রানী" গানে বিশেষ উপস্থিতি | [৩৩] | |
সাক্ষ্যম | সৌন্দর্য লাহিড়ী | [৩৪] | |||
অরবিন্দা সামেথা বীর রাঘব | অরবিন্দা | [৩৫] | |||
২০১৯ | মহর্ষি | পূজা | [৩৬] | ||
গাড্ডালাকোণ্ডা গণেশ | শ্রীদেবী | [৩৭] | |||
হাউজফুল ৪ | রাজকুমারী মালা / পূজা | হিন্দি | [৩৮] | ||
২০২০ | আলা বৈকুন্ঠপুরামলো | আমুল্যা / আমু | তেলুগু | [৩৯] | |
২০২১ | মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর | বিভা | [২৬] | ||
২০২২ | রাধে শ্যাম | প্রেরণা | [৪০] | ||
বিস্ট | প্রীতি | তামিল | [৪১] | ||
আচার্য | নীলাম্বরী | তেলুগু | [৪২] | ||
এফ৩: ফান অ্যান্ড ফ্রাস্ট্রেশন | নিজেই | তেলুগু | "জীবন অন্তর ইত্তা ভুন্দালা" গানে বিশেষ উপস্থিতি | [৪৩] | |
সার্কাস | জিয়া গুপ্তা | হিন্দি | [৪৪] | ||
২০২৩ | কিসি কা ভাই কিসি কি জান | ভাগ্যলক্ষ্মী গুন্ডামনেনি | হিন্দি | [৪৫] | |
২০২৪ | গুন্টুর কেরাম | টিবিএ | তেলুগু | চিত্রগ্রহণ | [৪৬] |
| ||||||||
সর্বমোট[ক] | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
বিজয় | ২ | |||||||
মনোনয়ন | ৫ | |||||||
|
অনুষ্ঠান | বছর | বিভাগ | কর্ম | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার | ২০১৩ | শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক – তামিল | মুগামুদী | মনোনীত | [৪৭] |
দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার | ২০১৫ | শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক – তেলুগু | ওকা লাইলা কোসাম | মনোনীত | [৪৮] |
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ২৬ জুন ২০১৫ | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী – তেলুগু | মনোনীত | [৪৯] | |
স্টারডাস্ট পুরস্কার | ২০১৬ | শ্রেষ্ঠ অভিষেক – নারী | মহেঞ্জো দাড়ো | মনোনীত | [৫০] |
জি তেলুগু গোল্ডেন পুরস্কার | ২০১৭ | বর্ষসেরা বিনোদনশিল্পী (নারী) | দুভভাডা জগন্নাধাম | বিজয়ী | [৫১] |
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী – তেলুগু | অরবিন্দা সামেথা বীর রাঘব | মনোনীত | [৫২][৫৩] |
জি সিনে পুরস্কার তেলুগু | ২০২০ | প্রিয় অভিনেত্রী | মহর্ষি | বিজয়ী | [৫৪] |