কোনও রোগ সংক্রামক জীবাণুর সংক্রমণের প্রকোপ (ইংরেজি: Virulence) বলতে সংক্রমিত হবার পর ঐ জীবাণুর পোষকদেহে ক্ষতি সৃষ্টি করার মাত্রা বা সামর্থ্যকে বোঝায়। এটিকে সংক্রমণের বেগ (যেমন "জ্বরের বেগ"), সংক্রমণের তীব্রতা[১] বা সংক্রমণের প্রাবল্য নামক সমার্থক পরিভাষাগুলি দিয়েও নির্দেশ করা হতে পারে।
তবে রোগবিস্তার বিজ্ঞানের আলোচনায় "প্রকোপ" পরিভাষাটি একটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ বলতে সেটি কোনও জনসমষ্টিতে কত প্রবলভাবে প্রকাশ পাচ্ছে বা ছড়িয়ে পড়ছে, তা নির্দেশ করা হয়।
বেশিরভাগ পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে প্রাণীদেহের তন্ত্রের আলোচনায়, প্রকোপ পরিভাষাটি দিয়ে কোনও জীবাণুর দ্বারা সেটির পোষক প্রাণীর দেহে ক্ষতির মাত্রাকে নির্দেশ করা হয়।[২] এর বিপরীতে কোনও জীবাণুর রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষমতা বলতে সেটির পোষকদেহে রোগ সৃষ্টি করার সামর্থ্যকে বোঝায়। কোনও জীবাণুর রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষমতা এর প্রকোপ উপাদানগুলির দ্বারা নির্ধারিত হয়। [৩][৪] বংশাণুর জন্য বংশাণু ব্যবস্থাগুলি (প্রায়শই উদ্ভিদভিত্তিক) সম্পর্কিত বিশেষ আলোচনায় "প্রকোপ" পরিভাষাটি দিয়ে কোনও রোগজীবাণুর একটি প্রতিরোধক পোষককে সংক্রমিত করার ক্ষমতাকে নির্দেশ করা হয়।[৫]
আবার বাস্তুবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রকোপ হল কোনও পরজীবী কর্তৃক সেটির পোষকের বংশবিস্তার-ক্ষমতা লোপ।
প্রকোপের ধারণাটিকে সন্নিকটস্থ ও চূড়ান্ত কারণের প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। রোগজীবাণুর যে বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি পোষকদেহে অসুস্থতার সৃষ্টি করে, সেগুলি হল প্রকোপের সন্নিকটস্থ কারণ। অন্যদিকে যেসব বিবর্তনীয় চাপের কারণে কোনও রোগজীবাণুর একটি প্রভেদের (স্ট্রেইন) মধ্যে এইসব বিশেষ বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব ঘটে, সেগুলি হল প্রকোপের চূড়ান্ত কারণ।[৬]