ফিলোমেলা (অ্যাথেন্সের রাজকন্যা)

থেরেউস কর্তৃক ফিলোমেলাকে ধর্ষণ, ওভিডের "মেটামরফসিস" অবলম্বনে ১৫৬২ সালে অঙ্কিত।

ফিলোমেলা হল গ্রিক পুরাণে উল্লেখিত পান্দিওন ১মজেউক্সিপ্পের কন্যা এবং দ্বিতীয় এরেখথেউস, বৌতেস, প্রোক্নেদ্বিতীয় কেক্রপ্সের বোন। ফিলোমেলা গ্রিক পুরাণের অপ্রধান চরিত্র হলেও তাকে সাহিত্য, শিল্পকলা ও সঙ্গীতের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

পুরাণে তার সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন গল্প রয়েছে। তবে একটি উল্লেখযোগ্য গল্প হল তার বোন প্রোক্নের স্বামী থেরেউস তাকে ধর্ষণ করে এবং তার জিব কেটে দেয়। তার প্রতিশোধ নেওয়া হলে সে বুলবুলি পাখিতে রূপান্তরিত হয়। পৌরাণিক গল্পে তার করুণ ঘটনার জন্য বুলবুলি পাখির গানকে তার বিলাপের সাথে তুলনা করা হয়। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে স্ত্রী পাপিয়া পাখি গান করতে পারে না, শুধু পুরুষ বুলবুলি পাখিই গান গায়।[][]

পুরাণে ফিলোমেলার গল্প

[সম্পাদনা]

ফিলোমেলা, প্রোক্নেথেরেউস এর সম্পূর্ণ ও এখন পর্যন্ত বিদ্যমান গল্প পাওয়া যায় রোমান কবি ওভিডের (খ্রিস্টপূর্ব ৪৩ - ১৭/১৮ খ্রিষ্টাব্দ) মেটামরফসিসে, যেখানে প্রাচীন যুগের তথ্যসহ গল্পটি রচিত হয়েছ।[][] অনুমান করা হয় ওভিড তার সময়ে প্রাপ্ত গ্রিক ও লাতিন উৎস, যেমন সুডু-অ্যাপোলোডোরাস এর বিব্লিওথিকা (খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী)[][] বা এমন কিছু উৎস যা এখন খণ্ড হিসেবে পাওয়া যায়, যেমন সফোক্লিসের নাটক থেরেউস (খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দী) এর ভিত্তিতে রচনা করেছেন।[][][]

ওভিডের গল্প অনুসারে, থেরেউস থ্রেসের রাজা ও আরেস এর পুত্র। থেরেউসের সাথে প্রোক্নের বিয়ের পঞ্চম বছরে প্রোক্নে তার স্বামীর কাছে তার বোনকে দেখতে অ্যাথেন্স যাওয়ার বা তাকে থ্রেস নিয়ে আসার আবদার করে।[] তার স্ত্রীর অনুরোধ রক্ষার্থে থেরেউস অ্যাথেন্সে গিয়ে ফিলোমেলাকে থ্রেসে নিয়ে আসতে সম্মত হয়।[] অ্যাথেন্সের রাজা পান্দিওন ১ম তার ছোট মেয়েকে থেরেউসের সাথে এই মর্মে যেতে দিতে প্রস্তুত হয় যে থেরেউস তাকে পিতৃস্নেহে আগলে রাখবে।[][] থেরেউস সম্মত হয়। তবে থেরেউস প্রথম বারই ফিলোমেলাকে দেখে কামোত্তেজিত হয়ে পরে এবং তাকে নিয়ে থ্রেসে ফিরার পথে তার কাম উদ্দীপনা আরো বাড়তে থাকে।[]

থ্রেসে আসার পর থেরেউস ফিলোমেলাকে জোরপূর্বক বনের মধ্যে এক কেবিনে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে।[] এই ঘটনার পর থেরেউস ফিলোমেলাকে শাসায় এবং চুপ থাকতে বলে। কিন্তু ফিলোমেলা উদ্ধত ও রাগান্বিত হয়ে উঠলে থেরেউসও রেগে গিয়ে তার জিব কেটে দেয় এবং বনের মধ্যে সেই কেবিনে একা ফেলে রেখে চলে যায়।[]

ফিলোমেলা কথা বলে অপারগ হওয়ায় একটি কাপড় বুনন করে এবং তাতে সব ঘটনা লিখে তার বোন প্রোক্নের কাছে পাঠায়।[] প্রোক্নে প্রতিশোধে উন্মাদ হয়ে থেরেউসের পুত্র ইতিসকে হত্যা করে এবং তাকে রান্না করে তার স্বামীর খাবার হিসেবে পরিবেশন করে। থেরেউস ইতিসকে খাওয়ার পর দুই বোন তার সামনে তার পুত্রের দ্বি-খণ্ডিত মাথা উপস্থাপন করে। এই ষড়যন্ত্র ও নিজ পুত্রের মাংস ভক্ষণের কথা জানার পর থেরেউস একটি কুঠার হাতে নেয় এবং দুই বোনকে হত্যা করতে উদ্যত হয়।[] তারা দুজন পালিয়ে যায় কিন্তু থেরেউস তাদের ফসিসের দৌলিয়ার কাছে প্রায় ধরে ফেলে। এসময়ে দুই বোন দেবতার কাছে প্রার্থনা করে যেন তারা পাখিতে রূপান্তরিত হয় এবং থেরেউসের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে। দেবতা প্রোক্নেকে আবাবিল পাখি ও ফিলোমেলাকে বুলবুলি পাখিতে রূপান্তরিত করে।[] অন্যদিকে দেবতা থেরেউসকে মোহনচূড়া পাখিত রূপান্তরিত করে।[]

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. Note that the line numbers vary among translations
  2. note 2 to section 3.14.8, citing Pearson, A. C. (editor) The Fragments of Sophocles, II:221ff, where Frazer points to several other ancient source materials regarding the myth
  3. According to the Bibliotheca of Pseudo-Apollodorus (Book III, chapter 14, section 8), in the translation by Sir James George Frazer, Pandion fought a war with Labdacus, King of Thebes and married his daughter Procne to Tereus to secure and alliance and obtain his assistance in fighting Thebes
  4. Note though that earlier Greek accounts say the opposite (Procne as the nightingale, the "tongueless" Philomela as the silent swallow) and are more consistent with the facts of the myth. Frazer in his translation of the Bibliotheca comments that the Roman mythographers "somewhat absurdly inverted the transformation of the two sisters

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Kaplan, Matt. "Male Nightingales Explore by Day, Seduce by Night" in National Geographic News (4 March 2009).
  2. PHYS.ORG (9 November 2011) a nightingale sang... experienced males 'show off' to protect their territories[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ].
  3. Ovid. Metamorphoses Book VI, lines 424–674
  4. Frazer, Sir James George (translator/editor). Apollodorus, Library in 2 volumes (Cambridge, Massachusetts: Harvard University Press; London: William Heinemann, Ltd., 1921).
  5. Sophocles (১৯৯৬)। Tereus (translated by Lloyd-Jones, Hugh) in Sophocles Fragments। Cambridge, Massachusetts: Harvard College। পৃষ্ঠা 290–299। 
  6. Fitzpatrick, David (২০০১)। Sophocles' Tereus" in The Classical Quarterly 51:1। পৃষ্ঠা 90–101। 
  7. Fitzpatrick, David (নভেম্বর ২০০৭)। Reconstructing a Fragmentary Tragedy 2: Sophocles' Tereus" in Practitioners Voices in Classical Reception Studies 1:39-45 
  8. Pseudo-Apollodorus, Bibliotheca, 3.14.8; in Frazer, Sir James George (translator/editor). Apollodorus, Library in 2 volumes (Cambridge, Massachusetts: Harvard University Press; London: William Heinemann, Ltd., 1921)