বাম بم | |
---|---|
শহর | |
![]() ২০১৩ সালে বাম | |
স্থানাঙ্ক: ২৯°০৬′২২″ উত্তর ৫৮°২১′২৫″ পূর্ব / ২৯.১০৬১১° উত্তর ৫৮.৩৫৬৯৪° পূর্ব | |
দেশ | ![]() |
প্রদেশ | কের্মন |
কাউন্টি | বাম |
বখশ | কেন্দ্রীয় |
উচ্চতা | ১,০৬১ মিটার (৩,৪৮১ ফুট) |
জনসংখ্যা (2016 Census) | |
• পৌর এলাকা | ১,২৭,৩৯৬[১] |
সময় অঞ্চল | আইআরএসটি (ইউটিসি+৩:৩০) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | আইআরডিটি (ইউটিসি+৪:৩০) |
প্রাতিষ্ঠানিক নাম | বাম এবং এর সাংস্কৃতিক প্রাকৃতিক ভূদৃশ্য |
মানদণ্ড | সাংস্কৃতিক: ২, ৩, ৪, ৫ |
সূত্র | 1208 |
তালিকাভুক্তকরণ | ২০০৪ (২৮তম সভা) |
বিপদাপন্ন | ২০০৪-২০১৩ |
বাম[২] (ফার্সি: بم) ইরানের কের্মন প্রদেশের বাম কাউন্টির রাজধানী শহর। ২০০৫ সালের আদমশুমারি অনুসারে, এ অঞ্চলে ১৯,৫৭২টি পরিবারে প্রায় ৭৩,৮২৩ জন লোকের বাস।[৩]
আধুনিক ইরানের বাম শহরটি বাম দুর্গকে ঘিরে রয়েছে। ২০০৩ সালের ভূমিকম্পের আগে, সরকারি মতে শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩,০০০।[৪] দুর্গের ভিত্তি স্থাপনের উদ্দেশ্য ও তারিখ সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিকভাবে, বাম এই অঞ্চলে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছিল এবং কাপড় ও পোশাকের জন্য বিখ্যাত ছিল। আরব পরিব্রাজক ও ভূগোলবিদ ইবনে হাওকাল (৯৪৩-৯৭৭) তার সূরাতুল-আর্দ (ভূ-চিত্র) গ্রন্থে বাম সম্পর্কে লিখেছেন:
আর্গ-ই বামের প্রাচীন দুর্গের প্রায় ২,০০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে, পার্থিয় সাম্রাজ্যের (২৪৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ২২৪ খ্রিস্টাব্দ), তবে বেশিরভাগ ভবন সাফাভীয় সাম্রাজ্যের সময় নির্মিত হয়েছিল।[৫] দুর্গটি পর্যটকদের জন্য একটি দুর্দান্ত পর্যটন আকর্ষণ ছিল এবং এটি জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থায় বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। ১৭২২ সালে মাহমুদ হুতাকের নেতৃত্বে আফগান আক্রমণের কারণে শহরটি মূলত পরিত্যক্ত হয়েছিল। পরবর্তীকালে, শহরটি ধীরে ধীরে পুনরায় বসতি স্থাপনের পর, শিরাজের আক্রমণকারীদের আক্রমণের কারণে এটি দ্বিতীয়বার পরিত্যক্ত হয়। এটি এক সময়ের জন্য সেনাবাহিনীর ব্যারাক হিসাবেও ব্যবহৃত হয়েছিল।
আধুনিক শহর বাম ধীরে ধীরে একটি কৃষি ও শিল্প কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। এবং ২০০৩ সালের ভূমিকম্পের পূর্ব পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছিল। বিশেষ করে, শহরটি তার খেজুর এবং সাইট্রাস ফলের জন্য পরিচিত, যা কানাতগুলির একটি উল্লেখযোগ্য নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেচ করা হয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি পণ্যগুলির মধ্যে একটি হল বাম মোজাফতি খেজুর, যা ইরান এবং অন্যান্য দেশে বিখ্যাত। মোজাফতি বাম খেজুর সূক্ষ্ম এবং সমৃদ্ধ স্বাদের মিষ্টি গলিত ফল। ইরানের পার্বত্য অঞ্চলের দারবামে প্রতি বছর এই ফল কাটা হয়। এতে কোনো প্রিজারভেটিভ বা রাসায়নিক যোগ করা হয় না বলে এটি তাজা, প্রাকৃতিক, কাঁচা এবং মানসম্পন্ন থাকে।[৬]
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রাচীন দুর্গ পরিদর্শনের ক্রমবর্ধমান পর্যটক সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে শহরটি পর্যটন ক্ষাত থেকেও উপকৃত হয়েছে। ভূমিকম্পে শহরের অনেক অংশ ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জনসংখ্যার একটি বড় অংশ নিহত হয়েছিল। তারপর থেকে, বাম পুনরুদ্ধারের মধ্যে রয়েছে।
২০০৩ সালের বাম ভূমিকম্পটি ডিসেম্বর মাসের ২৬ তারিখে ১:৫৬ ইউটিসি (সকাল ৫:২৬ ইরান মান সময়) সময়ে বাম এবং পার্শ্ববর্তী কেরমান প্রদেশে আঘাত হানে। ভূমিকম্পের মাত্রার সর্বাধিক স্বীকৃত অনুমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ মতে মোমেন্ট পরিমাপ স্কেলে ৬.৬। ভূমিকম্পটি বিশেষভাবে ধ্বংসাত্মক ছিল, এতে মৃতের সংখ্যা ২৬,২৭১ জন এবং অতিরিক্ত ৩০,০০০ জন আহত হয়েছিল। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মূল কারণের মধ্যে ছিল যে শহরটির দালানগুলি ছিল প্রধানত মাটির ইটের তৈরি, যার মধ্যে অনেকগুলি ১৯৮৯ সালের ভূমিকম্পের প্রবিধানগুলি মেনে চলে নি, আন্যদিকে ভূমিকম্পকালীন সময়ে শহরের বেশিরভাগ মানুষ ঘুমিয়ে ছিল।
ভূমিকম্পের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। ভূমিকম্পের পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সরাসরি মানবিক সহায়তার প্রস্তাব দেয় এবং বিনিময়ে রাষ্ট্রটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাথে একটি চুক্তি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেয় যা তার পারমাণবিক স্বার্থের বৃহত্তর পর্যবেক্ষণকে সমর্থন করেছিল। ৪৪টি দেশ ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কর্মী প্রেরণ করেছিল এবং ৬০টি দেশ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিল।