বীণা দাস (জন্ম ১৯৪৫) জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের ক্রিগার-আইজেনহোভার অধ্যাপক।[১] তার তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞতার ক্ষেত্রগুলির মধ্যে সহিংসতার নৃবিজ্ঞান,[২] সামাজিক দুর্দশা,[৩] এবং রাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। [৪] বীণা অ্যান্ডার রেটজিয়াস স্বর্ণপদক সহ একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, মর্যাদাপূর্ণ লুইস হেনরি মরগান বার্ষিক বক্তৃতা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করেছেন এবং আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিদেশি সম্মানিত সদস্য হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। [৫]
বীণা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দ্রপ্রস্থ কলেজ ফর ওমেন এবং দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্সে পড়াশোনা করেছেন এবং ১৯৬৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সেখানে শিক্ষকতা করেছেন। এমএন শ্রীনিবাসের তত্ত্বাবধানে, ১৯৭০ সালে দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে তিনি তার পিএইচডি শেষ করেন। তিনি ১৯৯৭-২০০০ সাল পর্যন্ত নিউ স্কুল ফর সোশ্যাল রিসার্চে নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন, এরপর তিনি ২০০১ থেকে ২০০৮ সালে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। [৬]
তাঁর প্রথম বই স্ট্রাকচার অ্যান্ড কগনিশন: আস্পেক্ট অফ হিন্দু কাস্ট এন্ড রিচুয়াল্স (হিন্দু বর্ণ ও আচারের দিকগুলি) (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, দিল্লি, ১৯৭৭) বর্ণ-গোষ্ঠীর স্ব-প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ১৩ থেকে ১৭শতকের পাঠ্য অনুশীলনে আলোকপাত করেছে। যাজকত্ব, গোষ্ঠিগত সাদৃশ্য এবং অধিকারবর্জনের ত্রিপক্ষীয় বিভাজনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর হিন্দু মতের কাঠামোর সনাক্তকরণ, অত্যাবশ্যক মেরুগুলির অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কাঠামোগত ব্যাখ্যা, যার ভিতর বর্ণ গোষ্ঠী দ্বারা নতুন অবস্থানের জন্য নতুনত্ব এবং স্বত্ব সংঘঠন ইত্যাদি বইটিতে তুলে আনা হয়েছে।
বীণা দাসের অতি সাম্প্রতিক বই লাইফ অ্যান্ড ওয়ার্ডস: ভায়োলেন্স অ্যান্ড ডিসেন্ট ইন দ্য অর্ডিনারি, (ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, ২০০৬)। শিরোনাম থেকে বোঝা যায়, বীণা, হিংসাকে সাধারণ জীবনের বাধা হিসাবে দেখেনি, বরং এমন কিছু বিষয় হিসাবে দেখে যা সাধারণের জীবনের সাথে জড়িত। দার্শনিক স্ট্যানলি ক্যাভেল বইটির একটি স্মরণীয় অগ্রণী লিখেছেন যাতে তিনি বলেছিলেন যে এটিকে উইটজেনস্টাইনের ফিলোসপিকাল ইনভেস্টিগাসানস এর অঙ্গ হিসাবে পড়া যায়। বইয়ের একটি অধ্যায় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়কালে অপহৃত মহিলাদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং যা বিভিন্ন আইনি ইতিহাসবিদদের আগ্রহের বিষয় ছিল। লাইফ অ্যান্ড ওয়ার্ডস ভীষনভাবে উইটজেনস্টাইন এবং স্ট্যানলি ক্যাভেল দ্বারা প্রভাবিত, তবে এটি ইতিহাসের বিশেষ মুহুর্তগুলিতে যেমন ভারত বিভাগ এবং ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার মতো আলোচনা উঠে এসেছে।
বইটিতে 'সেই সব ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়ের জীবনকাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে যারা এই ঘটনাগুলিতে গভীরভাবে ভুক্তভুগী ছিলেন এবং ঘটনাটি তাদের দৈনন্দিন জীবনকে, তাদের নিজের জালে জড়িয়ে 'সাধারণের গৃহকোনে স্থান করে নেয়' তার বিবরণ দেয়।
আশির দশক থেকে তিনি সহিংসতা এবং সামাজিক দুর্দশার অধ্যয়নে ব্যস্ত ছিলেন। ১৯৯০ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস দ্বারা প্রকাশিত তার সম্পাদিত বই, মিররস অফ ভায়োলেন্স: কমিউনিটিস, রায়টস এন্ড সারভাইভারস ইন সাউথ এশিয়া, নৃবিজ্ঞানের দক্ষিণ এশিয়ার সহিংসতার বিষয়গুলি প্রথম প্রকাশিত হয়। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে এবং বিংশ দশকের গোড়ার দিকে আর্থার ক্লেইনম্যান এবং অন্যান্যদের সাথে তার সম্পাদিত এই বিষয়গুলিতে একটি ত্রয়ী দুখের গাথা এই ক্ষেত্রগুলিকে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। খণ্ড তিনটির শিরোনাম হল সোশাল সাফারিং (সামাজিক কষ্টভোগ); ভায়োলেন্স এন্ড সাব্জেকটিভিটি (সহিংসতা এবং আত্মনিষ্ঠা); এবং রিমেকিং এ ওয়ার্ল্ড।
তিনি ১৯৯৯ সালে সুইডিশ সোসাইটি অফ আন্থ্রোপোলজি অ্যান্ড জিওগ্রাফি থেকে অ্যান্ডার্স রেটিজিয়াস স্বর্ণপদক [৭] এবং ২০০০ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট পেয়েছিলেন। [৮] তিনি আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিদেশী সম্মানসূচক সদস্য এবং [৯] এবং থার্ড ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্স এর সহযোগী। ২০০৭ সালে, বীণা রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের লুইস হেনরি মরগান বক্তৃতা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন, যা বহুজনের নিকট নৃবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক বক্তৃতা হিসাবে বিবেচিত হয়। [১০]