বুনজর্নো, নত্তে | |
---|---|
পরিচালক | মার্কো বেলোচ্চিও |
রচয়িতা | মার্কো বেলোচ্চিও আনা লরা ব্রাগেত্তি (উপন্যাস) পাওলা তাভেল্লা |
শ্রেষ্ঠাংশে | রবার্তো হারলিজকা মায়া সানসা লুইগি লো কাসিও জিওভান্নি কালকাগনো পাওলো ব্রিগুগলিয়া গিউলিও বোজেত্তি |
সুরকার | রিকার্দো গিয়াগনি |
চিত্রগ্রাহক | পাসকাল মারি |
সম্পাদক | ফ্রান্সেস্কা কালভেল্লি |
মুক্তি | ৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩ |
স্থিতিকাল | ১০৬ মিনিট |
দেশ | ইতালি |
ভাষা | ইতালীয় |
বুনজর্নো,নত্তে ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইতালীয় ভাষার একটি চলচ্চিত্র। মার্কো বেলোচ্চিও ছবিটি পরিচালনা করেন। এমিলি ডিকিনসন রচিত একটি কবিতার নামানুসারে এর নাম হয় "গুড মর্নিং, নাইট" বা বোনজোর্নো নত্তে।
বামপন্থী রেড ব্রিগেডের নেতৃত্বে ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী আলদো মোরোর অপহরণ, অবরুদ্ধকরণ ও হত্যার কাহিনি নিয়ে ব্রিগেডের প্রাক্তন কর্মী আনা লরা ব্রাগেত্তির ১৯৮৮ সালের বই "দ্য প্রিজনার" অবলম্বনে ছবিটি নির্মিত হয়েছে।[১]
রেড ব্রিগেডের সদস্যরা একটি অ্যাপার্টমেন্টে অতর্কিতে হানা দেয়। তারা ইতালির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও ডেমোক্রাজিয়া ক্রিস্তিয়ানার (ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেসি) সাবেক নেতা আলদো মোরোকে অপহরণ করে। মোরো রাজনীতিবিদ, পোপ ষষ্ঠ পল এবং তার নিজের পরিবারের নিকট পত্র লিখেন। অপহরণকারী দলের নারী সদস্য (মায়া সানসা অভিনীত) তাদের পরিকল্পনার সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে।
বেলোচ্চিও ১৯৯৫ সালে রেড ব্রিগেড ও আলদো মোরোর অপহরণ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এর নাম ছিল "সোগনি ইনফান্তি" (ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন)।
এমিলি ডিকিনসনের কবিতা "গুড মর্নিং, মিডনাইট" বা "সুপ্রভাত, মধ্যরাত্রি"-র নামানুসারে এর নাম হয় "বুনজর্নো, নত্তে।"[২] ২০০১ সালে ইতালীয় কবি ও ঔপন্যাসিক নিকোলা গার্দিনি "বুনজর্নো, নত্তে" নামে ডিকিনসনের কবিতার অনুবাদ করেন। এটিই হলো ছবিটির নামকরণের মূল রহস্য। [৩]
ফিলমাবাতরোস, রাই সিনেমা ও স্কাই ইতালিয়া একত্রে ছবিটি প্রযোজনা করে। ০১ ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ছবিটি রঙ্গমঞ্চে পরিবেশন করে। ইতালীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ চলচ্চিত্র অধিদপ্তর ২০০২ সালের ১৭ জুন এক প্রস্তাবনা অনুসারে একে জাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রহের বস্তু ঘোষণা করে।
রিকার্দো গিয়াইনি ছবিটির মূল আবহসংগীত রচনা করেন। ফ্রাঞ্জ শুবার্ট, জুসেপ্পে ভের্দি ও জ্যাক অফেনবাখের সংগীতও এখানে পরিবেশিত হয়েছে। পাশাপাশি পিঙ্ক ফ্লয়েডের দুইটি বিখ্যাত গান দি গ্রেট গিগ ইন দ্য স্কাই ও শাইন অন ইউ ক্রেজি ডায়ামন্ড-ও এ ছবিতে পরিবেশিত হয়েছে। কিয়ারা যখন টেলিভিশনে ইতালীয় প্রতিরোধ গ্রুপ নাজি জার্মানি কর্তৃক নিহত হওয়ার ঘটনা দেখে কিংবা তাদের চিঠি পাঠ করে, তখন পটভূমিতে এসব গান বেজে ওঠে।
আনা লরা ব্রাগেত্তির গ্রন্থ অনুসারে, অন্যান্য উৎস হতে পরিচালক অনুপ্রেরণা সংগ্রহ করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ছবিতে ব্রিগেডের দলনেতা মারিয়ানো তার সহকর্মীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য বলেন, মরোকে হত্যা করা শ্রেণিবিভক্ত সমাজের সবচেয়ে বড় মানবতাবাদী কর্ম। বস্তুত তুরিন শহরের লা মার্মোরা ব্যারাকের আদালতকক্ষে ১০ মে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি হতে এই সংলাপটি নেওয়া হয়েছে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে রেড ব্রিগেডের কারান্তরীণ প্রতিষ্ঠাতা রেনাতো কার্চিও ও আলবার্তো ফ্রান্সেসচিনি বলেন, দুর্বৃত্ত রাজনীতিবিদ আলদো মোরোর বিরুদ্ধে রেড ব্রিগেডের নেওয়া সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন একটি বৈপ্লবিক ও ন্যায়সঙ্গত কাজ। এই শ্রেণিবিভক্ত সমাজে সাম্যবাদী ও বিপ্লবী সর্বহারার পক্ষে এর চেয়ে ভালো কাজ আর হতে পারে না। [৪]
ছবিটি ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণ সিংহ পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও শুধু চিত্রনাট্য ক্যাটাগরিতে এটি পুরস্কার লাভ করে। সমালোচকদের মাঝেও এ নিয়ে বিতর্কের অবতারণা হয়। বেলোচ্চিও অত্যন্ত হতাশ হয়েছিলেন। তাই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে অভিনেতা লুইগি লো কাসিওকে তিনি তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণের অনুরোধ জানান। [৫] জুরি সভাপতি মারিও মোনিচেল্লি বলেন, বিদেশি বিচারকদের পক্ষে ছবিটিকে সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত করা সম্ভব হয়নি, কারণ তারা মনে করেছিলেন - ছবিটি এর পূর্বসূরি "মাই মাদার্স স্মাইল" এর মত মানসম্মত হয়নি। রাই সিনেমাও অনুষ্ঠানে আর অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়।[৬]