বোয়িং ৭৪৭ | |
---|---|
অবতরণ মুহূর্তে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বোয়িং ৭৪৭। | |
ভূমিকা | সুপরিসর, দূরপাল্লার জেট এয়ারলাইনার |
উৎস দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
নির্মাতা | বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন্স |
প্রথম উড্ডয়ন | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ |
প্রবর্তন | ২২ জানুয়ারি ১৯৭০ |
অবস্থা | পরিসেবায় নিয়োজিত |
মুখ্য ব্যবহারকারী | ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ লুফথানসা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স |
নির্মিত হচ্ছে | ১৯৬৮–২০২৩ |
নির্মিত সংখ্যা | ১,৫৭৪ (প্রোটোটাইপ সহ) |
ইউনিট খরচ | ৭৪৭-১০০: ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৯৬৭) ৭৪৭-২০০: ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৯৭৬) ৭৪৭-৩০০: ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৯৮২) ৭৪৭-৪০০: ২২৮-২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০০৭) ৭৪৭-৮আই: ৩৫৫.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার[১] |
বোয়িং ৭৪৭ হল যাত্রী ও পণ্যবাহী বিশাল আকৃতির সুপরিসর বিমান। একে জাম্বো জেট বা আকাশের রানী নামেও ডাকা হয়। বিমানটির সামনের অংশের উপরিভাগের কুঁজ একে বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ভিন্নধর্মী বিমাণে পরিণত করেছে।[২] এবং এটিই বিশ্বের প্রথম সুপরিসর বা প্রশস্ত বিমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং বাণিজ্যিক বিমান ইউনিট দ্বারা নির্মিত বোয়িং ৭০৭ এর চেয়ে আড়াই গুন অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন এবং এটি ছিল ষাটের দশকের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক যাত্রী পরিবাহী বিমান।[৩] ১৯৭০ সালে প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে ওড়া এই ৭৪৭ দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে যাত্রী ধারণ ক্ষমতার রেকর্ড ধরে রাখে।[৪]
চার ইঞ্জিন বিশিষ্ট ৭৪৭ এর বিশাল দৈর্ঘের কারণে ডাবল ডেক আকৃতি ব্যবহার করা হয়। বিমানটির যাত্রীবাহী ও মালবাহী দুটি সংস্করণই তৈরী করা হয়। প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত লাউঞ্জ বা অধিক আসন ব্যবস্থা রাখার জন্য ৭৪৭ এর কুঁজের মত উপরের ডেক নকশা করা হয়। এছাড়া এই অংশে যাত্রীদের আসন সরিয়ে একটি অতিরিক্ত দরজা লাগিয়ে বিমানটিকে সহজেই পণ্যবাহী বিমানে রূপান্তর করা যায়। এই অভিনব নকশার পিছনে আরও একটি কারণ ছিল। বোয়িং মনে করেছিল ভবিষ্যতে সুপারসনিক এয়ারলাইনার হয়ত এসব বিমানের জায়গা দখল করবে তাই তখন সাবসনিক কার্গো হিসেবেও বাজারে এর চাহিদা বজায় থাকবে। বিমানটি নকশা করার সময় বোয়িং এর ধারণা ছিল হয়তো সর্বোচ্চ ৪০০ টি বিমান তৈরীর পরেই এটি সেকেলে হয়ে যাবে এবং এর চাহিদা ধীরে ধীরে লোপ পাবে[৫] কিন্তু ১৯৯৩ সালে এর উৎপাদন সংখ্যা ১০০০ অতিক্রম করার পর সমালোচকদেরও প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যায়। ২০১৫ সালের মে মাস নাগাদ ১৫০৮ টি বিমান তৈরী করা হয়েছে এবং ৩২ টি ৭৪৭-৮ নির্মানাধীন রয়েছে।[৬]
৭৪৭-৪০০ হল বিমানটির সবচেয়ে প্রচলিত যাত্রীবাহী সংস্করণ ম্যাক ০.৮৫ থেকে ০.৮৫৫ গতিতে উড়তে সক্ষম।[৭] এর আন্তমহাদেশীয় পরিসীমা প্রায় ৭২৬০ নটিক্যাল মেইল বা ১৩৪৫০ কিলমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনটি ভিন্ন শ্রেণিবিন্যাসে ৭৪৭-৪০০ বিমানটি সর্বোচ্চ ৪১৬ জন, দুইটি শ্রেণিবিন্যাসে ৫২৪ জন এবং এক শ্রেণিবিন্যাসে সর্বোচ্চ ৬৬০ জন যাত্রী পরিবহনে সক্ষম। কার্গো পরিবহনের জন্য ২০১১ এর অক্টোবর থেকে ৭৪৭-৮এফ হস্তান্তর শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে বিমানটি ভবিষ্যতে ওয়াই-থ্রি দ্বারা প্রতিষ্ঠাপিত হবে।
৫৪ বছরের উৎপাদন চালানোর পরে সর্বশেষ ৭৪৭ টি জানুয়ারী ২০২৩ সালে অ্যাটলাস এয়ারের কাছে সরবরাহ করা হয়েছিল। সর্বমোট ১,৫৭৪ টি বোয়িং ৭৪৭ বিমান নির্মিত হয়েছিল। জানুয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত, ৬৪ টি বোয়িং ৭৪৭ (৪.১%) বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হারিয়ে গেছে, যার ফলে মোট ৩,৭৪৬ জন মারা গেছেন।