![]() ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের বহির্দৃশ্য | |
![]() | |
স্থাপিত | ১৯২১ |
---|---|
অবস্থান | ১, কুইন্স ওয়ে, ময়দান, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ |
স্থানাঙ্ক | ২২°৩২′৪২″ উত্তর ৮৮°২০′৩৩″ পূর্ব / ২২.৫৪৪৯° উত্তর ৮৮.৩৪২৫° পূর্ব |
ধরন | জাদুঘর |
সংগ্রহের আকার | ৫০,০০০ |
পরিদর্শক | বার্ষিক ৫০ লাখ |
প্রতিষ্ঠাতা | লর্ড কার্জন |
তত্ত্বাবধায়ক | সমরেন্দ্র কুমার |
স্থপতি | উইলিয়াম এমারসন, ভিনসেন্ট এশ |
মালিক | ভারত সরকার |
ওয়েবসাইট | victoriamemorial-cal.org |
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল বা ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত রানি ভিক্টোরিয়ার একটি স্মৃতিসৌধ। উল্লেখ্য, ভিক্টোরিয়া ভারতের সম্রাজ্ঞী উপাধির অধিকারী ছিলেন। আগাগোড়া শ্বেত পাথরের তৈরি মহারানি ভিক্টোরিয়ার নামাঙ্কিত এই স্মৃতিসৌধটি বর্তমানে একটি জাতীয় প্রদর্শনীশালা জাদুঘর এবং কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ।[১]
বেলফাস্ট সিটি হলের স্থাপত্যশৈলীর আদলে ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের নকশা প্রস্তুত করেন স্যার উইলিয়াম এমারসন।[২] প্রথমে তাকে ইতালীয় রেনেসাঁ স্থাপত্যশৈলীতে স্মৃতিসৌধের নকশা প্রস্তুত করতে বলা হলেও, তিনি শুধুমাত্র ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীর প্রয়োগের বিরোধিতা করেন এবং ইন্দো-সারাসেনিক শৈলীর সঙ্গে মুঘল উপাদান যুক্ত করে মূল সৌধের নকশা প্রস্তুত করেন। ভিনসেন্ট এসচ ছিলেন এই সৌধের অধীক্ষক স্থপতি। সৌধ-সংলগ্ন বাগানটির নকশা প্রস্তুত করেছিলেন লর্ড রেডেসডেল ও স্যার জন প্রেইন। কলকাতার মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি সংস্থার ওপর নির্মাণকার্যের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল।
ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের উত্তর দিকে অবস্থিত কুইন্স ওয়ে, ডান্সিং ফাউন্টেন, তারপর বিস্তীর্ণ ব্রিগেড প্যারেড ময়দান; দক্ষিণে আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড এবং তারপর আইপিজিএমইআর এবং এসএসকেএম হাসপাতাল; পূর্বে কলকাতার বিখ্যাত সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, এম. পি. বিড়লা তারামণ্ডল, অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, এবং রবীন্দ্রসদন; আর পশ্চিমে কলকাতা রেস কোর্স ময়দান। স্মৃতিসোধ ভবনের উত্তর এবং দক্ষিণ দু-দিকেই বিশাল ফটক। উত্তর ফটক থেকে ভবন পর্যন্ত চওড়া রাস্তার দু-দিকে দুই প্রকাণ্ড জলাধার একাধারে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রদর্শনের মনোরম শোভা বর্ধন করে। যে দৃশ্য চাক্ষুষ করে অথবা লেন্সবন্দি করে সব বয়সের প্রেমিকপ্রেমিকাই রীতিমতো নস্টালজিক হয়ে যায়! সুরম্য উদ্যান পরিবেষ্টিত বড়ো বড়ো গাছের কাণ্ডের খোপে খোপে অসংখ্য নবীন প্রেমীযুগলের অবস্থানে গোধূলিতে মৌনমুখরতার আবেশ পাওয়া যায় আজো! শ্বেতপাথরে নির্মিত সুবৃহৎ ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের নির্মাণকার্য শুরু হয় ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে। সৌধটির উদ্বোধন হয় ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে। সৌধের সর্বোচ্চ গম্বুজে বিউগল-ধারিণী বিজয়দূতীর একটি কালো ব্রোঞ্জমূর্তি রয়েছে। বায়ুপ্রবাহ শক্তিশালী হলে বল-বিয়ারিং যুক্ত একটি পাদপীঠের উপর স্থাপিত মূর্তিটি হাওয়ামোরগের কাজ করে। আই আই ই এস টি-প্রাক্তনী এ সি মিত্র ভিক্টোরিয়ার নির্মাণপ্রকল্পের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার। এক উচ্চ পর্যায়ের পরিবেশ বিজ্ঞানীমহলের অভিমত হল, কলকাতার দূষণের ফলে ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের সাদা পাথরে মলিনতার ছোঁয়া লাগছে। এই দূষণ থেকে শতাব্দীপ্রাচীন সৌধকে রক্ষা করাটা খুবই জরুরি; কেননা, ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধ কলকাতার গর্বের প্রতীকরূপে বিশ্বের অঙ্গনে প্রতিভাত।