ক্রিকেট তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ-ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক | ১০ জানুয়ারি ১৯৩০ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৭ জুন ১৯৩৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ |
মরিস যোসেফ লসন টার্নবুল (ইংরেজি: Maurice Turnbull; জন্ম: ১৬ মার্চ, ১৯০৬ - মৃত্যু: ৫ আগস্ট, ১৯৪৪) ওয়ালসের কার্ডিফে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও রাগবি খেলোয়াড় ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩০ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন মরিস টার্নবুল।
বহু-ক্রীড়ায় প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদের ভূমিকা পালন করেছিলেন মরিস টার্নবুল। কলেজের চূড়ান্ত বর্ষে অধ্যয়নকালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের পক্ষে অধিনায়কত্ব করেছেন। এছাড়াও, কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন দলকে দশ মৌসুম নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। রাগবি ইউনিয়নে কার্ডিফ ও লন্ডন ওয়েলসে পক্ষে অংশ নিয়েছেন। ১৯৩৩ সালে ওয়েলস দলের পক্ষে দুইবার আন্তর্জাতিক ক্যাপ পরিধান করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও, ওয়ালসের পক্ষে ফিল্ড হকি খেলায় অংশ নিয়েছেন। দক্ষিণ ওয়ালসের স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়ন হন। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিকেট ও ওয়ালসের পক্ষে রাগবি খেলায় অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করেন।[২]
১৯০৬ সালে কার্ডিফের ক্রীড়ানুরাগী পরিবারে মরিস টার্নবুলের জন্ম। তার বাবা ফিলিপ টার্নবুল ওয়েলসের পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হকি খেলায় অংশগ্রহণ করেন ও ১৯০৮ সালের অলিম্পিকের আসরে ব্রোঞ্জপদক বিজয়ী ওয়েলস দলের সদস্য ছিলেন। মরিসসহ আট পুত্রের ছয়জনই কার্ডিফ রাগবি ক্লাবের সদস্য ছিলেন।[৩] বাথের কাছাকাছি ডাউনসাইড স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন মরিস টার্নবুল। ছয়জন সাবেক শিক্ষার্থীর অন্যতম হিসেবে তার সম্মানার্থে বিদ্যালয়ের একটি বারের নামকরণ করা হয়েছে। ডাউনসাইড থেকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্যে চলে যান। সেখানে তিনি ক্রীড়ার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। ক্রিকেট ও হকিতে ব্লু লাভ করেন।
১৯২৪ সালে বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় প্রথম খেলার জগতে প্রবেশ করেন। ১৯২৯ সালে কেমব্রিজের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৩০ থেকে বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্ব-পর্যন্ত গ্ল্যামারগনের অধিনায়কত্ব করেন। দশ মৌসুমে সহস্রাধিক রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। তিনবার দ্বি-শতক রান তুলেন। ১৯৩৭ সালে সোয়ানসিতে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩৩ রান তুলেন। ঐ মৌসুমে তার সুযোগ্য তত্ত্বাবধানে ও পরিচালনায় গ্ল্যামারগন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সফলতা পায়।
তার নেতৃত্বে গ্ল্যামারগন দল মজবুত অবস্থা গড়ে তুলে। ১৯৭৮ সালে উইজডেনে ব্যাসিল ইস্টারব্রুক মন্তব্য করেন যে,
১৯২১ সালে গ্ল্যামারগনের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট মর্যাদা প্রত্যাহারের পর প্রথম পরিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে টার্নবুল অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। ১৯২৯ সালের মধ্যে, সাতজন দলনেতার তত্ত্বাবধানে দলটি তালিকার সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করে। ১৯৩০ সালে মরিস টার্নবুল দলের অধিনায়ক ও সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। টার্নবুল দায়িত্ব নেয়ার পর দলটি তরতর করে সম্মুখের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। গ্ল্যামারগনের সাথে মন্মাউথশায়ারের সংযোগ রক্ষা করে চলতেন। মাইনর কাউন্টি দলে অংশ নেন। সদস্য সংখ্যার উত্তরণ ঘটান। ১৯৩৭ সালে গ্ল্যামারগন দল ১৩ খেলায় জয় পায় ও পয়েন্ট তালিকায় সপ্তমে চলে আসে। এটিই চ্যাম্পিয়নশীপের প্রথম শীর্ষভাগে গ্ল্যামারগনের অবস্থান ছিল।[৪]
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন মরিস টার্নবুল। ১০ জানুয়ারি, ১৯৩০ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এমসিসি দলের সদস্যরূপে ১৯২৯-৩০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও ১৯৩০-৩১ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। এছাড়াও, নিজ দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের মুখোমুখি হন তিনি।[৫]
ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনকিন্সের মতে, মরিস টার্নবুলের ব্যাটিং বেশ রহস্যপূর্ণ ছিল। তিনি সহজাত ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। দলের প্রয়োজনে তিনি নিজেকে মেলে ধরতেন ও ঐ রানগুলো সংখ্যার দিক দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। মূলতঃ অন-সাইডেই তিনি বেশ ভালো খেলতেন। তবে, সকল ধরনের স্ট্রোকেই পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। কিছুক্ষেত্রে নিজস্ব ভাবনার ফসল ছিল। এছাড়াও, ফাইন শর্ট-লেগ অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন। গ্ল্যামারগনের দর্শকদের মনে তিনি চীরজাগরুক ছিলেন।
জন্মকালীন নাম | মরিস যোসেফ লসন টার্নবুল | ||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম তারিখ | ১৬ মার্চ ১৯০৬ | ||||||||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | কার্ডিফ, ওয়ালস | ||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু তারিখ | ৫ আগস্ট ১৯৪৪ | (বয়স ৩৮)||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু স্থান | মন্টচ্যাম্প, ফ্রান্স | ||||||||||||||||||||||||
রাগবি ইউনিয়নে খেলোয়াড়ী জীবন | |||||||||||||||||||||||||
|
মরিস টার্নবুল তরুণ অবস্থায় নিজের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে তৎপর ছিলেন। ডাউনসাইড স্কুলে রাগবি খেলায় অংশ নিতেন। কেমব্রিজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর শুধুমাত্র ক্রিকেট দলেই ছিলেন না, বরং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় রাগবি ক্লাবেরও সদস্য হন। কার্ডিফের অন্যতম প্রাচীন রাগবি ক্লাব সেন্ট পিটার্সে খেলেন তিনি।[৬] এ সময়ে তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বার্নার্ড টার্নবুল ওয়ালসের পক্ষে খেলতেন। তিনিও সেন্ট পিটার্সের পক্ষে রাগবি ক্লাবে খেলতেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে মরিস টার্নবুল কার্ডিফের পক্ষে প্রথমবারের মতো বড়দের দলে খেলেন।[৭] প্রধানত স্ক্রাম-হাফ অবস্থানে খেলতেন। ১৯৩২ সালে কাউন্টি পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গ্ল্যামারগনের প্রতিনিধিত্ব করেন।[৮]
দলীয় সঙ্গী মরিস অলমকে সাথে নিয়ে ১৯৩০ সালে ‘দ্য বুক অব টু মরিসেস’ ও ১৯৩১ সালে ‘দ্য টু মরিসেস এগেইন’ শিরোনামীয় গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। পুস্তক দুইটিতে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরকে ঘিরে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯ তারিখে স্কানথর্পের উইলিয়াম ব্রুকের একমাত্র কন্যার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির সারা, সিমন ও জর্জিনা নাম্নী তিন সন্তান ছিল।
ওয়েলস গার্ডসের প্রথম ব্যাটলিয়নে মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪৪ সালে নরম্যান্ডি অবতরণের পর ক্রমবর্ধমান লড়াইয়ের এক পর্যায়ে ফরাসী গ্রাম মন্টচ্যাম্পে স্নাইপারের বুলেটে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি নিহত হন।[২] সার্জেন্ট ফ্রেড লিওয়েলিন তার দেহ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নিয়ে আসেন ও ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।[৯]