মারিয়াম্মান | |
---|---|
বৃষ্টি ও উর্বরতার দেবী[১] | |
অন্যান্য নাম | মারিয়াম্মা, মারিয়ামমান, মারিয়াথা, মারি |
আরাধ্য | দক্ষিণ ভারত |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দু দেবদেবী (পার্বতীর রূপ) |
আবাস | পৃথিবী |
অস্ত্র | ত্রিশূল, তরবারি |
বাহন | সিংহ |
মন্দিরসমূহ | সাময়াপুরম মারিয়াম্মান, পুন্নাইনাল্লুর মরিয়ম্মান, তিরুভেরকাডু দেবী কারুমারিয়াম্মান মন্দির |
উৎসব | নবরাত্রি, আদি তিরুভিঘা |
মারিয়াম্মান ( /mɒrı əˈmʌn/ তামিল: மாரியம்மன்) যিনি মারি(/mɒrı/, /maari/, তামিল: மாரி) ও মরিয়াই হিসেবেও পরিচিত, যার অর্থ হচ্ছে মাতা মারি এবং মারিয়াম্মা (তামিল: மாரியம்மா) বা সহজভাবে আম্মান বা আথা (তামিল: அம்மன், "মাতা") বলা হয়। তিনি হলেন তামিলনাড়ু এবং নিকটস্থ অঞ্চলে হিন্দুধর্মে পূজিতা বৃষ্টির দেবী। তিনি হলেন তামিলনাড়ু এবং তিরুসরাইয়ের গ্রাম্য এলাকায় পূজিত প্রধান দেবী। মরি দুর্গা[২] এবং পার্বতীর সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। এই দেবীকে গ্রীষ্মকালের শেষদিকে বা শরতের শুরুতে পূজা করা হয়। পূজার সময়ে সমগ্র তামিলনাড়ু এবং ডেক্কান অঞ্চলে আদি তিরুবিলা নামের একটি বৃহৎ উৎসবের আয়োজন করা হয়। দেবীকে মূলতঃ বৃষ্টির কামনা করে এবং বসন্ত ও কলেরা রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে আরাধনা করা হয়।
দেবী মারিয়াম্মানকে স্থানীয় পুঁথি-পাঁজিসমূহের দ্বারা নিয়মমাফিক আচারবিচারের মাধ্যমে এবং গ্রামদেবতা হিসেবে অব্রাহ্মণ পুরোহিতের দ্বারা পূজা করা হয়।
মরিয়াম্মান একজন তামিল স্থানীয় লোককথার দেবী, যাকে সম্ভবতঃ প্রাক-বৈদিক কাল থেকেই আরাধনা করে আসা হচ্ছে। মরি শব্দটির তামিল ভাষায় অর্থ হচ্ছে বৃষ্টি, আর আম্মা মানে হচ্ছে মা।
অবৈদিক পূজা পদ্ধতির মাধ্যমে দেবী মরিয়াম্মাকে আরাধনা করা হয় এবং পূজায় লোকনৃত্যের প্রদর্শন করা হয়[৩]। মাটির পাত্রে রান্না করা পোংগল এবং কুঝ দেবীকে নিবেদন করা হয়। তদুপরি আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটা এবং নাক ও মুখ ফোটানোর মত কার্য্যও করা হয়।
তিরুচিরাপল্লীর কুড়ি কি.মি. উত্তরে থাকা সময়পুরম মন্দিরে এখনো হিন্দু নিয়মেরে দেবী মরিয়াম্মার পূজা করা হয়। যেখানে মন্দির সমিতির দ্বারা তামিল থাই মাসে এগারো দিনের থাইপুসম উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেই উৎসবে প্রতিদিন ভোরে এবং গোধূলিতে দেবীর প্রতিমূর্তি বিভিন্ন বাহনে উঠিয়ে শোভাযাত্রা করা হয়। দশম দিনের দিন দেবীর প্রতিমূর্তিকে সময়পুরম থেকে শ্রীরঙ্গমের কাছে থাকা উত্তর কাবেরীতে নিয়ে যাওয়া হয়। আর একাদশ দিনের দিন ঘুরিয়ে এনে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এইমত তামিল চিত্রাই মাসে দশ দিনের চিত্রাই উৎসব এবং পুরত্রাচি মাসে নবরাত্রি উৎসব পালন করা হয়।[৪]
ভারতের বাইরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনামের হো চি মিন শহর[৫], ব্যাংকক[৬], কুয়ালালামপুর[৭] এবং সিঙ্গাপুরে[৮] দেবী মরিয়াম্মানের মন্দির আছে।
শীতলা দেবীকে উত্তর ভারতে বসন্ত রোগ নির্মূল করার জন্য পূজা করা হয়। শীতলা দেবীকেই দক্ষিণ ভারতে মরিয়াম্মান হিসেবে মানা হয়। জনশ্রুতি অনুসারে দেবীর শরীর উত্তপ্ত হয়ে থাকে এবং ভক্তগণ শীতল জল বা দুধ দিয়ে দেবীর শরীর ধুইয়ে দেয় যাতে দেবী রোগের উত্তাপের উপশম ঘটাতে পারেন।[৯]