বংশাণুবিজ্ঞানে মিল (Concordance কনকরডেন্স) পরিভাষাটি দ্বারা সাধারণত কোন যমজের উভয় সদস্যের মধ্যে একই বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতিকে বোঝানো হয়। তবে এর আরেকটি কঠোর সংজ্ঞা হচ্ছে, যমজের একজনের একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে এই শর্তে যমজ এর উভয় সদস্যের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যটি থাকার সম্ভাবনাকে মিল বলে। যেমন, দুইটি যমজ মিলযুক্ত হতে পারে যদি এদের উভয়েরই কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থেকে থাকে, অথবা কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অভাব থাকে।[১] বংশাণুগত মিলের আদর্শ উদাহরণ হচ্ছে অভিন্ন যমজ (মনোজাইগোটিক যমজ - যেখানে দুই যমজ দেখতে একই রকম হয়)।
যমজ নিয়ে একটি গবেষণায় (twin studies) অনুরূপ যমজ এবং ভিন্ন যমজের (ফ্র্যাটারনাল বা ডাইজাইগোটিক টুইন - যারা দেখতে এক রকম হয় না) মধ্যে তুলনা করার জন্য একটি যমজ নিয়ে গবেষণা পরিচালিত হয়। কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য বা অসুখ বংশাণুগত কারণে তৈরি হয়েছে কিনা, সেই সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে এই গবেষণা সাহায্য করে। সমকামিতা এবং বুদ্ধিমত্তার জন্য কনকরডেন্স এর হার এর ক্ষেত্রে এরকম গবেষণা করা হয়।
যেহেতু অভিন্ন যমজ দেখতে একই রকম হয়, তাই এদের একজনের দ্বারা বাহিত বংশাণুগত নকশা (genetic pattern) আরেকজনের দ্বারা বাহিত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। যদি একটি যমজে চিহ্নিত কোন বৈশিষ্ট্য কোন নির্দিষ্ট বংশাণুর কারণে তৈরি হয়, তাহলে যমজের আরেক সদস্যের মধ্যে সেই বৈশিষ্ট্যটি উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এভাবে, কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে কনকরডেন্স হার নির্দেশ করে, তার ঠিক কি পরিমাণ বৈশিষ্ট্য বংশাণুগত।
এই স্বতঃসিদ্ধে বেশ কিছু সমস্যা আছে:
এভাবে বংশাণুনগত বিষয়ের অভিন্নতাই কোন রোগ বা বৈশিষ্ট্যের অভিন্নতাকে সম্পূর্ণভাবে নির্দেশ করতে পারে না। তাই বংশাণুগত বিষয়গুলোকে কোন রোগের জন্য অবদানকারী হিসেবে অনুমান করা হয়, কিন্তু একেই একমাত্র কারণ হিসেবে অনুমান করা যায় না।[৩]
বংশাণুগত চরিত্র নির্ণয় (জিনোটাইপিং) গবেষণায়, যেখানে ডিএনএ-কে বিভিন্ন ভেরিয়েন্সের অবস্থানের জন্য সরাসরিভাবে পরীক্ষা করা হয়, সেখানে মিল হচ্ছে SNP বা সিংগেল নিউক্লিওটাইড পলিমরফিজম এর শতকরা হারের পরিমাণ। সিংগেল নিউক্লিওটাইড পলিমরফিজম হচ্ছে বংশাণুসমগ্রের (জিনোমের) কোন নির্দিষ্ট অবস্থানে নিউক্লিওটাইডের প্রকরণ, যেখানে সকল প্রকরণই পপুলেশনে লক্ষ্যণীয় মাত্রায় উপস্থিত থাকে।[৪].তাত্ত্বিকভাবে একই ব্যক্তি বা অনুরূপ যমজের থেকে নেয়া স্যাম্পলে শতভাগ কনকরডেন্স থাকার কথা, কিন্তু পরীক্ষাজনিত ত্রুটি ও দৈহিক পরিব্যক্তি (সোমাটিক মিউটেশন - যা দেহের মাইটোসিস কোষ বিভাজনের সময় হয়, পিতামাতা থেকে এই মিউটেশন সন্তানে বাহিত হয় না) এর কারণে সাধারণত এই কনকরডেন্স এর হার ৯৯% থেকে ৯৯.৯৫% হয়। তাই বংশাণুগত চরিত্র নির্ণয় (জিনোটাইপিং) পরীক্ষায় (genotyping assay) সঠিকতার সাথে হিসাব করার জন্য মিলের ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেহেতু সন্তান তার মা ও বাবার থেকে অর্ধেক করে ডিএনএ লাভ করে থাকে; তাই এই হিসাবে পিতামাতা, সন্তান, সহোদর ভাই এবং অননুরূপ যমজ (ফ্র্যাটারনাল বা ডাইজাইগোটিক যমজ) দের মধ্যে গড়ে ৫০% মিল দেখা যায়।