যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়
যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় Jadugopal Mukherjee | |
|---|---|
 | |
| জন্ম | ১৮ সেপ্টেম্বর ১৮৮৬ |
| মৃত্যু | ৩০ আগস্ট ১৯৭৬ (বয়স ৮৯) |
| জাতীয়তা | ভারতীয় |
| পেশা | স্বাধীনতা সংগ্রামী |
| প্রতিষ্ঠান | হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন |
| আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
| যুগান্তর দল |
|---|
যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় (১৮ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৬ - ৩০ আগস্ট, ১৯৭৬) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম চমকপ্রদ চরিত্র, বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির অবিসংবাদী নেতা ও প্রখ্যাত চিকিৎসক। রাজনীতিক্ষেত্রে তিনি বাঘা যতীন, অরবিন্দ ঘোষ, মানবেন্দ্রনাথ রায়, মতিলাল রায় প্রভৃতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। যুগান্তর পার্টির কর্ণধার হিসেবে তিনি ইশতেহার প্রচার করে বিপ্লবী সংগঠন তুলে দিয়ে বাংলার বিপ্লবীদের কংগ্রেসের মাধ্যমে গণআন্দোলনে অংশগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। উচ্চাঙ্গ সংগীত বিশারদ ও সুসাহিত্যিক ছিলেন।[১]
জন্ম, শৈশব ও শিক্ষা
[সম্পাদনা]যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম মেদিনীপুর জেলার তমলুকে। তার পিতার নাম কিশোরীলাল মুখোপাধ্যায়। সুলেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায় তার ছোট ভাই। ১৯১৫ সালে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবস্থায় তাকে আত্মগোপন করতে হয়। ১৯২১ সালে আত্মগোপন থেকে আত্মপ্রকাশের পর ফাইনাল এম.বি. পরীক্ষায় মেডিসিনে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ডাক্তারি পাস করেন।[১]
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় ১৯০৫ সালে অনুশীলন সমিতির সভ্য হন। পরে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে যুগান্তর দল ১৯১৫ সালে জার্মানির সহযোগিতায় ভারতে সশস্ত্র সংগ্রামের আয়োজন করেছিলেন, তিনি ছিলেন সে দলের বৈদেশিক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ। বালেশ্বর যুদ্ধে যতীন্দ্রনাথের মৃত্যু হলে যুগান্তর দলের দায়িত্ব আসে তার উপর। পুলিসের মতে যাদুগোপাল "Was the Brain of the Jugantar" এবং তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য ২০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি ১৯২১ সাল পর্যন্ত আত্মগোপন করে বাংলা, অসম, চীন সীমান্ত ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে দলের কাজ চালিয়ে যান। এসময় তার সহকারী ছিলেন বিপ্লবী সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, কুলেন্দ্র রাহা রায় প্রমুখ। ১৯২৩ থেকে ১৯২৭ সন পর্যন্ত কারারুদ্ধ থাকেন। মুক্তি পেলেও তাকে বাংলা থেকে বহিষ্কার করা হয়।[১][২]
বিহারের রাঁচিতে চিকিৎসক জীবন
[সম্পাদনা]১৯২৭ সন থেকে যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় বিহারের রাঁচি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস ও চিকিৎসা ব্যবসা করতে থাকেন। ৩৫ বছর ধরে ঐ অঞ্চলে সুচিকিৎসকরূপে খ্যাতি অর্জন করেন। যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি একখানি গ্রন্থও রচনা করেন।[১]
ভারত ছাড় আন্দোলনে
[সম্পাদনা]যাদুগোপাল ১৯৪২ - ১৯৪৫ সন পর্যন্ত ভারত ছাড় আন্দোলনের অংশ নেবার কারণে কারারুদ্ধ থাকেন। এ সময় হাজারিবাগ জেলে তার সহবন্দিদের মধ্যে ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। আন্দোলনকে সফল করে তোলার জন্য তিনিই জয়প্রকাশ নারায়ণ ও আরো কয়েকজনকে জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনাসহ পরামর্শ দেন এবং প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেন।[১]
রচিত গ্রন্থ
[সম্পাদনা]তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে,
- ভারতের সমরসংকট ও
- বিপ্লবী জীবনের স্মৃতি
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬০৩-৬০৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ রায়, প্রকাশ (২০২১)। বিস্মৃত বিপ্লবী চতুর্থ খণ্ড। চেন্নাই: নোশনপ্রেস চেন্নাই তামিলনাড়ু। পৃষ্ঠা ১১–১৪। আইএসবিএন 978-1-63873-248-8।
