মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
১০,২১,০০০ (২০১৭) ; মোট জনসংখ্যার ১.৬% | |
ধর্ম | |
হিন্দুধর্ম | |
ধর্মগ্রন্থ | |
ভগবদগীতা, পুরাণ ও বেদ | |
ভাষা | |
| |
সম্পর্কিত জাতিগত গোষ্ঠী | |
ব্রিটিশ শিখ ও ব্রিটিশ বৌদ্ধরা |
দেশ অনুযায়ী হিন্দুধর্ম |
---|
পূর্ণাঙ্গ তালিকা |
খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্মের পরে হিন্দুধর্ম যুক্তরাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী; এই ধর্মটি দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.৫% মানুষ অনুসরণ করে।[২] ১৯তম শতকের গোড়ার দিকে যুক্তরাজ্যে হিন্দুদের উপস্থিতি ছিল, কারণ সেই সময়ে ভারত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনেক ভারতীয়, বেশিরভাগই হিন্দু গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপন করেছিল।[৩] ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ৮,১৭,০০০ জন বাসিন্দা (১.৫%) নিজেদেরকে হিন্দু বলে পরিচয় প্রদান করে।[৪] দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে, যুক্তরাজ্যের হিন্দুরা (২৭%) দক্ষিণ এশীয় মুসলমানদের (৫৭%) পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী গঠন করেছে এবং যুক্তরাজ্যের ২০১১ সালের আদমশুমারিতে হিন্দুরা দক্ষিণ এশীয় শিখদের (১৪%) জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।[৫]
বেশিরভাগ ব্রিটিশ হিন্দু অভিবাসী, প্রধানত ভারত থেকে,[৬] এবং এছাড়াও শ্রীলঙ্কা (প্রধানত তামিল)[৭] ও নেপাল থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দু অভিবাসী রয়েছে।[৮][৯] অল্প সংখ্যক হিন্দু পাকিস্তান,[১০] আফগানিস্তান,[১১] বাংলাদেশ,[১২][১৩] ও ভুটান থেকে এসেছেন।[১৪] সাম্প্রতিক সময়ে, ইসকন ও অন্যান্য হিন্দু ধর্মপ্রচারক গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা এবং যোগব্যায়াম, ধ্যান ও অন্যান্য হিন্দু অনুশীলনের ব্যাপক অনুসরণের কারণে, অনেক ব্রিটিশ নাগরিক হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে অনেক বিখ্যাত আমলা এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিবর্গ রয়েছে।[১৫][১৬]
ব্রিটিশ হিন্দু জনসংখ্যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সেই সকল জনগণ, যারা সরাসরি ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে এসেছেন, যে সকল হিন্দুদের বংশধর মূলত অন্য দেশে চলে গিয়েছিলেন কিন্তু পরে যুক্তরাজ্যে পুনর্বাসিত হয়েছেন এবং যারা যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন ও বেড়ে উঠেছেন। যুক্তরাজ্যে তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্মের হিন্দুদের খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
যুক্তরাজ্যে হিন্দুদের অভিবাসনের তিনটি প্রধান ঢেউ বা তরঙ্গ দেখা গিয়েছে এবং অধিকাংশ হিন্দু অভিবাসন ঘটেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর।[১৭] প্রথম ঢেউটি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা ও বিভাজনের সময় ঘটেছিল। এছাড়াও, ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে কনজারভেটিভ স্বাস্থ্যমন্ত্রী দ্য আরটি হোন এনোক পাওয়েল ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ করেছিলেন।[১৮] দ্বিতীয় তরঙ্গ বা ঢেউ ১৯৭০-এর দশকে প্রধানত পূর্ব আফ্রিকা থেকে বিশেষ করে উগান্ডা থেকে এশীয়দের বহিষ্কারের কারণে ঘটেছিল।[১৭][১৯] পরে, সম্প্রদায়গুলি গায়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, মরিশাস ও ফিজি থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছায়। অভিবাসনের শেষ তরঙ্গ ১৯৯০-এর দশকে শুরু হয়েছিল এবং এটি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতির ফলে ঘটেছিল, যা যুক্তরাজ্যে অধ্যয়ন ও অভিবাসনকে সহজ করে তুলেছিল।[১৭]
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯৬১ | ৩০,০০০ | — |
১৯৭১ | ১,৩৮,০০০ | +৩৬০% |
১৯৮১ | ২,৭৮,০০০ | +১০১.৪% |
১৯৯১ | ৩,৯৭,০০০ | +৪২.৮% |
২০০১ | ৫,৫৮,৮১০ | +৪০.৮% |
২০১১ | ৮,৩৫,৩৯৪ | +৪৯.৫% |
২০১৭ | ১০,২১,০০০ | +২২.২% |
২০০১ সালের আগে ধর্মীয় অনুষঙ্গ নথিভুক্ত করা হয়নি। |
ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার ১.৫% হিন্দুধর্ম অনুসরণ করে। স্কটল্যান্ডে হিন্দুদের সংখ্যা ০.৩১%,[২০] ও ওয়েলসে ০.৩৪%।[২১] অভিবাসী, গড়ের তুলনায় ভালো প্রজনন হার ও কিছু হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে হিন্দু জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ৮,১৭,০০০ হিন্দুদের প্রায় অর্ধেকই লন্ডন মহানগর অঞ্চলের বাসিন্দা ছিল।[২২] সব বয়সের প্রায় ৩,০০,০০ জন ব্রিটিশ হিন্দু যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছে।[১৭]
যুক্তরাজ্যের হিন্দু জনসংখ্যা প্রধানত শহুরে, এবং তাদের প্রতিনিধিত্ব পেশাদার ও ব্যবস্থাপক পদে তুলনামূলকভাবে বেশি।