যৌন নির্বাচন হল প্রাকৃতিক নির্বাচন-এর একটি ধরন, যেখানে যে কোন একটি জৈবিক লিঙ্গবিশিষ্ট সদস্য অপর লিঙ্গের সদস্যকে মিলনের জন্য নির্বাচন (আন্তঃলিঙ্গীয় নির্বাচন) করে থাকে, এবং বিপরীত লিঙ্গের সদস্যদের কাছে প্রবেশাধিকার পাবার জন্য সমলিঙ্গের সদস্যদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা (অন্তঃলিঙ্গীয় নির্বাচন) করে থাকে। এই দুই ধরনের নির্বাচন মানে এই যে, একটি জনসংখ্যায় কিছু সদস্যদের অন্যান্যদের তুলনায় অধিক প্রাজননিক সাফল্য রয়েছে, যার কারণ তারা অধিক আকর্ষণীয় অথবা তারা অধিক আকর্ষণীয় সঙ্গীকে সন্তান জন্মদানের জন্য নির্বাচন করে থাকে।[১][২] উদাহরণস্বরূপ, মধ্যে প্রজনন মৌসুমে ব্যাঙ্গেদের যৌন নির্বাচন ঘটে যখন পুরুষেরা জলের কিনারায় একত্রিত হয় এবং তাদের সঙ্গীকে আকর্ষণ করে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাকতে থাকে। এরপর স্ত্রী ব্যাঙ উপস্থিত হয় এবং সবচেয়ে গভীর কণ্ঠবিশিষ্ট এবং শ্রেষ্ঠ এলাকার পুরুষকে নির্বাচন করে। সহজভাবে বলতে গেলে, পুরুষ প্রাণীরা প্রজননক্ষম স্ত্রী প্রাণীদের দলে বারংবার মিলন এবং একচেটিয়া প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে সুবিধা নিয়ে থাকে। নারী প্রাণীরা সীমিত সংখ্যক সন্তান নিতে পারে এবং প্রজননে বিনিয়োগকৃত শক্তির বিনিময়কে তারা সর্বোচ্চ মাত্রায় নিয়ে যায়।
ধারণা করা হয়েছিল, চার্লস ডারউইন এবং আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস সর্বপ্রথম এই ধারণাটির উৎপত্তি ঘটান যারা একে তাড়িত প্রজাত্যায়ন হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে বহু জীব তাদের বৈশিষ্ট্যগুলোর বিবর্তন ঘটিয়েছিল, যাদের কার্যপ্রণালী তাদের ব্যক্তিগত টিকে থাকার জন্য ক্ষতিকর ছিল,[৩] এবং তারপর ২০শ শতাব্দীর দিকে রোনাল্ড ফিশার এই মতবাদকে আরও বিকশিত করেন।
অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এই প্রাণিজগতে যৌন প্রজননের ব্যবস্থাপনা জীববিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান রহস্য হয়ে আছে কারণ অযৌন প্রজনন-এ যৌন প্রজনন অপেক্ষা অনেক দ্রুত বংশবৃদ্ধি করা যায় কারণ যৌন প্রজননের মত এদের ৫০% পুরুষ নয়, যারা কিনা একাকী প্রজনন করতে অক্ষম হয়ে থাকে। যাইহোক, ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, যৌন নির্বাচনের দ্বারা যৌন প্রজননের অধ্যবসায়কে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।.[৪]