রাগেহ ওমর Rageh Omaar | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | নিউ কলেজ, অক্সফোর্ড |
পেশা | সাংবাদিক, লেখক |
রাগেহ ওমর (সোমালি: Raage Oomaar; আরবি: راجح عمر; জন্ম: ১৯ জুলাই ১৯৬৭) একজন সোমালি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং লেখক। তিনি বিবিসির ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সের সংবাদদাতা ছিলেন, যেখানে তিনি ইরাক থেকে রিপোর্ট করে নাম করেছিলেন। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে, তিনি আল জাজিরা ইংলিশে একটি নতুন পোস্টে চলে এসেছিলেন, যেখানে তিনি রাতের সাপ্তাহিক ডকুমেন্টারি সিরিজ উইটেনস-এ জানুয়ারি ২০১০ পর্যন্ত উপস্থাপন করেছিলেন। রাগেহ ওমর রিপোর্ট, প্রথম ফেব্রুয়ারি ২০১০ প্রচারিত, এটি এক ঘণ্টাব্যাপী, মাসিক তদন্তকারী ডকুমেন্টারি যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক বর্তমান বিষয়গুলোর প্রতিবেদন তৈরী করতেন। জানুয়ারি ২০১৩ থেকে, তিনি আইটিভি নিউজের বিশেষ সংবাদদাতা এবং উপস্থাপক হয়েছিলেন, তিনি বিভিন্ন বিস্তৃত খবরের উপর প্রতিবেদন দেওয়ার পাশাপাশি পুরো ইউকে এবং তার আশেপাশের এলাকার খবরের গভীরে প্রবেশ করে প্রতিবেদন তৈরি করতেন। নিয়োগের এক বছর পরই ওমর আইটিভি নিউজের জন্য আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। অক্টোবর ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে তাঁর দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি আইটিভি টেন-এর ডেপুটি নিউজকাস্টার হয়েছিলেন। সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে ওমর মাঝে মাঝে আইটিভি নিউজ লন্ডন লাঞ্চ টাইম বুলেটিন এবং আইটিভির সান্ধ্য সংবাদ সহ আইটিভি লঞ্চটাইম নিউজ উপস্থাপন করেছেন।
ওমার ১৯৬৭ সালে মোগাদিশুতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি এক ব্যবসায়ীর ছেলে।[১] একজন মুসলিম, তার পরিবার মূলত সোমালিয়ার, হারগেইসা থেকে আগত।[২]
ওমর দুই বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তার বেশ কয়েকটি ভাইবোন রয়েছে: তাঁর বড় ভাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহি ওমর সোমালিয়ার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।[৩]
ওমর দুটি স্বাধীন বিদ্যালয়, ড্রাগন স্কুল, অক্সফোর্ড এবং চেলটেনহ্যাম কলেজে, চেলটেনহ্যাম, গ্লৌচেস্টারশায়ারে পড়েছেন। পরে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ কলেজে আধুনিক ইতিহাস অধ্যয়ন করেন।[২]
ওমর দ্য ভয়েস পত্রিকার প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে তার সাংবাদিক জীবনের শুরু করেছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি ইথিওপিয়ায় চলে আসেন, যেখানে তিনি বিদেশী সংবাদদাতা হিসাবে বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে কাজ করতেন। মূলত বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হয়ে বেশি কাজ করেছিলেন। এক বছর পর বিবিসির প্রযোজক ও সম্প্রচার সাংবাদিক হিসাবে কাজ করার জন্য ওমর লন্ডনে ফিরে আসেন। বিবিসির আফ্রিকা সংবাদদাতা নিযুক্ত হওয়ার পরে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যান। ওমরের স্ত্রী এবং সন্তানেরা ২০০৪ সালের মধ্যে আফ্রিকা চলে আসেন এবং তার নিয়মিত যাতায়াত তার জীবনকে একটি চ্যালেঞ্জ মধ্যে ফেলেছিল।[৪]
তাঁর ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে সোমালিয়া ও ইরাকের বিরোধের বিষয়ে সরাসরি রিপোর্ট করা।
ওমর ইরাক আক্রমণের বিষয়টি কভার করে বিবিসি নিউজ বুলেটিন এবং বিবিসি নিউজের জন্য সপ্তাহিক অনুষ্ঠান করতেন। তাঁর অনেক সম্প্রচার পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে সিন্ডিকেট করা হয়েছিল, যেখানে তিনি স্কুড স্টাড হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।[৫]
ওমর বিবিসির ইরাক সংবাদদাতা হিসাবে ইরাকে তাঁর সময় সম্পর্কে রেভ্যুলেশন ডে নামে একটি বই লিখেছেন। বইটিতে সাদ্দাম হুসাইনের শাসনের প্রভাব, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো এবং ইরাকি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রভাব রয়েছে।
কেন তিনি শেষ পর্যন্ত বিবিসি ত্যাগ করলেন তা ব্যাখ্যা করে ওমর পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান এবং যেই লোকদের সহযোগিতা করতে চান তাদের জন্যই দায়িত্ব নিতে চান। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন যে বিবিসির কাজের পরিবেশটি শ্রেণিবদ্ধতার ভিত্তিতে কিছুটা ব্যতিক্রমী ছিল এবং তিনি কিছুটা হলেও দোষী কারণ তিনি পাবলিক স্কুল থেকে শিক্ষা-দীক্ষা অর্জন করেছেন।[৬]
অধিকন্তু, ওমর বিবিসির সংবাদদাতা হিসাবে তাঁর সময়ে তিনি যেভাবে ইরাক আক্রমণ উপর প্রতিবেদন করেছেন তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা সাদ্দাম হুসা্ইন, তাঁর শাসন এবং অস্ত্র পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে যে টুকরো টুকরো সংবাদ দিয়েছেন তাতে করে ইরাকি জনগণকে খুব কমই প্রাধান্য পেয়েছে।[৬] জন পিলগারের ডকুমেন্টারি দ্য ওয়ার ইউ ডোন্ট সি (২০১০)-এ এক সাক্ষাৎকারে ওমর এই শোক প্রকাশ করে বলেছিলেন যে "কেউ সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর বোতাম টিপেননি" এবং কভারেজটিকে "একটি বিশাল ইকো চেম্বার" বলে অভিহিত করেছেন।[৭]
২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে ওমর আল জাজিরা ইংরেজিতে যোগ দেন।[৮] তিনি লন্ডন বিভাগের মধ্য প্রাচ্যের সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করেছিলেন।[২]
এই সংবাদ প্রতিষ্ঠানের থাকাকালীন ওমর রাতের সাপ্তাহিকি তথ্যচিত্র সিরিজ উইটনেস উপস্থাপন করেছেন।[৮] তিনি তার নিজের অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রগুলো মাসিক দ্য রাগে ওমার রিপোর্টও হোস্ট করেতেন।[২]
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ওমর আইটিভি নিউজে বিশেষ সংবাদদাতা হিসাবে যোগ দেবেন।[৯] পরের বছর তাকে আইটিভি নিউজের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল।[১০]
অক্টোবর ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে তাঁর দায়িত্বের পাশাপাশি, ওমর আইটিভি নিউজ এট টেন-এ ডেপুটি নিউজকাস্টার হন।
সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে ওমর মাঝে মাঝে আইটিভি নিউজ লন্ডন লঞ্চটাইম বুলেটিন এবং আইটিভি ইভেনিং নিউজ সহ আইটিভি লাঞ্চটাইম নিউজ উপস্থাপন করেছেন।
২০০৩ সালে ওমর সেরা টিভি সাংবাদিকের পুরস্কার এথনিক মাল্টিকালচারাল মিডিয়া একাডেমি অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত হন।[৮]
২০০৮ সালে তাকে সাংবাদিকতায় শ্রেষ্ঠত্বের জন্য আরব মিডিয়া ওয়াচ অ্যাওয়ার্ডও দেওয়া দেওয়া হয়েছিল।[১১]
জানুয়ারি ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ওমরকে মিডিয়াতে তার অবদানের জন্য ব্রিটিশ মুসলিম অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল।[১২][১৩]
ওমর জর্জিয়ানা রোজ "নিনা" মন্টগোমারী-কানিংহ্যামকে বিয়ে করেছেন, কোরসেহিলের স্যার জন মন্টগোমারী-কানিংহ্যামের কন্যা। এই দম্পতি তাদের তিন সন্তানের সাথে পশ্চিম লন্ডনের চিসউইকে বসবাস করেন।[১]
তিনি সোমালিয়ায় তার পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখেন, সোমালি সম্প্রদায়ের একজন কর্মী এবং তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বক্তৃতায় নিয়মিতভাবে যোগ দেন।[১]
গণমাধ্যম ক্ষেত্রের পদ | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী নিক রবিনসন |
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, আইটিভি নিউজ ২০১৪ - বর্তমান |
উত্তরসূরী শায়িত্ব |
পূর্বসূরী অ্যালাস্টার স্টুয়ার্ট |
ডেপুটি নিউজকাস্টার, আইটিভি নিউজ টেন ২০১৫ - বর্তমান |
উত্তরসূরী শায়িত্ব |