রাধা কুমার একজন ভারতীয় নারীবাদী, শিক্ষাবিদ এবং লেখক। দৃঢ়ভাবে নারীবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর লেখা জাতিগত সংঘাত এবং শান্তি প্রক্রিয়ার উপর আলোকপাত করে।
রাধা কুমারের মা হলেন প্রাক্তন আমলা লভরাজ কুমার এবং তাঁর বাবা হলেন অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ ডঃ ধর্ম কুমার। লভরাজ কুমার হলেন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা এবং ধর্ম কুমার দক্ষিণ ভারতের একটি তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। রাধা কুমার দিল্লিতে বড় হয়েছেন এবং নতুন দিল্লির মডার্ন স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি ক্যামব্রিজের নিউনহ্যাম কলেজ[১] (যে কলেজে তাঁর মা আগে পড়াশোনা করেছিলেন) থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন, এরপর তিনি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন।
রাধা কুমার বিভিন্ন বিষয়ের উপর বেশ কিছু বই লিখেছেন, যার বেশিরভাগই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে লিঙ্গ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। সাধারণত, তিনি এই পদ্ধতিতে যে দ্বন্দ্বগুলি সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে একটি মুসলিম গোষ্ঠী, একটি কমিউনিস্ট গোষ্ঠী, অথবা উভয়ই জড়িত। তিনি দিল্লিতে অবস্থিত মুসলিম সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার নেলসন ম্যাণ্ডেলা সেন্টার ফর পিস অ্যাণ্ড কনফ্লিক্ট রেজোলিউশনের পরিচালক ছিলেন। তিনি দিল্লি পলিসি গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক। এটি একটি চিন্তাকেন্দ্র যারা ফোর্ড ফাউণ্ডেশন সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থাগুলি থেকে উদার তহবিল পেয়েছে।[২]
রাধা কুমার, ১৩টি দেশের ৪০ জনেরও বেশি ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, কর্মী, শিল্পী, উদ্যোক্তা, আইনজীবী এবং প্রচার মাধ্যমের ব্যক্তিত্বদের সাথে দক্ষিণ এশিয়া ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যেটি ২০২১ সালের ২-৩ অক্টোবর তারিখে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। এই শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল শান্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং লিঙ্গ সমতার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা।[৩]
২০১০ সালের অক্টোবরে, রাধা কুমারকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিএস) কর্তৃক জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য তিনজন মধ্যস্থতাকারীর একজন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।[৪][৫] প্যানেলটির নেতৃত্বে ছিলেন টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সম্পাদক দিলীপ পাদগাঁওকর। এর অন্য সদস্য ছিলেন ভারতের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এম এম আনসারি।
প্যানেল গঠনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই, এবং ব্যক্তিগত ইঙ্গিত ব্যর্থ হওয়ার পরেও, সংবাদমাধ্যমের সাথে খুব বেশি স্বাধীনভাবে এবং ঘন ঘন কথা বলা; এছাড়াও বিভিন্ন পরিকল্পনা ও সমাধানের উদ্দেশ্যে চাপ দেওয়ার জন্য ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম প্যানেলটিকে প্রকাশ্যে তিরস্কার করেন, যখন প্যানেলের নির্ধারিত কাজ ছিল কাশ্মীরি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণাগুলির পরিমাপ করে সেগুলির সংক্ষিপ্তসার করা। এই সমস্ত সমালোচনাই ছিল রাধা কুমারের গৃহীত পদক্ষেপের সাথে সম্পর্কিত। তিরস্কারের প্রতিক্রিয়ায় তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন যে মধ্যস্থতাকারীদের কি করা উচিত সেই সম্বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (যিনি প্যানেলটি নিযুক্ত করেছিলেন) কিছু বলার কোনও অধিকার নেই।