রায়ান গসলিং | |
---|---|
জন্ম | রায়ান থম্পসন গসলিং ১২ নভেম্বর ১৯৮০ লন্ডন, অন্টারিও, কানাডা |
পেশা |
|
কর্মজীবন | ১৯৯৩–বর্তমান |
সঙ্গী | ইভা মেন্ডেস (২০১১–বর্তমান) |
সন্তান | ২ |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | |
বাদ্যযন্ত্র | |
কার্যকাল | ১৯৯৩–বর্তমান |
রায়ান থমাস গসলিং (জন্ম ১২ নভেম্বর, ১৯৮০)[১] হলেন একজন কানাডীয় অভিনেতা ও সঙ্গীতশিল্পী। ডিজনি চ্যানেলের দ্য মিকি মাউস ক্লাব (১৯৯৩-১৯৯৫) এ শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে আর ইউ অ্যাফ্রেড অফ দ্য ডার্ক? (১৯৯৫) এবং গুজবাম্পস (১৯৯৬) এর মত পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায়। চলচ্চিত্রে তার প্রথম কাজ হল নব্য-নাৎসিবাদ বিষয়ক দ্য বিলিভার (২০০১) এবং পরে তিনি কয়েকটি স্বাধীন চলচ্চিত্র, যেমন মার্ডার বাই নাম্বার্স (২০০২), দ্য স্লটার রুল (২০০২) এবং দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অফ লিল্যান্ড (২০০৩) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
গসলিং বাণিজ্যিকভাবে সফল প্রণয়ধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র দ্য নোটবুক (২০০৪) এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রথম বিশ্বব্যাপী দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। হাফ নেলসন (২০০৬) চলচ্চিত্রে মাদকাসক্ত শিক্ষক হিসেবে তার অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং লার্স অ্যান্ড দ্য রিয়াল গার্ল (২০০৭) চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা নাট্য চলচ্চিত্রের অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিন বছর বিরতির পর গসলিং নাট্যধর্মী ব্লু ভেলেন্টাইন (২০১০) চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে তিনি তার দ্বিতীয় গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। গসলিং ২০১১ সালে তিনটি মূলধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রগুলো হল প্রণয়মূলক হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী ক্রেজি, স্টুপিড, লাভ, রাজনৈতিক নাট্যধর্মী দি আইডিজ অফ মার্চ এবং নব্য-নোয়া অপরাধ থ্রিলারধর্মী ড্রাইভ এবং আরও দুটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
২০১৪ সালে লস্ট রিভার দিয়ে তার চলচ্চিত্র পরিচালনায় অভিষেক হয়। এটি দুর্বল সমালোচনা লাভ করে। তবে পরের দুই বছরে তার পূর্ব থেকে অধিকতর সফলতা আসে অর্থ সম্পর্কিত হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী দ্য বিগ শট (২০১৫) এবং সঙ্গীতধর্মী লা লা ল্যান্ড (২০১৬) এর মধ্য দিয়ে। লা লা ল্যান্ড এর জন্য তিনি সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রের অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন এবং তার দ্বিতীয় অস্কার মনোনয়ন লাভ করেন।
গসলিংয়ের সঙ্গীত দল ডেড ম্যান্স বোনস্ থেকে দলের স্ব-নামে ২০০৯ সালে একটি অ্যালবাম প্রকাশ করে এবং উত্তর আমেরিকায় সফর করে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বেভার্লি হিলসে তাগিন নামে একটি মরোক্কান রেস্তোরাঁর সহ-মালিক। গসলিং পিপল ফর দ্য ইথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিমেল্স, ইনভিজিবল চিলড্রেন ও এনাফ প্রজেক্টের সমর্থক এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তিনি চাদ, উগান্ডা ও পূর্ব কঙ্গো সফরে যান। ২০১১ সাল থেকে ইভা মেন্ডেসের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের দুই কন্যা রয়েছে।
গসলিং ১৯৮০ সালের ১২ নভেম্বর অন্টারিওর লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা থমাস রে গসলিং একজন একটি কাগজ কলের বিক্রয়কর্মী,[৩] এবং মাতা ডোনা একজন অফিস সহকারী।[৪][৫] তার পিতা ইংরেজ, স্কটিশ এবং ফরাসি-কানাডীয় বংশোদ্ভূত।[৬][৭] গসলিংয়ের পিতামাতা ছিল মোর্মন গোত্রীয়,[৮] এবং গসলিং বলেন যে ধর্ম তাদের জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেছে।[৯] কিন্তু গসলিং বলেন তিনি তাদের এই মোর্মনবাদ বিষয়টি ঠিক বুঝে ওঠতে পারেন নি।[১০] কারণ তার পিতার চাকরির সুবাদে তারা এক স্থানে থিতু হতে পারে নি।[৩] এবং গসলিং কর্নওয়াল, অন্টারিও,[১১] ও বার্লিংটন, অন্টারিওতে বসবাস করেন।[১২] তার ১৩ বছর বয়সে তার পিতামাতার বিচ্ছেদ হয়ে যায়,[১৩] তিনি ও তার বড় বোন ম্যান্ডি তার মায়ের সাথে থাকতেন।[৪] তার এই অভিজ্ঞতাকে তিনি "মেয়েদের মত ভাবা" নামে উল্লেখ করেন।[১৪]
গসলিং গ্ল্যাডস্টোন পাবলিক স্কুল,[১৫] কর্নওয়াল কলেজিয়েট অ্যান্ড ভোকেশনাল স্কুল এবং লেস্টার বি পিয়ারসন হাই স্কুলে পড়াশুনা করেন।[১৬] শৈশবে তিনি ডিক ট্রেসি (১৯৪৫) চলচ্চিত্র দেখে অভিনেতা হওয়ার অনুপ্রেরণা লাভ করেন।[১৭] শৈশবে তিনি বুলিইংয়ের শিকার হওয়ায়[১৮] তিনি তার শৈশবকে ঘৃণা করেন[৯][১৯] এবং ১৪ বা ১৫ বয়সের মধ্যে তার কোন বন্ধু ছিল না।[২০][২১] প্রথম গ্রেডে পড়াকালীন তিনি মারপিঠধর্মী ফার্স্ট ব্লাড চলচ্চিত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হন এবং স্কুলে স্টেক ছুড়ি নিয়ে যেতেন ও বিরতির সময় অন্যান্য শিক্ষার্থীদের দিকে তা ছুড়ে মারতেন। এই ঘটনার ফলে সন্দেহের জন্ম নেয়।[৯] তিনি পড়তে পারতেন না[২২] এবং অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি) রোগে আক্রান্ত বলে মূল্যায়িত হন। কিন্তু তিনি রোগের চিকিৎসা করেন নি এবং ভুল রিপোর্ট বলে কখনো ঔষধ সেবন করেন নি।[২৩] তার মাতা চাকরি ছেড়ে দেন এবং বাড়িতেই তাকে একবছর পাঠদান করেন।[২৪] গসলিং বলেন বাড়িতে এই পাঠদান তার মধ্যে এক ধরনের একনায়কতন্ত্র গড়ে তুলতে সাহায্য করে যা তিনি কখনো হারান নি।[৯]
১৯৯৩ সালে ১২ বছর বয়সে গসলিং মন্ট্রিয়লে ডিজনি চ্যানেলের দ্য মিকি মাউস ক্লাব এর একটি মুক্ত অডিশনে অংশগ্রহণ করেন। তার সাথে মাউসকিটার চরিত্রে জন্য দুই বছরের চুক্তি হয় এবং তিনি ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে চলে যান।[২৫] তাকে পর্দায় খুব কমই দেখা যেত কারণ অন্য শিশুরা তার চেয়ে প্রতিভাবান ছিল বলে মনে করা হয়।[২৬] যাই হোক, গসলিং এই দুই বছর সময়কে তার জীবনের সেরা সময় বলে বর্ণনা করেন।[২৫] তার সাথে অন্য অভিনয়শিল্পীরা ছিল জাস্টিন টিম্বারলেক, ব্রিটনি স্পিয়ার্স ও ক্রিস্টিনা আগুইলেরা। গসলিং তাদের সাথে কাটানো সময়কে "মনযোগের প্রধান সময়" বলে উল্লেখ করেন।[২৭] তিনি বিশেষ করে টিম্বারলেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন এবং এই অনুষ্ঠান চলকালীন দ্বিতীয় বছরের ছয় মাস একত্রে কাটান। গসলিংয়ের মা তার কাজের জন্য কানাডা ফিরে গেলে টিম্বারলেকের মা গসলিংয়ের বৈধ অবিভাবক হন।[২৮] গসলিং বলেন টিম্বারলেক এবং তার এখন আগের মত যোগাযোগ নেই, তবে তারা এখনো একে অপরের কাজে সহায়ক।[২৭] ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠানটি পরিত্যক্ত হলে গসলিং কানাডায় ফিরে যান এবং সেখানে পারিবারিক বিনোদনধর্মী টেলিভিশন ধারাবাহিক আর ইউ অ্যাফ্রেড অব দ্য ডার্ক? (১৯৯৫),[২৯] গুজবাম্পস (১৯৯৬) অভিনয় করেন।[২৯] পরের দুই বছরে তিনি ব্রেকার হাই (১৯৯৭-৯৮) ধারাবাহিকে শন হ্যানলন চরিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি নিউজিল্যান্ডের ফক্স কিড এন্টারটেইনমেন্টের রোমাঞ্চকর ধারাবাহিক ইয়ং হারকিউলিস (১৯৯৮-৯৯) এ নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন।[২৯] ২০০২ সালে তিনি ভ্যাঙ্কুভার সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি এই অনুষ্ঠানে কাজ করাটা প্রথমদিকে খুব উপভোগ করেছিলেন, কিন্তু পরে যখন এই ধারাবাহিক নিয়ে বেশি ভাবা শুরু করেন তখন আর তা শুধু আনন্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন একটি চরিত্র নিয়ে আরও বেশি সময় ব্যয় করবেন এবং নতুন চরিত্র উদ্ভাবন করবেন এবং বিভিন্ন ধরনের চরিত্র ভূমিকায় কাজ করবেন। ফলে তিনি চলচ্চিত্রে আসার কথা ভাবেন এবং আর কোন টেলিভিশনের কাজের প্রস্তাব গ্রহণ করেন নি।[২৫]
১৯ বছর বয়সে গসলিং "গম্ভীর প্রকৃতির অভিনয়" করার সিদ্ধান্ত নেন। তার প্রতিনিধি তাকে ছেড়ে চলে যায় এবং প্রথম দিকে তিনি নিজেও দেখতে পান যে এই ধরনের কাজ পাওয়া তার জন্য কঠিন, কারণ তখনও তার গায়ে শিশুতোষ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে "গন্ধ" লেগে আছে।[৩০] ফুটবল খেলা সম্পর্কিত নাট্যধর্মী রিমেম্বার দ্য টাইটান্স চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর গসলিং নব্য-নাৎসিবাদ বিষয়ক দ্য বিলিভার (২০০১) চলচ্চিত্রে একজন ইহুদি যুবক চরিত্রে মূল ভূমিকায় কাজ করার সুযোগ পান। পরিচালক হেনরি বিন তাকে এই চরিত্র ভূমিকায় নির্বাচন করেন কারণ মোর্মন হিসেবে তার বেড়ে ওঠা তাকে ইহুদি ধর্মীয়দের পৃথক হওয়ার বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করে।[৩১] লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের কেভিন থমাস তার অভিনয়ের প্রশংসা করে বলেন "উদ্দীপিত ও প্রচণ্ড রকমের বিশ্বাসজনক" অভিনয়।[৩২] অন্যদিকে, ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনের টড ম্যাককার্থি মনে করেন তার এই "বিস্ফোরক অভিনয় আরও ভাল হতে পারত"।[৩৩] চলচ্চিত্রটি সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার লাভ করে[৩৪] এবং গসলিং বলেন "এই চলচ্চিত্রটি আমার কর্মজীবনের এক ধরনের পুরস্কার দিয়ে ঘেরা কাজ।"[৩৫] বিতর্কিত বিষয় নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য আর্থিক সহায়তা পাওয়া কষ্টসাধ্য ছিল, ফলে শোটাইম নেটওয়ার্কে চলচ্চিত্রটি প্রচার করা হয়।[৩৬] চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয় এবং ১.৫ মার্কিন ডলার বাজেটে নির্মিত চলচ্চিত্র ৪১৬,৯২৫ মার্কিন ডলার আয় করে।[৩৭]
গসলিং মূলধারার দর্শকের নজরে আসেন প্রণয়ধর্মী নাট্য দ্য নোটবুক (২০০৪) এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নিকোলাস স্পার্কস রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নিক কাসাভেটস পরিচালিত ছবিটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন কানাডীয় অভিনেত্রী র্যাচেল ম্যাকঅ্যাডাম্স।[৩৮] গসলিং এতে নোয়াহ ক্যালহোন চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তার চরিত্রে সম্পর্কে বলেন, "এটি [চলচ্চিত্রটি] আমাকে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৬ সাল সময়কার একটি ভূমিকায় কাজ করার সুযোগ দেয়, যা খুবই গভীর ও সৃজনশীল ছিল।"[৩৯] ২০০২ সালের শেষের দিকে এবং ২০০৩ সালের শুরুর দিকে সাউথ ক্যারোলিনার চার্লস্টনে চলচ্চিত্রটির চিত্রায়ন হয়।[৪০] যদিও গসলিং ও ম্যাকঅ্যাডামস ২০০৫ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, এই চলচ্চিত্রের সেটে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।[৪১][৪২] এই প্রসঙ্গে গসলিং বলেন, "এটা খুবই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ছিল যে প্রেমের গল্পে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে কিন্তু সহশিল্পীর সাথে মতের মিল হচ্ছে না।[৯] এক পর্যায়ে গসলিং পরিচালক কাসাভেটসকে অফ-ক্যামেরা শুটের জন্য অন্য কাউকে আনতে বলেন, কারণ তিনি মনে করতেন ম্যাকঅ্যাডামস সহযোগিতা করেছেন না।[৪২] দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ছবিটির দুই প্রধান শিল্পীর অভিনয়ের প্রশংসা করে লিখেন "স্বতঃস্ফূর্ত ও উত্তপ্ত অভিনয়"।[৪৩] ছবিটি বিশ্বব্যাপী ১১৫ মিলিয়ন ডলার আয় করে।[৪৪] গসলিং টিন চয়েস পুরস্কার[৪৫] ও এমটিভি মুভি পুরস্কার লাভ করেন।[৪৬] এন্টারটেইনমেন্ট উয়িকলি অনুসারে, চলচ্চিত্রটিতে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র চুম্বন রয়েছে,[৪৭] এবং লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যকে ৫০ ধ্রুপদী চলচ্চিত্র চুম্বন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৪৮] দ্য নোটবুক ছবিটি বেশ কয়েকটি সেরা প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৪৯][৫০][৫১][৫২]
গসলিং পরবর্তীতে হাফ নেলসন (২০০৬) চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন। এতে তাকে একজন মাদকাসক্ত জুনিয়র হাই স্কুল শিক্ষক চরিত্রে দেখা যায়, যিনি তার এক শিক্ষার্থীর সাথে সম্পর্কে জড়ান। এই চলচ্চিত্রের প্রস্তুতি হিসেবে তিনি শুটিং শুরুর একমাস পূর্বে নিউ ইয়র্কে যান। তিনি ব্রুকলিনে একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করেন এবং একজন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষকের মত করে সময় কাটান।[৫৩] লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের কেনেথ টুরান তার অভিনয় সম্পর্কে লিখেন, "সম্মোহিত করার মত অভিনয়।"[৫৪] সান ফ্রান্সিস্কো ক্রনিকলের রুথ স্টেইন তাকে মার্লোন ব্র্যান্ডোর সাথে তুলনা করেন এবং বলেন, "যারা ভালো অভিনয় পছন্দ করেন, তার এই অভিনয় এড়িয়ে যাবেন না।"[৫৫] রজার ইবার্ট মনে করেন, "তিনি সমসাময়িক চলচ্চিত্রে অভিনয় করা একজন অন্যতম সুন্দর অভিনেতা।"[৫৬] এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২২] ছবিটি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ৪ মিলিয়ন ডলার আয় করে।[৫৭] ২০০৭ সালে তাকে একাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।[৫৮]
২০০৭ সালে গসলিং "পুট মি ইন দ্য কার" শীর্ষক একটি একক গান রেকর্ড করেন, যা এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে এবং ডাউনলোড করা যাচ্ছে।< একই বছরে গসলিং এবং তার বন্ধু জাক শিল্ডস মিলে ইন্ডি রক সঙ্গীত দল ডেড ম্যান্স বোনস্ গঠন করেন। তাদের দুজনের প্রথম পরিচয় হয়েছিল ২০০৫ সালে যখন গসলিংয়ের রেচেল ম্যাকঅ্যাডামসের সাথে সম্পর্ক ছিল এবং শিল্ডসের রেচেলের বোন কেলিনের সাথে সম্পর্ক ছিল।[৫৯][৬০] তারা প্রথমে মনস্টার থিম যুক্ত গীতি নাট্যমঞ্চ প্রকল্পের কথা ভাবেন, কিন্তু পরে সঙ্গীত দল গঠন করেন, কারণ তারা বুঝতে পারেন যে নাট্য মঞ্চস্থ করা ব্যয়বহুল হতে পারে।[৫৯] তারা সিলভারলেক কনজারভেটরির শিশুদের দলকে সাথে নিয়ে নিজেরাই সকল বাদক যন্ত্র বাজানো শিখেন এবং তাদের সঙ্গীত দলের নামে তাদের প্রথম অ্যালবাম রেকর্ড করেন।[৫৯] গসলিং রেকর্ডে গানে কণ্ঠ দেন, পিয়ানো, গিটার, বেজ গিটার ও সেলো বাজান।[৬০] ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর অ্যান্টি-রেকর্ডস থেকে অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়।[৬১] পিচফোর্ক মিডিয়া এর প্রশংসা করে লিখে, "অদ্বিতিয়, চিত্তাকর্ষক ও সুন্দর অদ্ভুত রেকর্ড",[৬২] অন্যদিকে, প্রিফিক্স মনে করে অ্যালবামটি "বিরলভাবে কালতীর্ণ ও অনুপযুক্ত নয়।"[৬৩] যাই হোক, স্পিন ম্যাগাজিন মনে করে অ্যালবামটিতে "অভিনয়শিল্পীরা দ্বিধাপূর্ণ পপ সঙ্গীতজ্ঞ হয়ে ওঠে এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে নি"[৬৪] এবং এন্টারটেইনমেন্ট উয়িকলি এর সমালোচনা করে লিখে, "বিতৃষ্ণ, গথিক মূল্যহীন।"[৬৫]
২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গসলিং ও শিল্ডসের লস অ্যাঞ্জেলেসের বব বেকার ম্যারিওনেট থিয়েটারে তিন রাতের অনুষ্ঠানে গানের সাথে নিয়ন কঙ্কাল ও উজ্জ্বল ভূত সেজে নৃত্যও পরিবেশন করেন।[৬০][৬৬] পরবর্তীতে ২০০৯ সালের অক্টোবরে তারা উত্তর আমেরিকা সফরে বের হন এবং তাদের প্রতিটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিশুদের দল ছিল।[৬৭][৬৮] প্রারম্ভিক দৃশ্যের পরিবর্তে তার প্রতি রাতে নতুন প্রতিভা অনুষ্ঠান আয়োজন করত।[৬৯] ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তারা লস আঞ্জেলেসের এফওয়াইএফ উৎসবে গান পরিবেশন করেন। ২০১১ সালে গসলিং ডেড ম্যান্স বোনস্ থেকে দ্বিতীয় একটি অ্যালবাম রেকর্ড করার ইচ্ছার কথা বলেন এবং জানান এতে কোন শিশুদের দল থাকবে না কারণ এটি "রক অ্যান্ড রোল ধরনের হবে না।"[৭০]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; independent uk 2013
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; people1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; INTERVIEWMAGAZINE
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি