রুচা পূজারি | |
---|---|
দেশ | ভারত |
জন্ম | কোলাপুর, মহারাষ্ট্র, ভারত | ২ জুলাই ১৯৯৪
খেতাব | ওম্যান ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার (২০১৭) |
ফিদে রেটিং | ২২৪৪ (মার্চ ২০২০) |
সর্বোচ্চ রেটিং | ২২৬৮ (জুলাই ২০১৯) |
রুচা পূজারি (জন্ম ২রা জুলাই ১৯৯৪) হলেন একজন ভারতীয় দাবা খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে একজন ওম্যান ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার [১] এবং এর আগে ২০০৬ সালে, তিনি ওম্যান ফিদে মাস্টার [২] উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
তিনি কোলাপুরে জন্মগ্রহণ করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি নিজের ভাইয়ের সাথে দাবা খেলা শুরু করেন।[৩] তিনি ২০০১ সালে তাঁর প্রথম অনূর্ধ্ব-৭ রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন, এরপর চেন্নাইতে জাতীয় অনূর্ধ্ব-৭ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন। [৪]
তিনি শিব ছত্রপতি পুরস্কারের একজন প্রাপক, এটি ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক মহারাষ্ট্রের খেলোয়াড়দের বার্ষিকভাবে সম্মানিত করা সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার।[৫]
পূজারি বহু বিশ্ব যুব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন যার মধ্যে রয়েছে ২০০৯ সাল: অ্যান্টালিয়া -তুরস্কে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ বালিকা বিভাগ,[৬] এবং ২০১২ সাল: স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের বিভাগ।[৭]
তিনি ২০১৩ সালে কোকাইলি,[৮] এবং ২০১৪ সালে ভারতের পুনেতে দুবার বিশ্ব জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের একটি বড় বৈশ্বিক দাবা প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।[৯]
পূজারি তাঁর প্রথম এশীয় ইভেন্টে খেলেছিলেন যখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর। তিনি ২০০৩ সালে কালিকটে অনুষ্ঠিত এশিয়ান যুব অনূর্ধ্ব-১০ বালিকা চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, সেখানে তিনি রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।[১০] পরের বছর তিনি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত একই ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত পদকের পাশাপাশি, ভারত সেই ইভেন্টে দলগত স্বর্ণপদকও জিতেছিল এবং পূজারি ওম্যান ফিদে মাস্টার (ডব্লিউএফএম) খেতাব পেয়েছিলেন।[১১]
২০০৯ সালে, তিনি নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান যুব অনূর্ধ্ব-১৬ বালিকা চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক অর্জন করেন।[১২][১৩] পরের বছর তিনি চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত একই ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন।[১৪] সেই ইভেন্টে সোনা জিতেছিল ভারতীয় দল।
তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হল এশিয়ান যুব অনূর্ধ্ব-১৮ বালিকা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা, যেটি ২০১১ সালে ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[১৫]
২০১২ সালে, পূজারি উজবেকিস্তানের তাসখন্দে অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুনিয়র গার্লস দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। তিনি ভাল প্রদর্শন করেছিলেন, কিন্তু চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত হয়ে, ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন।[১৬] সেই টুর্নামেন্টে তিনি তাঁর দ্বিতীয় মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম অর্জন করেন। তিনি এশিয়ান জুনিয়র গার্লস ব্লিটজ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকটি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছিলেন, যেটি ক্লাসিক ইভেন্টের পরে আয়োজিত হয়েছিল।[১৭] ২০১৩ সালে, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুনিয়র গার্লস দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেখানে তিনি ৭ম স্থান অর্জন করেছিলেন।[১৮]
পূজারি বহু কমনওয়েলথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সালে মুম্বাই অনূর্ধ্ব-১২ বালিকা বিভাগে স্বর্ণ জেতা।[১৯]
তিনি ২০০৯ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপেও অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেখানে তিনি পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিলেন।[২০]
পূজারি চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল অনূর্ধ্ব-৭ বালিকা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন এবং টুর্নামেন্ট জিতে তাঁর প্রথম জাতীয় শিরোপা অর্জন করেন।[২১]
২০০৮ সালে, পূজারি ম্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাব-জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।[২২]
২০১০ সালের আগস্ট মাসে, পূজারি ভারতের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টগুলির মধ্যে একটি জিতেছিলেন - গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় মহিলা চ্যালেঞ্জার্স দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ।[২৩] [২৪]
২০১১ সালে গোয়ায় অনুষ্ঠিত জাতীয় জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে, পূজারি রানার্স আপ ট্রফি জিতেছিলেন।[২৫] ২০১২ সালে পূজারির একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসে যখন তিনি রাজস্থানের আজমিরে অনুষ্ঠিত ২৭তম জাতীয় জুনিয়র বালিকা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন। চতুর্থ বাছাই হিসেবে তিনি ৯/১১ স্কোর করেন এবং চ্যাম্পিয়ন হন। এটি ছিল তাঁর তুর্থ জাতীয় শিরোপা।[২৬][২৭] পরের বছর লখনউতে অনুষ্ঠিত জাতীয় জুনিয়র গার্লস চ্যাম্পিয়নশিপে, তিনি আবার সম্ভাব্য ১১ এর মধ্যে ৯ পয়েন্ট অর্জন করেছিলেন, কিন্তু এবার প্রথম স্থানের জন্য দুজনের সমান পয়েন্ট (টাই) হয়। টাই ভেঙে তাঁকে রানার আপ ঘোষণা করা হয়।[২৮]
এগুলি ছাড়াও, পূজারি ২০১৩ সালে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় মহিলা টিম চ্যাম্পিয়নশিপেও অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর দল পিএসপিবি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল এবং তিনি শীর্ষ বোর্ডে তাঁর ব্যক্তিগত প্রদর্শনের জন্য একটি রৌপ্য পদক পেয়েছিলান।[২৯]
পূজারি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তারমধ্যে কয়েকটি হলো ভিলা ডি সর্ট ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপ (২০০৯, স্পেন), সিউটাট ডি বালাগুয়ের চ্যাম্পিয়নশিপ (২০০৯, স্পেন), ভিলা ডি বেনাস্ক চ্যাম্পিয়নশিপ (২০০৯, স্পেন), মস্কো ওপেন এ টুর্নামেন্ট (২০১৩, রাশিয়া), [৩০] দ্বিতীয় গ্র্যান্ড ইউরোপ ওপেন (২০১৩, বুলগেরিয়া)।[৩১] তিনি রাশিয়ার মস্কোতে অ্যারোফ্লট ওপেন (বি) ২০১৭-এ তাঁর তৃতীয় আন্তর্জাতিক আদর্শ দাবি করেন এবং ওম্যান ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারের খেতাব অর্জন করেন।[৩২]
পূজারি পুনেতে অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্র দাবা লীগে দুবার অংশ নিয়েছেন। ২০১৩ সালে, তিনি আহমেদনগর চেকার্স দলের হয়ে খেলেছিলেন, যেটি টুর্নামেন্টে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল।২০১৪ সালে, পূজারি জলগাঁও ব্যাটলার্স দলের অংশ ছিলেন, যারা শেষ পর্যন্ত লীগের দ্বিতীয় সংস্করণ জিতে যায়।[৩৩] [৩৪]
রুচেস২৭ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
টুইচ তথ্য | |||||||
চ্যানেল | |||||||
কার্যকাল | ২০২০–বর্তমান | ||||||
ধারা | গেমিং | ||||||
গেম | |||||||
সহযোগী শিল্পী | |||||||
|
পূজারি ২০২০ সালের অক্টোবরে টুইচ- এ ইন্টার-অ্যাক্টিভ এবং শিক্ষামূলক দাবা স্ট্রিমিং শুরু করেন। তিনি টুইচ-এ একচেটিয়াভাবে স্ট্রিম চালিয়ে যাচ্ছেন এবং টুইচের অংশীদার হওয়ার জন্য প্রথম খেতাবপ্রাপ্ত ভারতীয় মহিলা খেলোয়াড় হয়েছেন।[৩৫] তিনি লিচেস এবং চেসডমেও স্ট্রিম করেন।[৩৬] তাঁর স্ট্রিমিং সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন শীর্ষ দাবা খেলোয়াড়েরা, যেমন পেন্টালা হরিকৃষ্ণা, বাদুর জোবাভা, চেলসি মনিকা ইগনেসিয়াস সিহাইট এবং এর সঙ্গে বড় দাবা প্ল্যাটফর্মগুলি, যেমন চেসবেস ইন্ডিয়া, সময় রায়না এবং অন্যান্য। কোভিড-১৯ মহামারী এবং দ্য কুইন্স গ্যাম্বিট মিনিসিরিজের জনপ্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত সময়ে অনলাইন দাবা খেলার প্রতি আগ্রহের ব্যাপক বৃদ্ধির জন্য পূজারির চ্যানেলের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
পূজারি সক্রিয়ভাবে আলোচনা, ইভেন্ট এবং ছোট কোচিং সেশনের মাধ্যমে দাবা খেলার প্রচারে অংশ নেন।[৩৭] তিনি ২০১৪ সালের মে মাসে ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র দ্বারা আয়োজিত একটি প্রচারমূলক যুগপত দাবা প্রদর্শনী খেলেন, যেখানে ৩৮ জন খেলোয়াড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ৩৭টি গেম জিতেছিলেন এবং একটি খেলা ড্র হয়েছিল।[৩৮] তিনি বিউটিফুল পাজলস নামে একটি বইও লিখেছেন।[৩৯]
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)