রুশি মোদি | |
---|---|
জন্ম | ১৭ জানুয়ারি ১৯১৮ |
মৃত্যু | ১৬ মে ২০১৪ | (বয়স ৯৬)
মাতৃশিক্ষায়তন | অক্সফোর্ড |
পেশা | ১৯৮৪-১৯৯৩ সাল থেকে টাটা স্টিলের চেয়ারম্যান |
দাম্পত্য সঙ্গী | সিলু রুসি মোদি |
পিতা-মাতা | স্যার হোমি মোডি এবং লেডি জেরভাই |
রুস্তমজি হোমুসজি মোদি (১৭ জানুয়ারি ১৯১৮ - ১৬ মে ২০১৪) ছিলেন টাটা স্টিলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং টাটা গ্রুপের একজন নেতৃস্থানীয় সদস্য। বেশিরভাগ মানুষের কাছে তিনি রুশি মোদি নামে পরিচিত।
১৯১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বাই) একটি পার্সি পরিবারে রুশি মোদি জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার পিতা ছিলেন স্যার হোমি মোদি। তার মাতা ছিলেন লেডি জেরবাই মোদি। রুসির দুই ভাই ছিল। তাদের নাম হলো কালী হোমি মোদি এবং পিলু মোদি।[২]
ভারতে কয়েক বছর স্কুলে পড়ার পর রুশিকে আরও পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। তিনি সেন্ট সাইপ্রিয়ান স্কুল, হ্যারো স্কুল এবং পরে অক্সফোর্ডের ক্রাইস্ট চার্চে অধ্যয়ন করেন।
রুশি তার মাসির মেয়ে সিলু মুগাসেথকে বিয়ে করেন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি কলকাতায় ছিলেন।[৩]
১৯৩৯ সালে ইংল্যান্ড থেকে ভারতে ফিরে এসে তিনি টাটা স্টিলের অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৩ সালে তিনি নির্দেশক (কার্মিক) পদে উন্নীত হন। ১৯৬৫ সালে টাটার ইস্পাত শিল্পে যেসব কাঁচামাল লাগে তার নির্দেশক পদ গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি অপারেশন ডিরেক্টর নিযুক্ত হন এবং ১৯৭২ সালে যুগ্ম ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ পান।[৪][৫] তিনি টাটা স্টিল লিমিটেডের সবচেয়ে উদার প্রকৃতির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। তার কার্যকালে ভাল কাজের জন্য তিনি অনেক কর্মচারীকে পুরস্কৃত করেছেন। এমনকি তিনি টাটা স্টিলের সমস্ত ডিভিশনাল ম্যানেজারকে বাতানুকূল মারুতি সুজুকি গাড়ি দেওয়ার মতো অনেক পুরস্কার শুরু করেছিলেন। টাটা ইস্পাত কারখানায় তিনি কখনও ধর্মঘটের মুখোমুখি হননি।
১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে তিনি টাটা ইস্পাত কারখানা থেকে অবসর নেন। অবসর নেওয়ার পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রী পিভি নরসিমা রাও তাকে ভারতীয় এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ইন্ডিয়ার যুগ্ম চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করেন।[৬]
রুশি মোদি সম্পর্কে অনেক ঘটনা মানুষের মুখে মুখে ফেরে। শোনা যায়, একবার যুবক রুশি সরু রাস্তায় গাড়ি পার্ক করার চেষ্টা করলে একজন পুলিশ তাকে টেনে নিয়ে যায়। পুলিশটি তাকে বলে "তুমহারা বাপ কা রাস্তা হ্যায় কেয়া?" ("এই রাস্তাটি কি তোমার বাবার?") যুবকটি বিন্দুমাত্র উত্তেজিত না হয়ে রসিকতার সাথে রাস্তার সাইনবোর্ডটির দিকে ইঙ্গিত করে। বলা বাহুল্য প্রকৃতপক্ষে সাইনবোর্ডটিতে তার বিশিষ্ট পিতার নাম ছিল।[৭]
প্রাতঃরাশে ১৬-ডিমের অমলেট খাওয়াতেও তিনি পরিচিত ছিলেন।[৮]
অক্সফোর্ডে অধ্যয়নকালে যখন আলবার্ট আইনস্টাইন বেহালা বাজাতেন, তিনিও তার সাথে পিয়ানো বাজাতেন।[৯][১০][১১]
রুশি মোদি সাধারণত বুধবার বিকেলে কলকাতা সাউথ ক্লাবে টেনিস খেলতেন। একবার বুধবার বিকেলে বিখ্যাত ভারতীয় ব্যবসায়ী এবং পদ্মভূষণ প্রাপক স্যার জাহাঙ্গীর গান্ধির কলকাতায় আসার কথা ছিল। রুশি টেবিলে পড়ে থাকা তার ডায়েরিতে লিখলেন, “বুধবার বিকাল ৩টায় টিপিটি সিএসসি মিটিং”। বুধবার বেরুবার আগে তার সেক্রেটারিদের বললেন, স্যার জাহাঙ্গীর এলে তাকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে ডায়েরিটি দেখাতে এবং বলতে যে রুশি মিটিংয়ে গেছেন। সত্যই স্যার জাহাঙ্গীর এলে তাকে ডায়েরিটি দেখান হয়। ডায়েরিটি দেখে তিনি মাথা নাড়ে চলে গেলেন। স্যার জাহাঙ্গীর জানতেন না যে, টিপিটি সিএসসি হলো “টু প্লে টেনিস অ্যাট ক্যালকাটা সাউথ ক্লাব” এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
২০১৪ সালের ১৬ মে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে রুশি মোদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[১২]