শান্তিবাদ বলতে এমন একটি মতবাদকে বোঝায় যা যুদ্ধ, সামরিকবাদ (সেনাবাহিনীতে যোগদান ও বাধ্যতামূলক সামরিক সেবাসহ) কিংবা সহিংসতার বিরোধী। ফরাসি শান্তিবাদী আন্দোলনকর্মী এমিল আর্নো সর্বপ্রথম পাসিফিজম পরিভাষাটি উদ্ভাবন ও ব্যবহার করেন এবং ১৯০১ সালে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত ১০ম বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে অন্যান্য শান্তিকর্মীরা পরিভাষাটি গ্রহণ করেন।[১] শান্তিবাদের একটি কাছাকাছি পরিভাষা হল "অহিংসা" (কারও ক্ষতি না করা), যা কিনা ভারতের হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মগুলির একটি কেন্দ্রীয় দর্শন। যদিও আধুনিক শান্তিবাদের নিহিত অর্থগুলি বেশ সাম্প্রতিক ও ১৯শ শতক থেকে এগুলির ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়ে আসছে, প্রাচীন বহু রচনাবলিতে শান্তিবাদ সম্পর্কিত বিভিন্ন রচনা বিদ্যমান।
আধুনিক যুগে এসে রুশ লেখক লেভ তোলস্তোয়ের শেষ দিককার রচনাগুলিতে, বিশেষ করে ঈশ্বরের রাজ্য তোমার ভেতরেই নিহিত রচনাটিতে শান্তিবাদের প্রতি আগ্রহ পুনরুজ্জীবিত হয়। ভারতের মহাত্মা গান্ধী সত্যগ্রহ নামক একটি অটল অহিংস বিরোধিতার চর্চার পক্ষে প্রচারণা চালান, যা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে চাবিকাঠিস্বরূপ ভূমিকা রাখে। গান্ধীর এই মতবাদের কার্যকারিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, জেমস লসন, ম্যারি ও চার্লস বিয়ার্ড, জেমস বেভেল,[২] ও থিক নিয়াত হান-সহ (Thich Nhat Hanh) আরও অনেককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সময় অনুপ্রাণিত করেছিল।[৩]