শ্বেতা মোহন | |
---|---|
জন্ম | |
পেশা | নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী |
কর্মজীবন | ২০০৫–বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | অশ্বিন (বি. ২০১১) |
সন্তান | ১ |
পিতা-মাতা | কৃষ্ণ মোহন (পিতা) সুজাতা মোহন (মাতা) |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | নেপথ্য সঙ্গীত |
বাদ্যযন্ত্র | কণ্ঠ, পিয়ানো[১] |
ওয়েবসাইট | shwetamohan |
শ্বেতা মোহন হলেন একজন ভারতীয় নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী। তিনি মূলত দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা, তথা মালয়ালম, তামিল, তেলুগু, কন্নড় ভাষার পাশাপাশি হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র ও অ্যালবামের গানে কণ্ঠ দিয়ে থাকেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ, একটি কেরল রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একটি তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
শ্বেতা মোহন তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ে এক মালয়ালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা হলেন কৃষ্ণ মোহন, এবং মাতা সুজাতা মোহন একজন নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী।[২] তিনি চেন্নাইয়ের গুড শেপার্ড কনভেন্টে পড়াশোনা করেন এবং পরে চেন্নাইয়ের স্টেলা ম্যারিস কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন।[৩]
বিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতেন। সে সময়ে তাঁর পিতামাতা, বিশেষ করে তাঁর মা তাঁর গান গাওয়াকে নিরুৎসাহিত করতেন। কিন্তু দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি আন্তঃবিদ্যালয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জয় করতে থাকলে তাঁর পিতামাতা বুঝতে পারেন গান গাওয়ার জন্য তাঁর কণ্ঠ উপযুক্ত। তখন থেকে শ্বেতা নিয়মিত অনুশীলন করতেন এবং পরে সঙ্গীতশিল্পী কে. এস. চিত্রা তাঁকে তাঁর সঙ্গীত গুরু বিন্নি কৃষ্ণকুমারের নিকট নিয়ে যান।[৪] কৃষ্ণকুমারের অধীনে তিনি কর্ণাটকী শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেন।[৫] এছাড়া তিনি গুলাম নিয়াজ খানের নিকট হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত এবং অগাস্টিন পলের নিকট পশ্চিমী ধ্রুপদী সংগীতের প্রশিক্ষণ নেন।[৬] তিনি এ আর রহমানের সুরে বম্বে (১৯৯৫) চলচ্চিত্রে "কুচি কুচি রাকমা" গানে শিশুদের সমবেত দলের অংশ ছিলেন।[৪]
চলচ্চিত্রের জন্য শ্বেতার গাওয়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ গান ছিল কার্তিক রাজার সুরে থ্রি রোজেস (২০০৩) চলচ্চিত্রে।[২] ২০০৭ সালে তিনি নিবেদ্যম চলচ্চিত্রে "কোলা কুজল" গানে কণ্ঠ দিয়ে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী বিভাগে কেরল রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। সঙ্গীত পরিচালক জয়চন্দ্রন চেয়েছিলেন গানটিতে তাঁর মা সুজাতা কণ্ঠ প্রদান করুন, কিন্তু শ্বেতা তাঁর ডেমো কাজ পাঠালে তাঁকেই এই গানটি গাওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়।[২]
তিনি কন্নড় ভাষার সাইজনি চলচ্চিত্রে "লাভলি লন্ডন", আরামানে (২০০৮) চলচ্চিত্রে "পাত্রা বারেয়ালা", ও গানা বাজানা (২০১০) চলচ্চিত্রে হোসাদোন্দু হেসারিদু" গানে কণ্ঠ দেন।[৭]
২০১২ সালে তিনি সিঙ্গাপুরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক তামিল চলচ্চিত্র পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ নারী সঙ্গীতশিল্পী জুরি পুরস্কার অর্জন করেন।[৮] তিনি বলিউডের ডেভিড (২০১৩) চলচ্চিত্রে অনিরুদ্ধ রবিচন্দরের সুরে "ইউ হি রে" গানে কণ্ঠ দেন।[৪] সাই কৃষ্ণের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র স্যান্ডেলউড (২০১৪)-এ কন্নড় ভাষার "শুরুবায়িতু মুদ্দাদা" গানে তার কণ্ঠ শোনা যায়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে।[৭]
২০১৭ সালে তিনি ২০১১ সালের একাধিক চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ প্রদানের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী বিভাগে তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[৯]
২০১৮ সালের বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে শ্বেতার প্রথম ইন্ডি ধারার দ্বি-ভাষী গান "ইয়াবাদুম এনাভে (তামিল)/সব মেরা হ্যাঁয় (হিন্দি)" প্রকাশিত হয়।[১০] বেনেট রোলান্ডের সুরায়োজনে এই গানটি প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন জনপ্রিয় চার্টে শীর্ষ স্থান দখল করে।[১১]
২০১৯ সালে তিনি শঙ্কর-এহসান-লায়ের সুরে বহু-ভাষিক সাহো চলচ্চিত্রে "বেবি ওন্ট ইউ টেল মি" গানের তেলুগু, তামিল ও হিন্দি সংস্করণে সিদ্ধার্থ মহাদেবন ও শঙ্কর মহাদেবনের সাথে কণ্ঠ দেন[১২] এবং সঞ্জীব টি'য়ের সুরের তাঁর সাথে দ্বৈত কণ্ঠে মালয়ালম ভাষার মনোহরণ চলচ্চিত্রের "কিনাবো" গানে কণ্ঠ দেন।[১৩]
তিনি ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি কোচিতে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিক অশ্বিন শশীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[১] অশ্বিন বহুজাতিক কোম্পানি জেনারেল ইলেকট্রনিক্সে চাকুরি করেন। তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০০৩ সালের জুলাই মাসে। অশ্বিনের বোন আরতি শ্বেতার স্টেলা ম্যারিস কলেজের সহপাঠি ছিলেন।[৩] তাঁদের একমাত্র কন্যা ২০১৭ সালের ১লা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করে।[১৪]