সাড়ে চুয়াত্তর

সাড়ে চুয়াত্তর
Original poster of Sharey Chuattor
সাড়ে চুয়াত্তর ছবির ডিভিডি প্রচ্ছদ
পরিচালকনির্মল দে
কাহিনিকারবিজন ভট্টাচার্য
শ্রেষ্ঠাংশেতুলসী চক্রবর্তী
মলিনা দেবী
উত্তম কুমার
সুচিত্রা সেন
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়
জহর রায়
সুরকারকালীপদ সেন
চিত্রগ্রাহকঅমল দাস
সম্পাদককালী রাহা
মুক্তি২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩[]
দেশভারত
ভাষাবাংলা

সাড়ে চুয়াত্তর হল ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় বাংলা কমেডি চলচ্চিত্র। এই ছবিটির পরিচালক ছিলেন নির্মল দে এবং কাহিনিকার ছিলেন বিজন ভট্টাচার্য। ছবিতে মুখ্যভূমিকায় অভিনয় করেন তুলসী চক্রবর্তী, মলিনা দেবী, উত্তম কুমারসুচিত্রা সেনধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়সনৎ সিংহ – এই পাঁচজন সমসাময়িক গায়কও এই ছবিতে অভিনয় করেন। আরও দু-টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়জহর রায়

কাহিনী

[সম্পাদনা]

রজনীবাবু (তুলসী চক্রবর্তী) কলকাতায় অন্নপূর্ণা বোর্ডিং হাউস নামে একটি মেস চালান। মেসটি বেশ শান্তিপূর্ণ এবং মেসের বাসিন্দাদের মধ্যেও বেশ ভাব রয়েছে। শুধু শিববাবু (হরিধন মুখোপাধ্যায়) অন্যদের প্রতি কিছুটা বিরূপ। একদিন রজনীবাবুর এক আত্মীয় (গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) তার ভাড়াবাড়ি থেকে উৎখাত হয়ে তার স্ত্রী (পদ্মা দেবী) ও কন্যা রমলাকে (সুচিত্রা সেন) নিয়ে বোর্ডিং-এ এসে উপস্থিত হন। তারা শিববাবুর কাছে আশ্রয় চান। রজনীবাবু মেসের বাসিন্দাদের মতামত জানতে চান। শিববাবু ছাড়া সকলেই মত দেন।

সেই বোর্ডিং-এর বাসিন্দা রামপ্রীতি (উত্তম কুমার) ছিল এক ধনী পরিবারের সন্তান। সে বাড়ি গিয়েছিল। ফেরার দিন সে চাকর মদনকে(নবদ্বীপ হালদার) খাবারের ব্যবস্থা করে রাখার কথা বলার জন্য বোর্ডিং-এ ফোন করে। কিন্তু কেউ ফোন ধরছে না দেখে রমলা ফোন তোলে। রামপ্রীতি বিশ্বাস করতে পারেনি যে, বোর্ডিং-এ কোনও মেয়ে আছে। দু-জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাদানুবাদ চলে। ফিরে রামপ্রীতি বোর্ডিং-এর অপর বাসিন্দা কেদারকে (ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়) সব কথা খুলে বলে। এরপরও রামপ্রীতি রমলার সম্পর্কে অন্য বাসিন্দাদের কাছে কটু মন্তব্য করতে থাকতে থাকে। সে কথা শুনতে পেয়ে রমলা রামপ্রীতির ঘরে এসে তাকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়।

যদিও অনতিবিলম্বেই রামপ্রীতি ও রমলা প্রেমে পড়ে যায় এবং মদনের মারফত চিঠি চালাচালি শুরু করে। কিন্তু বোর্ডিং-এর অন্যান্য বাসিন্দারা সে কথা জানতে পেরে তাদের বিদ্রুপ করতে শুরু করে। তাদের একটি চিঠি বাসিন্দারা হস্তগত করে রজনীবাবুকে বলে তার পকেটে গুঁজে দেয়। রজনীবাবু সেই সময় বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেন ধরার তাড়ায় ছিলেন। তিনি চিঠির কথাটি ভুলেই যান। বাড়িতে রজনীবাবুর স্ত্রী (মলিনা দেবী) চিঠিটি দেখতে পান। তিনি সন্দেহ করেন, তার স্বামী কোনও অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েছেন।

রামপ্রীতি ও রমলাকে প্রণয়পাশে আবদ্ধ দেখে রজনীবাবু রামপ্রীতির বাবার কাছে তার বিবাহের প্রস্তাব পাঠালেন। রামপ্রীতির বাবা বোর্ডিং-এ এসে বিবাহ সম্পর্ক পাকা করে গেলেন।

এদিকে রজনীবাবুর স্ত্রী গুনিন ডাকিয়ে ঝাড়ফুক শুরু করলেন। কিন্তু অধৈর্য হয়ে তিনি নিজেই কলকাতায় বোর্ডিং-এ এসে উপস্থিত হলেন। তিনি ক্রোধবশে রজনীবাবুকে একটি ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে বলেন যে, তিনি রজনীবাবুকে সতীনের ঘর করতে দেবেন না। তখন রজনীবাবু তাকে সেই চিঠির রহস্য খুলে বলেন। রজনীবাবুর স্ত্রী লজ্জিত হয়ে পড়েন। বোর্ডিং-এর বাসিন্দারা আড়ি পেতে সেই কথা শুনে রামপ্রীতি ও রমলার বাসর ঘরে এসে তাদের নিয়ে রসিকতা শুরু করে।

অভিনেতা-অভিনেত্রী

[সম্পাদনা]
অভিনেতা/অভিনেত্রী চরিত্র
তুলসী চক্রবর্তী রজনীবাবু, অন্নপূর্ণা বোর্ডিং হাউসের মালিক
মলিনা দেবী রজনীবাবুর স্ত্রী
উত্তম কুমার রামপ্রীতি
সুচিত্রা সেন রমলা
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় কেদার
জহর রায় কামাক্ষ্যা
নবদ্বীপ হালদার মদন
গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় রমলার বাবা
পদ্মা দেবী রমলার মা
শীতল বন্দ্যোপাধ্যায় বোর্ডিং-এর বাসিন্দা
ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় অখিলবাবু
পঞ্চানন ভট্টাচার্য বোর্ডিং-এর প্রবীণ বাসিন্দা
রেবা বসু সৌদামিনী
শ্যামল মিত্র বোর্ডিং-এর বাসিন্দা (গায়ক)
মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বোর্ডিং-এর বাসিন্দা (গায়ক)
দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় বোর্ডিং-এর বাসিন্দা (গায়ক)
শ্যাম লাহা বোর্ডিং-এর বাসিন্দা
রঞ্জিত রায় বোর্ডিং-এর বাসিন্দা
সনৎ সিংহ বোর্ডিং-এর বাসিন্দা (গায়ক)
হরিধন মুখোপাধ্যায় শিববাবু, বোর্ডিং-এর বাসিন্দা

সংগীত

[সম্পাদনা]
  1. আমার এ যৌবন – সমবেত কণ্ঠে (শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, পান্নালাল ভট্টাচার্যসনৎ সিংহ)
  2. এ মায়া প্রপঞ্চময় – ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য
  3. দিয়ো গো বাসিতে ভালো – সুপ্রভা সরকার

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "সাড়ে চুয়াত্তর ৬০ বছর পূর্ণ করেছে"। আনন্দবাজার পত্রিকা (পত্রিকা, পৃষ্ঠা ১)। ২ মার্চ ২০১৩। 
সূত্র