সিঙ্গাপুর ডেইজি

সিঙ্গাপুর ডেইজি

সিঙ্গাপুর ডেইজি
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
শ্রেণীবিহীন: Angiosperms
শ্রেণীবিহীন: Eudicots
শ্রেণীবিহীন: Asterids
বর্গ: Asterales
পরিবার: Asteraceae
গণ: Sphagneticola
প্রজাতি: S. trilobata
দ্বিপদী নাম
Sphagneticola trilobata
(L.) Pruski[]
প্রতিশব্দ

Complaya trilobata (L.) Strother
Silphium trilobatum L.
Thelechitonia trilobata (L.) H.Rob. & Cuatrec.
Wedelia carnosa Rich.[]
Wedelia paludosa DC.
Wedelia trilobata (L.) Hitchc.[]

সিঙ্গাপুর ডেইজি, সাধারণভাবে: যা বুনো ডেইজি',Trailing Daisy, এবং Wedelia.[][] বৈজ্ঞানিক নাম স্ফ্যাগনেটিকোলা ট্রাইলোবেটা (Sphagneticola trilobata (L.) Pruski,  সূর্যমুখী বা অ্যাস্টেরাসিয়ি (Asteraceae) পরিবারের অন্তর্গত। দুর্দমনীয় আগাছা হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার আগে নানা দেশে এই গাছ সুন্দর গ্রাউন্ড কভার হিসাবে বাগানে লাগানো হত। অস্ট্রেলিয়াতে একে প্রবর্তন করা হয়েছিল রেলসড়কের দুপাশের সরু এমব্যাঙ্কমেন্ট-এ যাতে মাটি সরে না যায়। এ ছাড়া লাগানো হয়েছিল একটি ছোট জলধারার (Creek) পাশে, ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য। তবে ফললাভ হয়নি, বন্যায় জলের উপর ভেসে উঠেছে সিঙ্গাপুর ডেইজির ঝাড় এবং নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে জলস্রোত। ।[]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Taxon: Sphagneticola trilobata (L.) Pruski"Germplasm Resources Information Network। United States Department of Agriculture। ২০০০-১১-২৮। ২০১১-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-১৬ 
  2. "Sphagneticola trilobata (herb)"Global Invasive Species DatabaseInvasive Species Specialist Group। ২০০৭-০৫-৩১। ২০১১-০৬-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-০৭ 
  3. ”Sphagneticola trilobata” , Pacific Island Ecosystems at Risk (PIER) website, http://www.hear.org/pier/species/sphagneticola_trilobata.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে
  4. "Sphagneticola trilobata"ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্সোনোমিক ইনফরমেশন সিস্টেম। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-১৬ 
  5. ”Sphagneticola trilobata (herb)”, Global Invasive Species Database website, at http://www.issg.org/database/species/ecology.asp?si=44 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুন ২০১১ তারিখে

অধিক পঠন

[সম্পাদনা]

সিঙ্গাপুর ডেইজির বিস্তারের কারণ অনেক। বেলে, দোয়াঁশ, পাথুরে, অম্লীয় বা ক্কষারীয়  যে কোনো মাটিতেই এরা জন্মাতে পারে এমন কি সমুদ্রতীরবর্তী নোনা অঞ্চলসমূহেও। এর বীজ থেকে সহজে চারা না জন্মালেও এই ক্ষুদ্র বীজ জলবাহিত হয়ে দূরদূরান্তে চলে যেতে পারে। মালিদের অভিজ্ঞতা থেকে জানা গেছ,ে গাছ ছাঁটার সময় যে সব ক্ষুদ্র টুকরো মাটিতে পড়ে সেখান থেকে স্টোলনের মাধমে শিকড় গজিয়ে বিস্তার লাভ করে এই গাছ।

স্বভাবের কারণে ছাগল কখনো কখনো সিঙ্গাপুর ডেইজির পাতা খায়। বেশি খেলে ছাগলের পা বাঁকাচোরা হয়ে পড়ে, হাঁটতে পারে না, আইভ্যালিন-এর উপস্থিতির কারণে। এই রসায়নের কারণে যে কোনো ভোক্তা প্রাণীর গর্ভপাত হতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায়, আইভ্যালিন ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের একটি সম্ভাবনাময় ওষুধ। সিঙ্গাপুর ডেইজির আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে, রিউমেটিজম ও পিঠ ব্যথার রোগীদের পাতা সেদ্ধ করা পানি দিয়ে গোসল করানো হয়। সন্ধি-প্রদাহ হলে পাতার পেস্ট কাপড়ে লাগিয়ে তা যথাস্তথানে  আটকে দেয়া হয়। সর্দিজ্বর, ফ্লু, ঠাণ্ডা, হেপাটাইটিস, মূত্রপ্রদাহ, মূত্রস্বল্পতা  ইত্যাদি রোগেও এর ব্যবহার দেখা যায়।

সিঙ্গাপুর ডেইজির মতো একটি ক্ষতিকর আগাছা একটি গোটা দেশের সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানে ধরা যায় অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, হংকং ও দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ায় এই আগাছার কারণে প্রতি বছর শস্যের ক্ষতি হয় ৩২ হাজার কোটি টাকার, পরিবেশ ক্ষতি বাদ দিয়ে হিসাব করলেও।

ক্ষতিকর গাছ ও প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়াতে তৈরি হয়েছে ‘জেনারেল বায়োসিকিউরিটি অবলিগেশন’ (GBO) সংস্থা যাতে অংশগ্রহণ করে, ল্যাণ্ডকেয়ার, বুশকেয়ারের কর্মচারী, ল্যান্ড সোসাইটির মালি, মালিক অনেকেই। কুইনস্‌ল্যান্ডে আগাছার উপর মাসিক পত্রিকা পর্যন্ত বের হয়। স্বেচ্ছাসেবী ও চাকুরিজীবী উইড-স্পটার আছে যারা আগাছা সনাক্ত করে কিংবা হারবেরিয়ামে সনাক্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়। হারবেরিয়াম ‘বায়োসিকিউরিটি’ অফিসকে এ ব্যাপারে অবহিত করে। আগাছা নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা ভাল... -- কখনো কখনো আমদানিকৃত শস্যের ভেতর ক্ষতিকর আগাছার বীজ থাকতে পারে। ভয়ঙ্কর আগাছা পার্থেনিয়ামের (Parthenium hysterophorus) বীজ এভাবেই নানা দেশে ছড়িয়েছে। পার্থেনিয়ামকে জৈবভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে কিন্তু এ পর্যন্ত সিঙ্গাপুর ডেইজির কোনো সফল জৈব নিয়ন্ত্রণ উদ্ভাবিত হয়নি। -- মানুষের কাপড়, কৃষি যন্ত্রপাতি, যানবাহনের টায়ার, গবাদি পশুর ক্ষুর এবং রোমের মাদধ্য মেও আগাছা ছড়াতে পারে। সহজেই বল্লম ঘাসের (Oplismenus hirtellus) আঠাল বীজের বিস্তার ঘটাতে পারে কুকুরের রোম ও মানুষের কাপড়। -- কম্পোস্ট ও মালচ্‌ আমদানির ক্ষেত্রে পরীক্ষা ও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়া দরকার।

আগাছা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সচেতনতার সঙ্গে সততাও থাকতে হবে। পশ্চিম বিশ্বে বুশওয়াকিং বা ক্যাম্পিংয়ের পর স্থান ত্যাগ করার আগে তারা জুতা, পোশাক-আশাক, গাড়ির চাকা, ঘোড়ার ক্ষুর, এমন কি পোষা প্রাণী কুকুর-বিড়ালের গায়েও ব্রাশ করে নেয়। কোনোক্রমেই কোক-পেপসির ক্যান, প্লাস্টিকের বোতল ইত্যাদি সাইটে ফেলে আসে না যার জৈব অবক্ষয় হতে শত শত বছর লেগে যেতে পারে। রাস্তার ধারের আঞ্চলিক আগাছা বিষয়ক নোটিশ-নিয়ম মেনে নিয়ে তবে গাড়ি চালনা করেন তারা। প্রায়শ গবাদি পশু কোনো কৃষি এলাকা বা বাগানে ঢোকানোর সময় কয়েকদিনের জন্য কোয়ারান্টাইন অবস্থায় রাখা হয় যাতে গোবর থেকে কাঁটানটে (Amaranthus spinosus) বা অন্য কোনো ক্ষতিকর আগাছার বিস্তার না ঘটে।

সিঙ্গাপুর ডেইজি পৃথিবীর ১০০টি নিকৃষ্টতম আগাছার অন্যতম। যার প্রথম ১০টির মধ্যে আমাদের পরিচিত ভেরেণ্ডা, ধুতুরা, ঘুঘুলতাও রয়েছে তবে এদের বিস্তার মারাত্মক নয়। আমাদের উপমহাদেশে অধিকাংশ আগাছার বিস্তার সীমিত হলেও চোখ-কান খোলা রাখতে হবে, কখন কোনটা বেড়ে উঠে সর্বনাশ শুরু করে তার কোনো ঠিক নেই।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]