সুনীল দাস | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১০ আগস্ট ২০১৫ কলকাতা | (বয়স ৭৬)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফট, কলকাতা একোল দে বোজার, প্যারিস |
পরিচিতির কারণ | অঙ্কন |
আন্দোলন | অভিব্যক্তবাদ |
সুনীল দাস (৪ আগস্ট, ১৯৩৯ – ১০ আগস্ট, ২০১৫) একজন ভারতীয় অভিব্যক্তবাদী চিত্রশিল্পী ছিলেন। তিনি তার বুল সিরিজ এবং "নারী" চিত্রাংকনের জন্য বিখ্যাত।[১] ২০১৪ সালে ভারত সরকার তাকে চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী দ্বারা ভূষিত করে।[২]
সুনীল দাস জন্মগ্রহণ করেন ভারতের কলকাতায় রজনী ভট্টাচার্য লেনে। বাবার নাম প্রভাসচন্দ্র দাস, মা নন্দরানি দাস। তার ছবি আকার প্রথম প্রেরণা দেওয়ালে সিনেমার পোস্টার। শিল্পীদের দুচারটি তুলির টানে অদ্ভুত গতিতে অবয়ব ফুটিয়ে তোলা মুগ্ধ হয়ে দেখতেন। পরে কালীঘাটে পটুয়াদের কাছে ছবির অনুপ্রেরণা পাবার জন্য যাতায়াত করেন, কিন্তু সেটি তাকে তেমনভাবে আকর্ষিত করে না। তিনি ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত প্রকৃতির ছিলেন, সেই গতিময়তা তিনি আঁকার মধ্যেও চাইতেন। [৩]
সুনীল ১৯৫৪ সালে কলকাতায় গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন তার কৃতিত্বে কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি নেন তাকে। [৩] তিনি ১৯৫৫ সালে গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটে ভর্তি হন। [৩] তারপর প্যারিসে একোল দে বোজারে ফরাসি সরকারের একটি বৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করতে যান। ঘোড়াদের চালচলন লক্ষ্য করার জন্য দিনের পর দিন তিনি আস্তাবলে কাটিয়েছেন। ঘোড়ার তেজীস্বভাব ও উদ্ধত চাহনিতে তিনি নিজের স্বভাবের মিল খুঁজে পেয়েছিলেন। সেইসময় কয়েকবছরে তিনি হাজারেরও বেশি ঘোড়ার ছবি আঁকেন।[৩] ঘোড়ার ছবি আঁকার জন্য তাকে "ঘোড়া দাস" বলেও লোকে চিনত।[৪] ১৯৫৭ সাল আসামের গৌহাটিতে প্রথম প্রদর্শনী হয়। প্রথম প্রদর্শনীতেই প্রচুর সুনাম পান। [৩] প্যারিসে সরকারী বৃত্তি নিয়ে পড়াশুনা করাকালীন ১৯৬২ সালে সুনীল স্পেনে যান[৫] ও সেখানে প্রসিদ্ধ ষাঁড়ের লড়াই, তাকে ষাঁড়ের ছবি আঁকতে অনুপ্রাণিত করে।[৪] ১৯৯ সালে আর্ট কলেজে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ঘোড়ার ছবি এঁকে ললিত কলা একাদেমির জাতীয় পুরস্কার পান।[৬] আর্ট কলেজের প্রথাগত শিক্ষার পর তিনি চর্চা করেছেন চিত্রণ-শিল্পকর্ম বা গ্রাফিক আর্ট, ফ্রেস্কো, মোজ়েইক ও চিত্রকলার নানা ধারা। [৭] কয়েক বছর কাটিয়েছেন শিল্পের পীঠস্থান প্যারিসে। তিনি ২০১৫ সালে মারা যান।[৪][৮]
সুনীল ভারত সরকারের বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের তাঁত বিভাগে যোগদান করেন।
তিনি ছুটন্ত ঘোড়ার বল এবং শক্তি দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন , তার কাজগুলিতে নারী-পুরুষ সম্পর্ক, নারী তার যৌন ক্ষমতায়ন এবং তার নিঃসঙ্গতা ঘুরেফিরে এসেছে।[৯] বিশ্ব জুড়ে প্যারিস বিয়েনাল সহ তিনি প্রায় ৮৮টি একক প্রদর্শনী করেন। ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যে তিনি ৭০০০টি ঘোড়ার ছবি আঁকেন। [৫]
তিনি সমাজের সমকালীন শিল্পীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
সুনীল বেশিরভাগ মাধ্যমেই স্বচ্ছন্দ ছিলেন, যদিও তার প্রধান কাজগুলির মাধ্যম ছিল সিল্কের কাপড়ে স্ক্রীনপ্রিন্ট, কাঠকয়লা ও তেল ক্যানভাস। তার শৈলীতে ক্ষমতাশালী একটি গতিশীল প্রতিক্রিয়া পেতে তুলি ও কলমের দ্রুত ব্যবহার রয়েছে। তার শৈলী খুবই মৌলিক, অন্য কোনও শিল্পীর প্রভাব দেখায় না।[১] তার বক্তব্য অনুযায়ী বাস্তবতা সম্পর্কে সঠিক অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য, তার সৃষ্টিতে এটি বোঝাতে চাইতেন যে বিষয়বস্তুটি সম্পর্কে তার একটি সঠিক ধারণা আছে। [৫]