সুভদ্রা | |
---|---|
অন্যান্য নাম | রোচনা,রুচি, ভদ্রা, চিত্রা |
দেবনাগরী | सुभद्रा |
অন্তর্ভুক্তি | দেবী, যোগমায়া, ভুবনেশ্বরী |
গ্রন্থসমূহ | মহাভারত, ভাগবত পুরাণ, ব্রহ্মপুরাণ |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
মাতাপিতা | |
সহোদর | |
সঙ্গী | অর্জুন |
সন্তান | অভিমন্যু(পুত্র)
ভার্গবী(কন্যা) রোচনাগর্ভ(পুত্র) |
রাজবংশ | যদুবংশ – চন্দ্রবংশ |
সুভদ্রা (সংস্কৃত: सुभद्रा) হলেন হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের এবং ভাগবত পুরাণের মতো প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোতে উল্লেখিত একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি কৃষ্ণের ভগিনী, অর্জুনের স্ত্রী(পত্নী) এবং অভিমন্যুর মাতা।[১] সুভদ্রা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণ (জগন্নাথ হিসাবে) এবং বলরাম (বা বলভদ্র) সহ পূজিত তিন দেবতার মধ্যে একজন। বার্ষিক রথযাত্রার একটি রথ তাকে উৎসর্গ করা হয়।
'সু' ও 'ভদ্র' দুটি শব্দের সমন্বয়ে 'সুভদ্রা' শব্দটি গঠিত। অনেক পণ্ডিত এই নামটিকে 'মহিমান্বিত', 'সৌভাগ্যবান', 'অপূর্ব' বা 'শুভ' ভাষায় অনুবাদ করেছেন।[২]
সুভদ্রাকে প্রায়শই বৃষ্ণী দেবী একানংশা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, এবং এইভাবে এটি তার অন্য নাম হিসাবে বিবেচিত হয়।[৫][৬]
কৃষ্ণের পিতা বসুদেবের ঔরসে রোহিণীর গর্ভে তার জন্ম হয়। তাই, তিনি ছিলেন বলরামের সহোদরা এবং কৃষ্ণের বৈমাত্রেয় বোন।
অর্জুন ব্রহ্মচর্যব্রত পালন করে ঘুরতে ঘুরতে দ্বারকায় আসেন। পরে এক উৎসব উপলক্ষে কৃষ্ণের সাথে ইনি রৈবত পর্বতে যান। সেখানে অর্জুনকে যাদবরা সংবর্ধনা দেন। উক্ত অনুষ্ঠানে অর্জুন সুভদ্রাকে দেখে মুগ্ধ হন। অর্জুনের মনোভাব জানতে পেরে কৃষ্ণ এই বিবাহে সাহায্য করার অঙ্গীকার করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সুভদ্রা যখন ঘরে ফিরছিলেন তখন কৃষ্ণের পরামর্শে অর্জুন সুভদ্রাকে অপহরণ করে ইন্দ্রপ্রস্থে নিয়ে আসেন। এতে বলরাম ক্ষুব্ধ হয়ে অর্জুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রার আয়োজন করলে, কৃষ্ণ তাকে নিবৃত্ত করেন। পরে দ্বারকায় সত্যভামার উদ্যোগে মহাসমারোহে অর্জুনের সাথে সুভদ্রার বিবাহ হয়।
অর্জুনের ঔরসে সুভদ্রার গর্ভে অভিমন্যু নামক পুত্রের জন্ম হয়। পাণ্ডবদের বনবাসকালে তিনি অভিমন্যুকে নিয়ে দ্বারকায় পিত্রালয়ে বসবাস করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় তিনি দ্রৌপদীর সাথে পাণ্ডব শিবিরে বসবাস করতেন। মহাপ্রস্থানের সময় পাণ্ডবরা অভিমন্যুর পুত্র (সুভদ্রার পৌত্র) পরীক্ষিতকে রাজ্যাভিষিক্ত করেন এবং সুভদ্রার উপর ধর্মরক্ষার ভার দিয়ে যান।
পরীক্ষিৎ সিংহাসনে বসার পর, স্বর্গে যাওয়ার সময়, যুধিষ্ঠির তার নাতি দ্বারা শাসিত হস্তিনাপুর এবং তার ভাই কৃষ্ণের প্রপৌত্র বজ্রনাভ দ্বারা শাসিত ইন্দ্রপ্রস্থ উভয় রাজ্যকে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার দায়িত্ব দেন। কীভাবে এবং কখন তিনি মারা যান সে সম্পর্কে কোনও নির্দিষ্ট উল্লেখ নেই তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে, দ্রৌপদীর সাথে পাণ্ডবরা স্বর্গে পৌঁছানোর পরে, সুভদ্রা এবং তার পুত্রবধূ (উত্তরা) তাদের বাকি জীবন সন্ন্যাসী হিসাবে থাকার জন্য বনে গিয়েছিলেন।[৭]