ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হার্ডিং আইজাক সেইলর ইয়ং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | লেটন, এসেক্স | ৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১২ ডিসেম্বর ১৯৬৪ রোচফোর্ড, এসেক্স | (বয়স ৮৮)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | সেইলর | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার, আম্পায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক | ২৯ জুন ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৭ জুলাই ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ মে ২০১৯ |
হার্ডিং আইজাক সেইলর ইয়ং (ইংরেজি: Sailor Young; জন্ম: ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ১২ ডিসেম্বর, ১৯৬৪) এসেক্সের লেটনে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করে গেছেন ‘সেইলর’ ডাকনামে পরিচিত সেইলর ইয়ং।
উইকেটে তার বল বেশ বাঁক খেতো। উইজডেনে তার বোলিংকে বিভ্রান্তিপূর্ণ বাঁকরূপে আখ্যায়িত করে।[১] ১৮৯৮ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান ছিল সেইলর ইয়ংয়ের। পেশাদার অল-রাউন্ডার হিসেবে এসেক্সের পক্ষে খেলেন। গুরুত্বহীন ক্রিকেট খেলায় সফলতা লাভের কারণে রয়্যাল নেভি ত্যাগ করে এসেক্সের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। লেটনে জালবদ্ধ স্থানে তার চমৎকার বোলিং সি. ই. গ্রীনকে বিমোহিত করে। এরফলে, ‘সেইলর’ ডাকনামে ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন।
১৮৯৮ সালে মাত্র কয়েকটি খেলায় অংশ নেন। কিন্তু, পরের বছরই প্রারম্ভিক সফলতা লাভ করেন। ১৮৯৯ সালটি সেইলর ইয়ংয়ের স্বর্ণালী মৌসুম ছিল। ৬০৭ রানের পাশাপাশি ২১ গড়ে ১৩৯ উইকেট পান। প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে দুইবার জেন্টলম্যানের বিপক্ষে খেলেন। ১৮৯৯ সালে ওভালের খেলাটিতে ৮১ রান তুলেন। এটিই তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ছিল। শেষ উইকেটে টি. ডব্লিউ. হেওয়ার্ডের সাথে ১৩৫ রান যুক্ত করেন। তবে, ওভালে প্লেয়ার্সের সদ্যস্যরূপে জয়লাভ করা খেলায় তিনি তার ক্রীড়াশৈলীতে দূর্বলতা খুঁজে পান। তাসত্ত্বেও ঐ বছর তিনি ১৩৯ উইকেট নিয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত করেছিল। এছাড়াও, ১৯০০ সালে স্কারবোরায় ১৪১ রানে সাত উইকেট পান।
১৮৯৯ সালে সেইলর ইয়ং দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সদস্যরূপে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ঐ বছর চমৎকার খেলা উপহার দেন। তবে বছরের শুরুতে বিস্ময়করভাবে এসেক্সের পক্ষে তার খেলার মান নিচেরদিকে চলে যায়। ঊননব্বুই উইকেটের বিপরীতে তিনি মাত্র তেতাল্লিশ উইকেট পান। ১৮৯৯ সালে এজবাস্টনে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে খেলায় ১৫৪ রান খরচায় পনেরো উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৮/৫৪ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।
১৯০১ সালে কিছুটা খেলায় উত্তরণ ঘটান। ১৯০২ সালের শুরুতে নমনীয় পিচে কেন্টের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলেন। তাসত্ত্বেও তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ হতে থাকেন। ১৯০৩ সালে মাত্র ৫২ উইকেট পান। এরফলে ঐ মৌসুম শেষে মাংসপেশীতে টান পড়ায় নিয়মিতভাবে ক্রিকেট খেলা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে যান। ১৯০৭ সালে লেটনে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত একমাত্র হ্যাট্রিক করেছিলেন। ঐ ইনিংসে তিনি ৪/৬ পান।
সফরকারী শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে মাত্র ৭৪ রান খরচায় এগারো উইকেট দখল করে সকলের নজর কারেন। ফলে এসেক্স দল বিস্ময়কারভাবে ১২৬ রানের জয় তুলে নেয়। প্রথম ইনিংসে ৪/৪২ পান। টাইমসে তার বোলিং সম্পর্কে বলা হয় যে, দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৭/৩২ লাভ করেন। তার বোলিং অস্ট্রেলীয়রা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারছিল না। পিচে বড় ধরনের পেস আক্রমণ চালিয়েছেন ও তার বাহু ছয় থেকে আট ইঞ্চি পর্যন্ত বাহু বাঁকিয়ে বল ফেলছিলেন।[১] ফলে সফরকারী দল মাত্র ৮১ রানে গুটিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ সফরে জে. ডার্লিংয়ের দলটি তিনটি বিপর্যয়কর ফলাফলের এটি অন্যতম ছিল। অফ-স্ট্যাম্প বরাবর বোলিং করেছিলেন। প্রচণ্ড গরমে যখন বেশ রান উঠছিল তখন তিনি অত্যন্ত ভালোমানের বোলিং করে গেছেন। কেউবা তাকে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।[২]
১৮৯৯ সালের গ্রীষ্মে ডব্লিউ. জি. গ্রেস তার সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন। ঐ মৌসুমে দুইটি টেস্টে অংশগ্রহণের জন্যে তাকে ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইয়ং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে দুই টেস্ট খেলেন। প্রত্যেকটিতেই তিনি ছয়টি করে উইকেট পেয়েছিলেন। সিরিজ শেষে তিনি ইংল্যান্ডের বোলিং গড়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেন। ২১.৮৩ গড়ে বারো উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু, ওভালে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে ত্রুটিপূর্ণ খেলার কারণে ঐ সিরিজের শেষ খেলায় তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। এরপর আর তাকে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়নি। এরপরও এসেক্সের পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
১৯১২ সাল পর্যন্ত এমসিসির মাঠকর্মী দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তবে, খুব কমই বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন। ১৯১০-১১ মৌসুমে এমসিসি দলের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২১ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যায়ে ১৯২৪ ও ১৯২৬ সালে দুইটি টেস্ট খেলা পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ২৮ জুন, ১৯২৪ তারিখে লর্ডসে ও ১৪ আগস্ট, ১৯২৬ তারিখে ওভালে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্ট খেলায় আম্পায়ারিত্ব করেন। শেষ বয়সে বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন।
১২ ডিসেম্বর, ১৯৬৪ তারিখে ৮৮ বছর বয়সে এসেক্সের রোচফোর্ড এলাকার হাসপাতালে সেইলর ইয়ংয়ের দেহাবসান ঘটে।