সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক | |
---|---|
উপাধি | মাওলানা, পীর সাহেব চরমোনাই |
জন্ম | ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ/ ১৩৩৩ হিজরী/ ১৩১২ বঙ্গাব্দ |
মৃত্যু | ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ চরমোনাই, বরিশাল, বাংলাদেশ [ ৬২ বছর ] |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
জাতিভুক্ত | বাঙালি |
অঞ্চল | বাংলাদেশ |
মাজহাব | হানাফি |
শাখা | মাতুরিদি |
আন্দোলন | দেওবন্দী |
মূল আগ্রহ | সুফিবাদ |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি |
সুফি তরিকা | কাদেরিয়া চিশতি সোহরাওয়ার্দিয়া নকশবন্দিয়া |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন
|
মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক (১৯১৫ – ১৯৭৭) ছিলেন বাংলাদেশের একজন পীর এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি পীরসাহেব চরমোনাই নামে পরিচিত এবং তিনি চরমোনাইয়ের প্রথম পীর। দ্বিতীয় পীর তার সন্তান মাওলানা ফজলুল করীমের মৃত্যুর পর তিনি অনুসারীদের মাঝে 'দাদা হুজুর' নামে অভিহিত হন।[১]
সৈয়দ মুহম্মদ ইসহাক ১৯১৫ সালে (হিজরী ১৩৩৩; বঙ্গাব্দ ১৩১২) বরিশাল শহরের কীর্তনখোলা নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত পশুরীকাঠি গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার বাবা সৈয়দ আমজদ আলী ছিলেন সৈয়দ ওমর আলীর ছেলে।[৩] তার পূর্বপুরুষ (দাদার দাদা) সৈয়দ আলী আকবর বগদাদ শহর হতে বাংলায় হিজরতকরেছিলেন,[৪] অবশেষে পশুরীকাঠি গাঁয়ে বসবাস স্থাপন করে। আলী আকবরের ছোট ভাই, যিনি সৈয়দ আলী আসগর নামে পরিচিত, কীর্তনখোলা নদীর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত লাকটিয়া গ্রামের সৈয়দ খান্দানের পূর্বপুরুষ।[৫]
তিনি কুরআন-হাদীসের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন তার চাচাত মামা মাওলানা সৈয়দ মুহম্মদ আব্দুল জব্বারের (ওরফে আহসানুল্লাহ) কাছে, যার নামানুসারে চরমোনাইয়ের অপর নাম আহসানাবাদ রাখা হয়েছে। এরপর তিনি উজানীর ক্বারী মুহম্মদ ইব্রাহীমের কাছে ক্বিরআত-সহ কুরআন শরীফ শিক্ষা লাভ করেন। তার কাছে সাত ক্বিরআত সমাপ্ত করে তিনি ভোলা দারুল হাদীস আলিয়া মাদরাসা থেকে জামাআতে উলা পাশ করেন। [২] অতঃপর তিনি ভারতের বিখ্যাত ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
তার অসংখ্য অনুসারী রয়েছে; তাদের মধ্যে: মাওলানা ফজলুল করীম, মুহাম্মদ আবুল বাশার (শাহতলীর পীর), মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম সিদ্দিকী (মানিকগঞ্জের পীর) প্রমুখ প্রধান। [২]
মাওলানা ইসহাক বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে ছিলেন। তিনি স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিল ও ক্যাপ্টেন আবদুল লতীফ এবং আরও অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা তার কাছে আসতেন, কথা বলতেন, পরামর্শ ও যুদ্ধে সাফল্য লাভের জন্যে দুআ নিতেন। [৬]
তার প্রতিষ্ঠিত চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া আহসনাবাদ আলিয়ায়েই মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি ছিল; এ মাদরাসায় তারা থাকতেন, যুদ্ধ থেকে ফিরে অবস্থান নিতেন। মাদরাসার পক্ষ থেকে দুইটি বড় রুম মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল এবং মাদরাসার পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আপ্যায়নে ব্যবস্থা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় নয় মাস বরিশালের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তারা এই মাদরাসায় সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। [৬]
সাইয়েদ ইসহাক বিভিন্ন বিষয়ে ২৭টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। [৭] এগুলো হলোঃ
ইসহাকের তিন স্ত্রী ছিলো; তারা হলেন: সাইয়েদা রাবেয়া খাতুন (২ পুত্র ৩ কন্যা; মাওলানা ফজলুল করীম তাদের মধ্যে অন্যতম), সাইয়েদা (১ পুত্র ৩ কন্যা) এবং আমেনা বেগম ৩ পুত্র ১ কন্যা)[২]
১৯৭৭ সালে (১৩৮০ বঙ্গাব্দ; ১৩৯৬ হিজরী) ৬২ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু বরণ করেন এবং চরমোনাই এলাকাতে তাকে দাফন করা হয়।[২]