প্রধান কার্যালয় | করাচী, পাকিস্তান |
---|---|
প্রতিষ্ঠিত | ১ জুলাই ১৯৪৮ |
মালিকানা | ১০০% রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন[১] |
গভর্নর | রেজা বাকির |
এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক | পাকিস্তান |
মুদ্রা | পাকিস্তানি রুপি (₨) (PKR) |
সঞ্চয় | $১৬.১০৬ বিলিয়ন (৯ এপ্রিল ২০২১)[২]
|
সঞ্চয়ের জন্য প্রয়োজনীয়তা | ৪.০০% [৩] |
ঋণের হার | ৭.০০%[৪] |
ওয়েবসাইট | www |
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (সংক্ষেপিত এসবিপি) (ইংরেজি: State Bank of Pakistan) (উর্দু: بینک دَولتِ پاکِستان) হচ্ছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটি 'স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান আদেশ, ১৯৪৮' দ্বারা ১৯৪৮ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর এবং সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচীতে অবস্থিত। ব্যাংকটি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[৫]
স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত, ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকাকালীন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সমগ্র অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কাজ করতো। ১৯৪৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ সরকার নিযুক্ত কমিশন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ দুই দেশের মধ্যে ৩০ শতাংশ পাকিস্তান ও ৭০ শতাংশ ভারত হারে ভাগ করে দেয়।[৬]
১৯৪৮ সালের মে মাসেই মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ (পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা) স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯৪৮ সালের জুন মাসেই উক্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয় এবং ঐ বছরের ১ জুলাই স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে।
'স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান আদেশ, ১৯৪৮' এর অধীনে এসবিপি-কে পাকিস্তানের আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার লক্ষ্যে মুদ্রা ছাপানো, বাজারে প্রবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ, ঋণ ব্যবস্থা পরিচালনা এবং বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো।
১৯৫৬ সালে 'স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান আইন' পাস হয় যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব ও তদারকির আওতা বাড়ানো হয়। এই আইনের মাধ্যমে দেশের মুদ্রানীতি ও ঋণ ব্যবস্থা প্রণয়ন ও তদারকির দায়িত্ব এসবিপি উপর দেয়া হয়। ১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আর্থিক খাতের সংস্কারকালে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়।[৭]
১৯৯৭ সালের ২১ শে জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও বেশি স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসন দেয়ার উদ্দেশ্যে 'স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান আইন (১৯৫৬)', 'ব্যাংকিং কোম্পানি অধ্যাদেশ (১৯৬২)', এবং ব্যাংক জাতীয়করণ আইন (১৯৭৮) সংশোধনী অধ্যাদেশ জারি করে (যেগুলো ১৯৯৭ সালের মে মাসে সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এই তিনটি সংশোধনীর ফলে দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণ, স্বাধীন মুদ্রানীতি পরিচালনা এবং সকারারী ঋণের সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান একচেটিয়া কর্তৃত্ব লাভ করে।[৮]
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা 'আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জোটের' শীর্ষস্থানীয় সদস্য এবং এটি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নীতি প্রচারে সক্রিয় ভুমিকা পালন করে। ২০১৯ সালে এসবিপি পাকিস্তানে একটি আধুনিক ডিজিটাল পেমেন্ট অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় পেমেন্ট সিস্টেমস কৌশল চালু করে।[৯]
অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মত স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানও সামষ্টিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে নানাবিধ ব্যাংকিং এবং উন্নয়নমূলক কার্য সম্পাদন করে। এই ব্যাংকের কার্যাবলীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ[১০]
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অন্যান্য সেবাকার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেঃ
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি) দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে তাদের নগদ মুদ্রা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যাবলী যেমন- নগদ রুপির শ্রেণিবিভাজন, প্রমাণীকরণ ও প্যাকিং আউটসোর্সের মাধ্যমে করার অনুমতি দিয়েছে।[১১]
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের প্রধান কর্মকর্তা হল গভর্নর।ব্যাংকটির বর্তমান গভর্নর রেজা বাকির যিনি ২০১৯ সালের ৪ মে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।[১২] ব্যাংকের গভর্নরের তালিকা নিচে দেয়া হলঃ [১৩][১৪]
ক্রম | নাম | মেয়াদকাল | |
---|---|---|---|
দায়িত্ব গ্রহণ | দায়িত্ব হস্তান্তর | ||
১ | জাহিদ হুসেন | ১৯৪৮ | ১৯৫৩ |
২ | আবদুল কাদির | ১৯৫৩ | ১৯৬০ |
৩ | সুজাত আলী হাসনী | ১৯৬০ | ১৯৬৭ |
৪ | মাহবুবুর রাশিদ | ১৯৬৭ | ১৯৭১ |
৫ | শাহকুরউল্লাহ দুরানী | ১৯৭১ (১৭৪ দিন) | |
৬ | গোলাম ইসহাক খান | ১৯৭১ | ১৯৭৫ |
৭ | এস ওসমান আলী | ১৯৭৫ | ১৯৭৮ |
৮ | আফতাব গোলাম নবী কাজী | ১৯৭৮ | ১৯৮৬ |
৯ | ভাসিম অওন জাফেরে | ১৯৮৬ | ১৯৮৮ |
১০ | ইমতিয়াজ আলম হানফি | ১৯৮৮ | ১৯৮৯ |
১১ | কাসিম পারেক | ১৯৮৯ | ১৯৯০ |
(১০) | ইমতিয়াজ আলম হানফি | ১৯৯০ | ১৯৯৩ |
১২ | মুহাম্মদ ইয়াকুব | ১৯৯৩ | ১৯৯৯ |
১৩ | ইশরাত হোসেন | ১৯৯৯ | ২০০৫ |
১৪ | শামশাদ আক্তার | ২০০৫ | ২০০৯ |
১৫ | সেলিম রাজা | ২০০৯ | ২০১০ |
১৬ | শহীদ হাফিজ করদার | ২০১০ | ২০১১ |
১৭ | ইয়াসিন আনোয়ার | ২০১১ | ২০১৪ |
১৮ | আশরাফ মাহমুদ ওয়াথরা | ২০১৪ | ২০১৭ |
১৯ | তারিক বাজওয়া | ২০১৭ | ২০১৯ |
২০ | রেজা বাকির | ২০১৯ | বর্তমান |
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের পরিচালনা পর্ষদ (পূর্বে কেন্দ্রীয় বোর্ড নামে পরিচিত) দশ জন সদস্য নিয়ে গঠিত: গভর্নর (পর্ষদের চেয়ারম্যান), সচিব (অর্থ মন্ত্রণালয়, পাকিস্তান সরকার) এবং ফেডারেল সরকার মনোনীত আট প্রদেশের প্রত্যেকটি থেকে একজন পরিচালক। গভর্নর ও পরিচালকদের তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এবং সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে নিয়োগ পেতে পারে।[১৫]
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান ২০০৪ সালে 'স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারী' প্রতিষ্ঠা করে যেখানে পাকিস্তানি রুপির বিভিন্ন সংগ্রহসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক আলামত প্রদর্শন করা হয়। [১৬][১৭]
== আরও দেখুন
==