স্বামী সত্যানন্দ পুরী

স্বামী সত্যানন্দ পুরী
জন্ম
প্রফুল্ল কুমার সেন

১৯০২
মৃত্যু১১ মার্চ ১৯৪২(1942-03-11) (বয়স ৩৯–৪০)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠানঅনুশীলন সমিতি
পরিচিতির কারণ 
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

স্বামী সত্যানন্দ পুরী (১৯০২ - ১১ মার্চ ১৯৪২), (যার পূর্ব নাম প্রফুল্ল কুমার সেন) ছিলেন একজন ভারতীয় বিপ্লবী এবং দার্শনিক।[]

জীবনী

[সম্পাদনা]

প্রফুল্ল কুমার সেন অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। বাল্যকালেই তিনি ফরিদপুরের অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন। পরে বেলুড়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত হন। প্রফুল্ল কুমার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্য দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন। সনাতন ধর্ম ও জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রচারের যুক্ত হন। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংস্পর্শ আসেন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, তিনি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে থাইল্যান্ড গমন করেন। তার দার্শনিক রচনাসমূহ ও বক্তৃতা থাইল্যান্ডের জনগণ এবং সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়ের প্রশংসা লাভ করে। তিনি স্বামী সত্যানন্দ পুরী নামে পরিচিত হন। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি সেখানে থাই-ভারত সাংস্কৃতিক লজ প্রতিষ্ঠা করেন[] থাইল্যান্ডে সত্যানন্দ চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন এবং তিনি ডক্টরেট উপাধি পান।[] ছয় মাসের মধ্যেই তিনি থাই ভাষা আয়ত্ত করেন। রামায়ণ, মহাত্মা গান্ধীর জীবনী, ভারতীয় দর্শনের বেশ কিছু রচনা এবং জীবনী অনুবাদ করেন। সাহিত্যকর্মে তার কুড়িটিরও বেশী গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।[]

বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ

[সম্পাদনা]

১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে স্বামী সত্যানন্দের গঠিত ভারতীয় জাতীয় কাউন্সিল, জ্ঞানী প্রীতম সিং ধিলনের ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের সঙ্গে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের লক্ষ্যে সশস্ত্রভাবে ভারতীয় প্রতিরোধকে সমর্থন করার জন্য জাপানিদের উদ্দীপিত করতে সহায়ক হয়েছিল। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর সঙ্গে যোগ দিয়ে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গঠনে সাহায্য করেন।[] সর্দার প্রীতম সিং ধিলন এবং স্বামী সত্যানন্দ পুরীই প্রথম ইওয়াইচি ফুজিওয়ারা এবং ফুজিওয়ারা কিকানের সঙ্গে জাপানী নীতির বিষয়ে আলোচনা করেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি আদায়ে ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের ভিত্তি তৈরি হয়। []

জীবনাবসান

[সম্পাদনা]

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে সর্দার প্রীতম সিং ধিলন ও স্বামী সত্যানন্দ পুরী বিমানযোগে টোকিও সম্মেলনের পথে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।[]

উত্তরাধিকার

[সম্পাদনা]

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে থাই-ভারত কালচারাল লজ স্বামী সত্যানন্দ পুরীর স্মৃতিতে স্বামী সত্যানন্দ পুরী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে। ফাউন্ডেশনের রেফারেন্স লাইব্রেরি-এসএসপিএফ লাইব্রেরি টির সংগ্রহে রয়েছে বহু পুরানো এবং বিরল ভারতীয় গ্রন্থসম্ভার। ফাউন্ডেশনটি ভারতীয় সংস্কৃতি, বিশেষ করে রামায়ণের উপর নানা কাজ প্রচারের সাথে জড়িত।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৫৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. Kratoska 2002, পৃ. 173–175
  3. Indian National Army in East Asia. Hindustan Times ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ জুলাই ২০০৭ তারিখে