হংসগীতা (সংস্কৃত: हंसगीता, আইএএসটি: Haṃsagītā) বা উদ্ধবগীতা হল শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবী থেকে তার আসন্ন বিদায়ের আগে উদ্ধবকে সান্ত্বনা দেয়ার উদ্দেশ্যে প্ৰদান করা বাণীসমূহ। ক্ষত্রিয় হিসেবে জন্ম ও পরে যদুকুলে বড় হওয়া শ্রীকৃষ্ণের অনুপস্থিতিতে যদুবংশের আসন্ন বিনাশের ভবিষ্যত দেখার পরে উদ্ধবের আবেগ-বিহ্বল ও বিভ্ৰান্তিকর পরিস্থিতিতে কৃষ্ণ প্ৰদত্ত এই উপদেশপূৰ্ণ বাণীসমূহে এই গীতার সূচনা হয়েছে।[১]
উদ্ধব শ্রীকৃষ্ণের একান্ত ভক্ত ও তার পরম সখা হিসেবে প্ৰসিদ্ধ ছিলেন। কিন্তু উদ্ধবেব পক্ষেও বোধগম্য ছিল না কেন শ্রীকৃষ্ণের পক্ষে যদুকুলের আসন্ন পতন রোধ করা সম্ভব নয়। সৃষ্টিকৰ্তা ব্ৰহ্মা ও স্বৰ্গের দেবগণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ধরাতে তার দায়-দায়িত্ব সমাপনের পর স্বৰ্গে পুন আগমনের জন্য অনুনয় বিনয় করেছিল।
শ্রীকৃষ্ণ তাকে যাদবগণের বিনাশের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেণ, "মহাসাগরের তীরে ক্ষমতা, বীরত্ব ও সৌভাগ্যে বলীয়ান সমগ্ৰ বিশ্বকে অধিকার করতে আগ্রহী সুপ্ৰসিদ্ধ যদুবংশকে আমি সংযমী করে রেখেছিলাম। যদি বৃহৎ যদুকুলের বিনাশের আগেই আমি এই ধরা ছেড়ে চলে যাই, তবে উদ্ধত যদুবংশের হাতে সমগ্ৰ মানবজাতি নিঃশেষ হয়ে যাবে "। এই কথাতে অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে উদ্ধব তখন শ্রীকৃষ্ণের সাথে পৃথিবী ছেড়ে যেতে চাওয়ার মিনতি করতে লাগলেন। এর ফলশ্ৰুতিতে শ্রীকৃষ্ণ উদ্ধবকে বোঝানোর জন্য উদ্ধব গীতার উদ্ভব করলেন।
উদ্ধবগীতা ও হংসগীতা নামগুলি জনপ্রিয়ভাবে বিনিময়যোগ্য কিন্তু হংসগীতাও বিশেষভাবে নির্দেশ করে (১১.১৩-১৬) উদ্ধবগীতা এবং ভাগবত পুরাণের অংশ।