হাতিরঝিল

হাতিরঝিল
হাতিরঝিলের দ্বিতীয় সেতু
হাতিরঝিলের দ্বিতীয় সেতু
মানচিত্র
হাতিরঝিল ও এর আশেপাশের অঞ্চলের মানচিত্র
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৫′৪৬″ উত্তর ৯০°২৪′৩৭″ পূর্ব / ২৩.৭৬২৭° উত্তর ৯০.৪১০৪° পূর্ব / 23.7627; 90.4104
দেশবাংলাদেশ
উদ্বোধন২ জানুয়ারি ২০১৩
প্রতিষ্ঠাতাশেখ হাসিনা
আয়তন
 • মোট১২২ হেক্টর (৩০২ একর)
হাতিরঝিল সুরেল নৃত্যের ঝর্ণা, বাংলাদেশে প্রথম নাচের পানির ঝরনা।

হাতিরঝিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি এলাকা যা জনসাধারণের চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়। ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি এ প্রকল্প এলাকাটি উদ্বোধন ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়। এ প্রকল্প চালুর ফলে ঢাকার তেজগাঁও, গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, মৌচাক, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও মগবাজার এলাকার বাসিন্দাসহ এ পথ দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। হাতিরঝিল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর 'স্পেশাল ওয়ার্কস অরগানাইজেশন'। এ প্রকল্পের অন্যতম মূল লক্ষ্য হচ্ছে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, জলাবদ্ধতা ও বন্যা প্রতিরোধ, ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজধানীর যানজট নিরসন এবং শ্রীবৃদ্ধি করা। এই প্রকল্পের স্থপতি ছিলেন এহসান খান[][]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ভাওয়াল রাজ্যের হাতিরঝিলসহ তেজগাঁও এলাকায় অনেক ভূসম্পত্তি ছিল। এস্টেটের হাতির পাল এখানকার ঝিলে স্নান করতে বা পানি খেতে বিচরণ করত বলে কালের পরিক্রমায় এর নাম হাতিরঝিল হয়।[][]

উন্নয়ন

[সম্পাদনা]

হাতিরঝিল প্রকল্পটি এক হাজার ৯৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৩০২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।[] এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা। অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে রয়েছে রাজউকের ৪৬ শতাংশ, 'কোর্ট অব ওয়াক্স'-এর ৮১ একর, পাবলিক ল্যান্ড ১৪১ একর ও বিটিভির ১ একর। প্রকল্পটি ২০০৭ সালের অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। ৩ বছর মেয়াদের এ প্রকল্পটি প্রথমে ২০১০ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এর কাজ শুরু হয় ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। পরবর্তীতে প্রকল্পটি সংশোধন করে আরো দেড় বছর সময় ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়। প্রকল্প ব্যয় ১ হাজার ৯৭১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মধ্যে বাস্তবায়নকারী সংস্থা রাজউকের ১ হাজার ১১৩ কোটি ৭ লাখ, এলজিইডির ২৭৬ কোটি এবং ঢাকা ওয়াসার ৮৬ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে।[]

ঢাকা মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগের লক্ষ্যে হাতিরঝিল প্রকল্পে ৮ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেস সড়ক নির্মাণ, স্থানীয় জনগণের যোগাযোগ সহজ করার জন্য ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্ভিস রোড, ৪৭৭ দশমিক ২৫ মিটার দীর্ঘ চারটি সেতু নির্মাণ, পথচারী ও ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে যথাক্রমে ৮ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাত এবং ৯ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ হ্রদের পাশে হাঁটারপথ নির্মাণ, ২৬০ মিটার দীর্ঘ তিনটি ভায়াডাক্ট নির্মাণ এবং প্রকল্প এলাকা যানজটমুুক্ত রাখতে ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওভারপাস, ইন্টারসেকশন ও রাউন্ডঅ্যাবাউট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পে ১০ দশমিক ৪৫ কোটি ঘনফুট বর্জ্য অপসারণ, ১০ দশমিক ৪০ কিমি মেইন ডাইভারশন স্যুয়ারেজ লাইন স্থাপন করে প্রকল্প এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করবে।[]

পুরস্কার

[সম্পাদনা]

হাতিরঝিল প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের (এডরা) ‘পরিসর পরিকল্পনা’ ক্যাটাগরিতে ‘গ্রেট প্লেস অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ লাভ করে। নগর পরিবেশ আর গণপরিসর সৃষ্টিশীলতার ক্ষেত্রে এটি একটি আন্তর্জাতিক সম্মাননা[]

স্থিরচিত্র

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "The Unintentional Wonderland"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। 
  2. https://www.showcase.com.bd/inside-story/architect-ehsan-khan/
  3. "হাতিরঝিলে বাস চালু"প্রথম আলো 
  4. রহমান, রাসয়াত। "হাতিরপুলের হাতিগুলো"bangla.bdnews24.com। ২০১৯-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৮ 
  5. "বিডিনিউজ ২৪ ডট কম"। ৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৩ 
  6. "দৈনিক ইত্তেফাক"। ৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৩ 
  7. "দৈনিক কালের কন্ঠ"। ১৭ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৩ 
  8. যুক্তরাষ্ট্রের ‘গ্রেট প্লেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল হাতিরঝিল প্রকল্প, প্রথম আলো, ১০ মার্চ ২০২০