হানা শিগুলা | |
---|---|
জার্মান: Hanna Schygulla | |
২০১৩ সালে শিগুলা | |
জন্ম | ক্যোনিগশ্যুট, সিলেসিয়া (বর্তমান চর্জো, পোল্যান্ড) | ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৩
পেশা | অভিনেত্রী, গায়িকা |
কর্মজীবন | ১৯৬৮-বর্তমান |
হানা শিগুলা (জার্মান: [ˈhana ʃyˈɡʊla] (; জন্ম: ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৩) হলেন একজন জার্মান অভিনেত্রী ও চানসন গায়িকা। )[১] তাকে নব্য জার্মান চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৬৫ সালের পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন মঞ্চ ও চলচ্চিত্র পরিচালক রাইনার ভের্নার ফাসবিন্ডারের পরিচালনায় কাজ করেছেন।[২] ১৯৭৯ সালে তিনি ফাসবিন্ডারের দ্য ম্যারিজ অব মারিয়া ব্রাউন ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বার্লিনালে থেকে রৌপ্য ভল্লুক এবং ১৯৮৩ সালে মার্কো ফেরারি দ্য স্টোরি অব পিয়েরা ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার অর্জন করেন।
শিগুলা ১৯৪৩ সালের ২৫শে ডিসেম্বর সিলেসিয়ার ক্যোনিগশ্যুটে (বর্তমান চর্জো, পোল্যান্ড) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইয়োসেফ শিগুলা এবং মাতা আন্টোনি এমৎসিক দুজনেই জার্মান ছিলেন।[৩] শিগুলা ও এমৎসিক দুটি নামের উৎপত্তিস্থল পোল্যান্ড/সিলেসিয়া। তার পিতা পেশায় একজন কাঠের ব্যবসায়ী, যিনি জার্মান সেনাবাহিনীতে পদাতিক হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এবং ইতালিতে মার্কিন সেনাবাহিনী কর্তৃক ধৃত হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তাকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটকে রাখা হয়েছিল। ১৯৪৫ সালে কমিউনিস্ট পোল্যান্ড কর্তৃক জার্মানভাষী লোকদের বিতাড়নের পর শিগুলা ও তার মাতা উদ্বাস্তু হিসেবে মিউনিখে আগমন করেন।[৩] ১৯৬০-এর দশকে শিগুলা রোমানিক ভাষা ও জার্মান শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন, পাশাপাশি মিউনিখে অবসর সময়ে অভিনয়ের তালিম নিতেন।
অভিনয় জীবন শুরুর পর তিনি পরিচালক রাইনার ভের্নার ফাসবিন্ডারের পরিচালনায় কাজ করে পরিচিতি অর্জন করেন। থিওডোর ফন্টানার জার্মান উপন্যাস অবলম্বনে এফি ব্রিয়েস্ট (১৯৭৪) নির্মাণকালীন চরিত্রের উপস্থাপনা নিয়ে ফাসবিন্ডার ও শিগুলার মধ্যে মতবিরোধ হয়।[৪] এছাড়া এই ছবির নির্মাণকালে শিগুলা কম বেতনের জন্য ফাসবিন্ডারকে অভিযুক্ত করেন। ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে ছবিটির চিত্রায়ন হয় এবং ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়। এতে তাকে একজন মেজরের সাথে সম্পর্কের কারণে তার মা-সহ সমাজের নিন্দা সহ্য করা এক নারী চরিত্রে দেখা যায়।[৪] এই ছবিতে কাজ করার পর তারা পাঁচ বছর একসাথে কাজ করেন নি।[৪] ১৯৭৮ সালে দ্য ম্যারিজ অব মারিয়া ব্রাউন ছবিতে তারা পুনরায় একত্রে কাজ করেন। মারিয়া ব্রাউন রুশ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসতে এক জার্মান সৈনিককে বিয়ে করেন ও পরে তাদের মিলন, বিচ্ছেদ ও আবার মিলন দেখানো হয়। দ্য গার্ডিয়ান-এর ডেরেক ম্যালকম তার "আত্মবিশ্বাস, স্বাধীনচেতা ও দক্ষতার সাথে টিকিয়া থাকা' নারী চরিত্রের প্রশংসা করেন।[৫] ছবিটি ২৯তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং শিগুলা এই ছবিতে অভিনয়র জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক অর্জন করেন।[৬] ১৯৮০ সালে তিনি ফাসবিন্ডারে মিনি ধারাবাহিক বার্লিন আলেকজান্ডারপ্লাৎজ-এ অভিনয় করেন।[২]
১৯৮১ সালে শিগুলা ব্রুনো গানৎসের সাথে ভোলকার শ্ল্যোনডর্ফের সার্কেল অব ডিসিট ছবিতে এবং পরের বছর ইজাবেল উপেরের সাথে জঁ-লুক গদারের প্যাশন ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৮৩ সালে মার্কো ফেরারি দ্য স্টোরি অব পিয়েরা ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি ১৫তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন।[৭]
২০০৭ সালে তিনি আনতালিয়া গোল্ডেন অরেঞ্জ চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার অর্জন করেন এবং ২০১০ সালে বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সম্মানসূচক স্বর্ণ ভল্লুক অর্জন করেন। তিনি আলেকজান্ডার সকুরভ পরিচালিত রুশ ভাষার ফাউস্ট (২০১১) সেদ্রিক কান পরিচালিত ফরাসি নাট্য চলচ্চিত্র লা প্রিয়ের (২০১৮) এবং ইয়োর্গোস লান্থিমোস পরিচালিত পুওর থিংস (২০২৩)-এ অভিনয় করেন।