স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি | |||
---|---|---|---|
অবস্থান | হেডিংলি, লিডস | ||
দেশ | ইংল্যান্ড | ||
স্থানাঙ্ক | ৫৩°৪৯′৩.৫৮″ উত্তর ১°৩৪′৫৫.১২″ পশ্চিম / ৫৩.৮১৭৬৬১১° উত্তর ১.৫৮১৯৭৭৮° পশ্চিম | ||
প্রতিষ্ঠা | ১৮৯০ | ||
ধারণক্ষমতা | ১৮,৩৫০ | ||
স্বত্ত্বাধিকারী | ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | ||
প্রান্তসমূহ | |||
কির্কস্টল লেন এন্ড ফুটবল স্ট্যান্ড এন্ড | |||
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য | |||
প্রথম পুরুষ টেস্ট | ২৯ জুন - ১ জুলাই ১৮৯৯: ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট | ১-৩ জুন ২০১৮: ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান | ||
প্রথম পুরুষ ওডিআই | ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩: ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই | ১৭ জুলাই ২০১৮: ইংল্যান্ড বনাম ভারত | ||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||
| |||
১৭ জুলাই ২০১৮ অনুযায়ী উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম |
হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ড (ইংরেজি: Headingley Cricket Ground) ইংল্যান্ডের লিডসে অবস্থিত হেডিংলি স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের ক্রিকেট মাঠ। সচরাচর, সংক্ষেপে এ স্টেডিয়ামকে হেডিংলি নামে ডাকা হয়। সম্প্রচারস্বত্ত্বের কারণে এটি এমারেল্ড হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ড নামে পরিচিতি পাচ্ছে। প্রধান স্ট্যান্ডের সাথে হেডিংলি রাগবি স্টেডিয়াম সংযুক্ত রয়েছে। ১৮৯৯ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হচ্ছে ও এর দর্শক ধারণ ক্ষমতা ১৮,৩৫০জন।
১৯০২ সালে ইয়র্কশায়ার দল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া একাদশকে পাঁচ উইকেটে পরাভূত করেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে জর্জ হার্বার্ট হার্স্ট ও স্ট্যানলি জ্যাকসন - উভয়ে পাঁচটি করে উইকেট নিয়ে সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৩ রানে গুটিয়ে যায়।
১৯৩২ সালে ইয়র্কশায়ারের সদস্যরূপে হেডলি ভেরিটি প্রতিপক্ষীয় নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ১০/১০ পেয়েছিলেন। এটিই অদ্যাবধি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেরা বোলিং পরিসংখ্যানরূপে বিবেচিত হয়ে আসেছ। এছাড়াও, ১৯৩১ সালে এ মাঠে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে সবগুলো উইকেট লাভের নজির রয়েছে তার।
১৭ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে ইয়র্কশায়ার ভাইকিংস ইংরেজ ঘরোয়া ক্রিকেটে দলীয় সর্বোচ্চ ২৬০/৪ তুলে। ঐ খেলায় অ্যাডাম লিথ ইংরেজ টি২০ ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৬১ রান করেছিলেন।
১৯৩০ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলীয় তারকা খেলোয়াড় ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান প্রথম দিনেই ৩০৯ রান সংগ্রহ করে ৩৩৪ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলীয়রা হেডিংলিতে পরবর্তী টেস্টে খেলতে আসলে তিনি ৩০৪ রান তুলেছিলেন।
১৯৪৮ সালের অ্যাশেজ সিরিজের শেষ দিনে অস্ট্রেলীয়রা ৪০৪/৩ তুলে ইংল্যান্ডকে পরাভূত করেছিল। আর্থার মরিস ১৮২ ও ডন ব্র্যাডম্যান ১৭৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১৯৬৫ সালে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে জন এডরিচ ৫৩টি চার ও ৫টি ছক্কা সহযোগে ৩১০ রান করে অপরাজিত থাকেন। তবে, ইংরেজ অধিনায়ক এম. জে. কে. স্মিথ ইনিংস ঘোষণা করলে গ্যারি সোবার্সের অপরাজিত ৩৬৫ রানের টেস্ট রেকর্ডটি অম্লান রয়ে যায়। তবে, ইংল্যান্ড দল ইনিংস ও ১৮৭ রানে জয়ী হয়েছিল।[১]
১৯৭৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট চলাকালে ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার প্রধান মাঠ কর্মকর্তা জর্জ কথ্রে পিচে গর্তসহ উইকেটের এক প্রান্তে তৈলাক্ত পদার্থ পড়ে থাকতে দেখতে পান। পরে জানা যায় যে, জর্জ ডেভিসের মুক্তির দাবীতে আন্দোলনকারীরা পিচে গর্ত করে ও তেল ঢেলে দেয়। ফলে, খেলাটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয় ও ড্রয়ে পরিণত হয়। ঐ খেলায় ইংল্যান্ডের জয়ের সমূহ সম্ভাবনা ছিল ও সিরিজে ফিরে আসতে পারতো।[২]
১৯৭৭ সালের অ্যাশেজ টেস্টে জিওফ বয়কট তার নিজস্ব শততম প্রথম-শ্রেণীর শতক হাঁকান। চারদিন পর ঐ খেলায় ইংল্যান্ড দল জয় পায়। পাশাপাশি সিরিজ জয় করে অ্যাশেজ করায়ত্ত্ব করে।
১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড দল ফলো-অনের কবলে পড়ে। তবে, ইয়ান বোথামের অপরাজিত ১৪৯ রান ও পরবর্তীতে বব উইলিস ৮/৪৩ পেলে ইংল্যান্ড দল নাটকীয়ভাবে ১৮ রানে জয় পায়। অস্ট্রেলিয়া দলের দুই সদস্য ৫০০-১ ব্যবধানে বাজী ধরেছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ফলো-অনে থাকার পরও জয়ের ঘটনা এটি। ২০০১ সালের পূর্ব-পর্যন্ত এ ঘটনা আর ঘটেনি।[৩]
১৯৯১ সালে গ্রাহাম গুচের অপরাজিত ১৫৪ রানের কল্যাণে ইংল্যান্ড দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পায়। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সংগৃহীত ২৫২ রানের মধ্যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। এ পর্যায়ে ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোস ও কোর্টনি ওয়ালসের বোলিং আক্রমণ সামাল দিয়েছিলেন গ্রাহাম গুচ।
২০০০ সালে ইংল্যান্ড দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ৬১ রানে গুটিয়ে দিলে মাত্র দুইদিনেই ইনিংস ব্যবধানে জয়লাভ করে। তন্মধ্যে, এক ওভারেই অ্যান্ড্রু ক্যাডিক চার উইকেট পেয়েছিলেন। সাত বছর পর ২০০৭ সালে আবারও তারা জয় পায়। রায়ান সাইডবটম দুই ইনিংসে ৮৬ রান খরচায় ৮ উইকেট নিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল তাদের টেস্টের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বাজে ফলাফল হিসেবে ইনিংস ও ২৮৩ রানে পরাজিত হয়।
আগস্ট, ২০০১ সালে ইংল্যান্ড দল সফলভাবে অস্ট্রেলিয়ার ৩১৫ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে। ঐ টেস্টে মার্ক বুচারের অপরাজিত ১৭৩ রানের কল্যাণে স্বাগতিক দল ছয় উইকেটে বিজয়ী হয়।[৪] তবে, আগস্ট, ২০০৯ সালে অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলীয়রা আড়াইদিনেই ইংল্যান্ড দলকে ইনিংস ও ৮০ রানে পরাভূত করে। কোন স্পিন বোলার ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া দল বিশ উইকেট পেয়েছিল। ইংল্যান্ডের মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান রবি বোপারা, ইয়ান বেল ও পল কলিংউড দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ১৬ রান তুলেছিলেন।
২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান শাই হোপ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একই টেস্টে দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেন। এরফলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হেডিংলিতে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করার গৌরবগাঁথা রচনা করেন তিনি।
২২ জুলাই, ১৯৯৩ তারিখে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল এ মাঠে ৬৫৩/৪ তুলে সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়ে। শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহকের মধ্যে ডন ব্র্যাডম্যান ৯৬৩, জিওফ বয়কট ৮৯৭ ও জন এডরিচ স্টুয়ার্ট ৮৪৯ রান তুলেন। শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রাহকের মধ্যে ফ্রেড ট্রুম্যান ৪৪, বব উইলিস ৪০ ও স্টুয়ার্ট ব্রড ৩৪ উইকেট পেয়েছেন।
একদিনের আন্তর্জাতিকে ২৪ মে, ২০১৭ তারিখে ইংরেজ দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৩৯/৬ তুলে। শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহকের মধ্যে মার্কাস ট্রেসকোথিক ৪০৮, অ্যান্ড্রু স্ট্রস ৩৩৫ ও ইয়ন মর্গ্যান ২৯২ রান তুলেছিলেন। শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রহকারীর মধ্যে ক্রিস ওল্ড ১২, ইয়ান বোথাম ১১ ও অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ ৯ উইকেট পেয়েছেন।
১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সুপার সিক্স পর্বে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পরবর্তীতে শিরোপাধারী অস্ট্রেলিয়া দল ৪৮/৩ থাকার পর ২৭১/৭ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। স্টিভ ওয়াহর বল দক্ষিণ আফ্রিকান হার্শেল গিবস ফেলে দিলে তিনি অপরাজিত ১২০ রান করেছিলেন।[৫]
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ তারিখে হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথমবারের মতো সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ঐ অনুষ্ঠানে স্কা ও ম্যাডনেস ব্যান্ড ৭,৫০০ দর্শকের সামনে অনুষ্ঠান করে।[৬][৭]