হেনরি ডেভিড থরো | |
---|---|
জন্ম | ডেভিড হেনরি থরো ১২ জুলাই ১৮১৭ কংকর্ড, ম্যাসাচুসেটস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | ৬ মে ১৮৬২ কংকর্ড, ম্যাসাচুসেটস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৪৪)
মাতৃশিক্ষায়তন | হার্ভার্ড কলেজ |
যুগ | ১৯শ শতকের দর্শন |
অঞ্চল | পশ্চিমা দর্শন |
ধারা | তুরীয়বাদ[১] |
প্রধান আগ্রহ | |
উল্লেখযোগ্য অবদান | |
স্বাক্ষর | |
হেনরি ডেভিড থরো (ইংরেজি: Henry David Thoreau; ১২ই জুলাই, ১৮১৭ – ৬ই মে ১৮৬২) একজন মার্কিন প্রকৃতিবাদী, নিবন্ধকার, কবি ও দার্শনিক ছিলেন।[৩] তিনি একজন শীর্ষস্থানীয় তুরীয়বাদী।[৪] তাঁর ওয়াল্ডেন নামক গ্রন্থে তিনি প্রাকৃতিক পরিবেশে সরল জীবনযাপনের উপরে তাঁর চিন্তাধারা প্রকাশ করেন। আর সিভিল ডিজোবিডিয়েন্স ("নাগরিক অবাধ্যতা") শীর্ষক নিবন্ধে (আদিতে যেটি রেজিস্ট্যান্স টু সিভিল গভার্নমেন্ট অর্থাৎ "নাগরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল) তিনি অন্যায্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবাধ্যতা প্রদর্শনের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদান করেন। এই দুইটি রচনাকর্মের জন্য তিনি সর্বাধিক খ্যাতি অর্জন করেন।
থরোর গ্রন্থ, রচনা, নিবন্ধ, রোজনামচা ও কবিতাগুলির সংখ্যা বিপুল; এগুলি ২০ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর দীর্ঘস্থায়ী অবদানগুলির মধ্যে প্রাকৃতিক ইতিহাস ও দর্শনের উপরে তাঁর রচনাবলী বিশেষভাবে উচ্চার্য, যেগুলিতে তিনি এমন সব পদ্ধতি ও গবেষণালব্ধ ফলাফল উল্লেখ করেন, যেগুলি বর্তমান যুগের বাস্তুবিজ্ঞান ও পরিবেশগত ইতিহাসবিদ্যাগুলিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে; একই সাথে এগুলি বর্তমান যুগের পরিবেশবাদ আন্দোলনের উৎস হিসেবে বিবেচিত। তাঁর সাহিত্যিক শৈলীতে প্রকৃতির নিবিড় পর্যবেক্ষণ, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, হুলফোঁটানো বাগালঙ্কার, প্রতীকী অর্থ, ঐতিহাসিক লোকজ্ঞান, ইত্যাদির মেলবন্ধন ঘটেছে। একই সাথে তাঁর রচনায় কাব্যিক সংবেদনশীলতা, কঠোর দার্শনিক নীতিপরায়ণতা ও ব্যবহারিক খুঁটিনাটির প্রতি মনোনিবেশের প্রমাণ পাওয়া যায়।[৫] থরো শত্রুভাবাপন্ন উপাদান, ঐতিহাসিক পরিবর্তন, প্রাকৃতিক অবক্ষয়, ইত্যাদির বিরুদ্ধে টিকে থাকার ধারণাটি নিয়ে গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন; একই সাথে তিনি আবর্জনা ও মোহ-মায়া বর্জন করে জীবনের সত্যিকারের অপরিহার্য প্রয়োজনগুলি আবিষ্কারের পক্ষে প্রচারণা চালান।[৫]
থরো সমগ্র জীবন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রীতদাস প্রথা উচ্ছেদের জন্য কাজ করেন। তিনি তাঁর বক্তৃতাগুলিতে পলায়নকৃত ক্রীতদাস আইনগুলিকে আক্রমণ করেন এবং একই সাথে ওয়েন্ডাল ফিলিপসের রচনাবলীর প্রশংসা করেন ও ক্রীতদাস প্রথার উচ্ছেদবাদী জন ব্রাউনকে সমর্থন করেন। নাগরিক অবাধ্যতা বিষয়ে থরো-র দর্শন পরবর্তীকালে লেও তলস্তোয়, মহাত্মা গান্ধী ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রসহ আরও অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ত্বের রাজনৈতিক চিন্তাধারা ও কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে।[৬]
থরোকে কদাচিৎ একজন নৈরাজ্যবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।[৭][৮] সিভিল ডিজোবিডিয়েন্স রচনাটিতে তিনি লিখেছিলেন: "আমি হৃষ্টচিত্তে এই মূলমন্ত্রটি গ্রহণ করি, যা বলে যে—'সেই সরকারই সেরা, যে সরকার সবচেয়ে কম শাসন করে' এবং আমি এই মূলমন্ত্রটি আরও দ্রুত ও আরও প্রণালীবদ্ধভাবে কার্যকর হতে দেখতে চাই। কার্যকর করা হলে শেষ বিচারে এটি যেটিতে পরিণত হবে, যা আমিও বিশ্বাস করি, তা হল —'সেই সরকারই সেরা যেটি কোনও শাসনই করে না;' যখন মানুষ এর জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তারা ঐ ধরনের সরকারের অধিকারী হবে। [...] আমি এক্ষুনি সরকারের অনুপস্থিতি চাই না, কিন্তু এক্ষুনি একটি উন্নততর সরকার চাই।"[৯]