অকোষীয় জীব হল, সেই সকল জীব যেটি কোন কোষীয় গঠন কাঠামো ছাড়া অবস্থান করতে পারে, অন্তত এটির জীবন চক্রের অংশ বিশেষ সময়ের জন্য।[১] ঐতিহাসিকভাবে, অধিকাংশ (বর্ণনামূলক) জীবনের সংজ্ঞায় স্বীকার করা হয় যে, একটি জীবিত জীব আবশ্যক ভাবে এক বা একাধিক কোষ নিয়ে গঠিত ,[২] কিন্তু বর্তমানে এই সংজ্ঞা তার প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে এবং আধুনিক মানদণ্ড অন্যান্য কাঠামোগত ব্যবস্থায় থাকা জীবের জীবনের সংজ্ঞা প্রদান করে।[৩][৪][৫]
অকোষীয় জীবের ভেতর প্রাথমিক সদস্য হল ভাইরাস। সংখ্যালঘু সংখ্যক জীববিজ্ঞানীরা ভাইরাসকে বিবেচনা করেন জীবিত প্রাণী হিসাবে, কিন্তু বেশিরভাগ তা মনে করেন না। তাদের প্রধান আপত্তির কারণ হল, কোন পরিচিত ভাইরাস অটোপোয়সিস (কোষ বিভাজন ও স্বসংরক্ষণ) করতে সক্ষম নয়, যার মানে হল এগুলো নিজেদের বংশবৃদ্ধি করতে পারে না, এদের বংশবৃদ্ধির জন্য অন্য কোষের উপর নির্ভর করতে হয়।[৬][৭][৮][৯] তবে, সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত জায়ান্ট ভাইরাসের মধ্যে কিছু জিন রয়েছে যা এই ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের অংশবিশেষ বহন করে, এই গুণবালী প্রত্যাশা উত্থাপন করে যে, হয়ত তদের কোন বিলুপ্ত পূর্বপুরুষ ছিল যা স্বাধীনভাবে বিবর্তন ও প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম ছিল। অধিকাংশ জীববিজ্ঞানী সম্মত হন যে, এমন একটি পূর্বপুরুষ হতে পারে বোনা ফিড অকোষীয় জীব ব্যবস্থা, কিন্তু তার অস্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি।[১০][১১][১২][১৩]
প্রকৌশলী কখনও কখনও "আর্টিফিশিয়াল লাইফ" শব্দটি ব্যবহার করেন সফটওয়্যার ও রোবট কে বুঝাতে যার কর্মপ্রক্রিয়া জৈবিক প্রক্রিয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত, কিন্তু এগুলো জীবন সম্বন্ধীয় কোন জৈবিক সংজ্ঞার আয়তায় পড়ে না।
ভাইরাসের প্রকৃত অবস্থা অস্পষ্ট ছিল অনেক বছর, প্যাথোজেনের হিসেবে এদের আবিষ্কার হবার পর থেকে। প্রথমদিকে এদের বর্ণনা করা হত বিষ বা টক্সিন হিসাবে, তারপর "সংক্রামক প্রোটিন" হিসাবে, কিন্তু মাইক্রোবায়োলজির উন্নতির সাথে সাথে, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, এগুলো জেনেটিক্যাল উপাদান বহন করে, একটি সংজ্ঞায়িত কাঠামো রয়েছে এবং এদের ক্ষমতা এর উপাদানের অংশগুলোকে স্বতস্ফর্তভাবে সংযোজন করার। এই তথ্য সৃষ্টি করে একটি বিশাল বিতর্কের যে, মৌলিকভাবে এদের কি হিসাবে গণ্য করা উচিত জৈব নাকি অজৈব হিসাবে — যেহেতু এগুলোকে খুব ছোটো জৈবিক জীব বা খুব বড়ো জৈবরাসায়নিক অণু হিসাবেও গণ্য করা যায়— এবং ১৯৫০ সাল থেকে অনেক বিজ্ঞানী ভাইরাসকে চিন্তার করেন, এটি বিদ্যমান রসায়ন ও জীবের সীমান্তরেখায়; জীবিত এবং প্রাণহীনের মধ্যে একটি ধূসর এলাকায়।[১৪]