অক্ষতা নারায়ণ মূর্তি | |
---|---|
জন্ম | এপ্রিল ১৯৮০ (বয়স ৪৪) |
মাতৃশিক্ষায়তন | ক্লেরমন্ট ম্যাককেনা কলেজ ফ্যাশন ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (এমবিএ) |
পরিচিতির কারণ | যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পত্নী (২০২২ সাল থেকে) |
দাম্পত্য সঙ্গী | ঋষি সুনাক (বি. ২০০৯) |
সন্তান | ২ |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | রোহন মূর্তি (ভাই) |
অক্ষতা নারায়ণ মূর্তি (জন্ম এপ্রিল ১৯৮০)[১][২] একজন ব্রিটেন ভিত্তিক ভারতীয় ব্যবসায়ী, বেশভূষাশৈলী নকশাকার এবং উদ্যোগী পুঁজিবাদী।
তিনি ভারতীয় বহু-জাতিক তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তি এবং সুধা মূর্তির কন্যা। তিনি ইনফোসিসে ০.৯৩% অংশীদারিত্বের অধিকারী, যা তাকে ব্রিটেনের সবচেয়ে ধনী নারীদের মধ্যে একজন করে তোলে এবং যুক্তরাজ্যের অন্যান্য বেশ কয়েকটি ব্যবসাতেও তার অংশীদারিত্ব রয়েছে।[৩][৪][৫] তিনি ডিগমে ফিটনেস এবং সোরোকোর একজন পরিচালক যা তার ভাই রোহান মূর্তি সহ-প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৬]
তিনি বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাকের স্ত্রী। মূর্তি এবং সুনাক ২০২২ সালের হিসাবে ৭৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্মিলিত সম্পদ সহ ব্রিটেনের ২২২তম ধনী ব্যক্তি।[৭] তার ব্যক্তিগত সম্পদ যুক্তরাজ্যে তার অ-আবাসিক মর্যাদার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ মিডিয়া আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।[৮]
অক্ষতার জন্ম ভারতের হুবলিতে[২] এবং তার পিতা এনআর নারায়ণ মূর্তি এবং তার মা সুধা মূর্তি তাদের টেকনোলজি কোম্পানি ইনফোসিস চালু করার কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি তার দাদা-দাদির কাছে বেড়ে ওঠেন।[৮]
তার বাবাকে প্রায়ই "ভারতীয় আইটি সেক্টরের জনক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়, যিনি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। অক্ষতা উল্লেখ করেছেন যে ১৯৭৪ সালে কমিউনিস্ট যুগে যুগোস্লাভ - বুলগেরিয়া সীমান্তের মধ্যবর্তী একটি সীমান্ত শহরে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই গ্রেফতার ও বহিষ্কার করা হয় তাকে, যা তাকে "বিভ্রান্ত বামপন্থী/কমিউনিস্ট " থেকে একজন "পুঁজিবাদী দরদী" তে পরিণত করে, এবং ইনফোসিস তৈরিতে পথপ্রদর্শন করে।[৯][১০]
তার মা ছিলেন প্রথম মহিলা প্রকৌশলী যিনি ভারতের তৎকালীন বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতার জন্য কাজ করেছিলেন; তিনি এখন একজন সমাজসেবী।[১১]
অক্ষতা ব্যালডউইন গার্লস হাই স্কুল, ব্যাঙ্গালোরে পড়াশোনা করেন এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লেরমন্ট ম্যাককেনা কলেজে অর্থনীতি এবং ফরাসি অধ্যয়ন করেন; তিনি ফ্যাশন ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং থেকে পোশাক তৈরিতে ডিপ্লোমা করেছেন, এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেছেন।[২]
তার একমাত্র ভাই হচ্ছেন রোহন মূর্তি।[১২]
২০০৭ সালে অক্ষতা ডাচ ক্লিনটেক ফার্ম টেন্ডরিসে এর মার্কেটিং ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করেন। পরে নিজের ফ্যাশন হাউজ চালু করার জন্য ২ বছর পরে সেটি ত্যাগ করেন।[২] ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১১ সালে নিজের ফ্যাশন হাউজ 'অক্ষতা ডিজাইন' প্রতিষ্ঠার বছর তিনেকের পরেই সেটি বন্ধ হয়ে যায়।[৩] এরপর ঋষি এবং অক্ষতা দুজনে মিলে ২০১৩ সালে ক্যাটামারান ভেঞ্চারস-এর লন্ডনভিত্তিক শাখা চালু করেন, যেটির ছিলেন তার বাবা এন আর নারায়ণ মূর্তি।[১৩] ২০১৫ সালে রিচমন্ডের কনজারভেটিভ এমপি নির্বাচিত হওয়ার কিছু সময় আগে সুনাক তার শেয়ারগুলি অক্ষতার কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।[১৪] বাবার সম্পত্তিতে বিশাল ভাগ রয়েছে অক্ষতার। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনফোসিসের ০.৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন পাউন্ড।[৮]
অক্ষতা একজন ভারতীয় নাগরিক। ২০০৯ সালের আগস্টে অক্ষতা ঋষি সুনাককে বিয়ে করেন, যার সাথে তার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা হয়েছিল।[২] তাদের দুই মেয়ে আনুশকা ও কৃষ্ণা।[৮] তারা উত্তর ইয়র্কশায়ারের কির্বি সিগস্টন গ্রামে কির্বি সিগস্টন ম্যানর এবং সেন্ট্রাল লন্ডনের আর্লস কোর্টে একটি মিউজ হাউস, সাউথ কেনসিংটনের ওল্ড ব্রম্পটন রোডে একটি ফ্ল্যাট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকার ওশান অ্যাভিনিউতে একটি পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্টের মালিক।[১৫][১৬][১৭][১৮][১৯] এপ্রিল ২০২২-এ জানা গেছে যে সুনাক এবং মূর্তি ১১ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে নতুন সংস্কার করা পশ্চিম লন্ডনের একটি বাড়িতে উঠেছেন।[২০][২১]
২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের চেয়েও ধনী অক্ষতা মূর্তি। ব্রিটেনের সেরা ২৫০ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় নাম রয়েছে তার। তার এই আয়ের উৎস যুক্তরাজ্য নয় বলে, এরজন্য তাকে সেদেশে কর দিতে হতো না। 'নন-ডোমিসাইল' স্ট্যাটাস ভোগ করতেন তিনি। ব্রিটেনের স্থায়ী নাগরিক না হওয়ায় সে দেশের বাইরে থেকে উপার্জিত আয়ের ওপর কর দিতে হতো না তাকে। এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হলে, সমালোচনার জেরে গত এপ্রিলে তিনি জানান, বিশ্বজোড়া নিজের সমস্ত সম্পদ ও আয়ের ওপর যুক্তরাজ্যে কর দেবেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই কর দিতে তিনি বাধ্য না হলেও যুক্তরাজ্যকে ভালবেসেই তিনি এটি দেবেন।[২২][২৩]