অগস্ত্য মালা | |
---|---|
সর্বোচ্চ বিন্দু | |
উচ্চতা | ১,৮৬৮ মিটার (৬,১২৯ ফুট) |
সুপ্রত্যক্ষতা | ১,৪৯৭ মিটার (৪,৯১১ ফুট) |
স্থানাঙ্ক | ৮°৩৬′৫৮.৬৪″ উত্তর ৭৭°১৪′৪৪.৬২″ পূর্ব / ৮.৬১৬২৮৮৯° উত্তর ৭৭.২৪৫৭২৭৮° পূর্ব |
ভূগোল | |
তিরুবনন্তপুরম জেলা, কেরালা, ভারত | |
মূল পরিসীমা | পশ্চিমঘাট পর্বতমালা |
অগস্ত্য মালা বা (অগস্ত্য মালাই) হল ভারতের কেরালা আর তামিলনাড়ু রাজ্যের সীমানায় তিরুবনন্তপুরম জেলায় অবস্থিত, পশ্চিমঘাট পর্বতমালাগুলি মধ্যে অন্যতম শৃঙ্গ। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত বন্যপ্রানী অভয়ারণ্য অঞ্চল।[১] এই পর্বতটি হিন্দু পুরাণে অত্যন্ত পবিত্র স্থান বলে মনে করেন। এখানে ঋষি আগস্ত্য মুনির বসবাস করতেন বলে বিশ্বাস করা হয়। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে বিশ্ব ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে। অগস্ত্য মালার উচ্চতা ১৮৬৮ মিটার।[২]
অগস্ত্য মালা বা অগস্ত্যকুডম হল হিন্দু ঋষি আগস্ত্য মুনির ভক্তদের একটি তীর্থস্থান, যাকে হিন্দু পুরাণের সাতটি ঋষির (সপ্তর্ষি) একজন বলে মনে করা হয়। চেনকোট্টুকোনম মাদাথিপাঠির জগৎগুরু স্বামী সত্যানন্দ সরস্বতী থিরুবাদিকল মন্দিরটি স্থাপন করা করেছিলেন। আবার তামিল ভাষায়, অগস্ত্য একটি বর বলে মনে করা হয়। পর্বতের চূড়ায় আগাথিয়ার একটি মূর্তি আছে যা ভক্তরা নিজেরাই পূজো করেন।[৩]
অগস্ত্য মালা পর্বতটি কেরালা রাজ্যের কোল্লাম, তিরুবনন্তপুরম জেলার এবং তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারী, তিরুনেলভেলি জেলার সীমান্তে অবস্থিত। থামিরাবারানি নদী এই পর্বতের পূর্ব দিক থেকে উৎপন্ন হয়েছে এবং তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি জেলায় প্রবাহিত হয়েছে। এই পর্বত থেকে উৎপন্ন অন্যান্য প্রধান নদীগুলি হল কারামানা নদী এবং নেইয়ার নদী যা তিরুবনন্তপুরম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীগুলি শহরের পানীয় জলের প্রধান উৎস। নেইয়ার ড্যাম থেকে অগস্ত্য মালার দূরত্ব ৩২ কিমি এবং বোনাকউড থেকে ২২ কিমি দূরে অবস্থিত। অগস্ত্যকুডম এর নিকটবর্তী শহর এবং বিমানবন্দর হল তিরুবনন্তপুরম যা প্রায় ৬১ কিমি দূরে অবস্থিত এবং এর নিকটতম রেলওয়ে স্টেশনও তিরুবনন্তপুরম।[৪]
তিরুবনন্তপুরম থেকে গাড়ি করে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বোনাকঊড পর্যন্ত পৌঁছায় যায় । বোনাকঊড থেকে পর্বতের চূড়ার পর্যন্ত ট্রেকিং রাস্তা ২০ কিমি দীর্ঘ, এই ট্রেকিং করতে দুই দিনের সময় লাগে। ট্রেকিং এর প্রথমদিন ভোরবেলা বোনাকঊড বেস ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করে ১৪ কিমি দূরে দ্বিতীয় ক্যাম্পে পৌছানো হয়। এই অংশে হাতি ও বুনো ষাঁড়ের প্রচুর দেখা যায়। দ্বিতীয় দিনে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রেকিং করে অগস্ত্যকুডম পর্বতের চূড়ায় পৌঁছানো যায়।
এই ট্রেকিং এ কতকগুলি কঠোর নির্দেশিকার উপর ভিত্তি করে অনুমতি দেওয়া হয়।[৫] এই ট্রেকিং জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে তীর্থযাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কেরালা বনবিভাগ ত্রিভান্দ্রমের জেলা কার্যালয় থেকে ট্রেকিং পাস জারি করা হয় । ট্রেকিং রাস্তা বোনাকঊড থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে কিন্তু নেইয়ার-অগস্ত্যকুডম ট্রেকিং পথটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়৷[৬]
এই পর্বতের পাদদেশে বিরল প্রজাতির ভেষজ এবং ঔষধি গাছের প্রাচুর্য আছে যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় স্বাস্থ্যে ব্যবহৃত প্রায় ২০০০টি ঔষধি গাছ এখানে পাওয়া যায়। ইউরোপীয়ানরা, বিশেষ করে ব্রিটিশরা এই পর্বতের বেস ক্যাম্পের চারপাশে যেমন ব্রিমোর, বোনাকউড এবং পোনমুডিতে সর্বপ্রথম তারাই চা বাগান স্থাপন করেছিলেন ।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসের আগে, স্থানীয় কানি উপজাতিরা মহিলাদের অগস্ত্যকুডম পর্বত আরোহণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু পরে আদালতের রায়ে নিষেধাজ্ঞা অপসারণ করা হয়েছিল। ধন্যা সানাল নামে একজন মহিলা, যিনি ভারতীয় তথ্য পরিষেবা অফিসার ছিলেন তিনি ২০১৯ সালে ট্রেকিং করে পর্বতের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন এবং তিনি প্রথম মহিলা যিনি পর্বত আরোহণ করার জন্য পরিচিত পেয়ে ছিলেন৷[৭] আইন পরিবর্তনের পর থেকে আরো ১০০ জনেরও বেশি নারী পর্বত আরোহণের লাইসেন্সের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন।