অতিনবতারা পর্যবেক্ষণের ইতিহাস শুরু হয় আনুমানিক ১৮৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে। প্রাচীন অতিনবতারার পর্যবেক্ষন প্রসঙ্গে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অতিনবতারার পর্যবেক্ষণে অনেক উন্নতি সাধন হয়েছে।দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নয়নের পর থেকে অন্যান্য ছায়াপথের এবং অনেক আলোকবর্ষ দূরের অতিনবতারার পর্যবেক্ষণও সম্ভব হয়েছে।
অতিনবতারা পর্যবেক্ষণ থেকে আকাশগঙ্গার দুরত্ব নির্ণয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে অতিনবতারার সফল নকশাও আবিষ্কৃত হয় এবং একটি তারকা গঠনে অতিনবতারার ভূমিকা বিজ্ঞানীরা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।
সাল | পর্যবেক্ষণের অবস্থান | সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতা m |
নিশ্চয়তার[১] অবস্থা |
---|---|---|---|
১৮৫ | মহিষাসুর মন্ডল | −৬ | প্রস্তাবিত অতিনবতারা,[২] এছাড়াও ধূমকেতু[৩][৪] |
৩৮৬ | ধনু মন্ডল | +১,৫ | অতিনবতারা (অনিশ্চিত),[২], সম্ভবত নবতারা[৫] |
৩৯৩ | বৃশ্চিক মন্ডল | −৩ | সম্ভবত অতিনবতারা,[২][৫] সম্ভবত নবতারা[৫] |
১০০৬ | শার্দুল মন্ডল | −৭,৫±০,৪ | নিশ্চিত: অতিনবতারা |
১০৫৪ | বৃষ মন্ডল | −৬ | নিশ্চিত: অতিনবতারার শেষাংশ এবং পালসার |
১১৮১ | কাশ্যপেয় মন্ডল | −২ | সম্ভবত অতিনবতারা নয়(প্রস্তাবিত,[২][৬] অগ্রাহ্য[৭][৮]) |
১৫৭২ | কাশ্যপেয় মন্ডল | −৪ | নিশ্চিত:অতিনবতারা |
১৬০৪ | সর্পধারী মন্ডল | −২ | নিশ্চিত:অতিনবতারা |
ভেলা সুপারনোভা রেমন্যান্ট বিস্ফোরণ খুব সম্ভবত ১০,০০০-২০,০০০ বছর আগে ঘটিত হয়েছিল।[৯] ১৯৭২ সালে নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে দক্ষিণ গোলার্ধের আদিবাসীরা এই বিস্ফোরণের সাক্ষী এবং প্রাচীন অধিবাসীরা প্রতীক আকারে এগুলো সংরক্ষণ করে যেতে পারে।[১০] এক বছর পর প্রত্নতত্ত্ববিদ জর্জ মাইকেনওস্কি আঞ্চলিক আমেরিকানদের দ্বারা বলিভিয়ায় ফেলে যাওয়া কিছু প্রাচীন ধারণাতীত চিহ্ন এর কথা মনে করেন। একটি চিহ্নে ছোট চারটি বৃত্তের দুই পাশে বড়ো দুইটি বৃত্ত দেখতে পান। ছোট বৃত্তগুলো ভেলা এবং কারিনা মন্ডলের নক্ষত্রপুঞ্জের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। বড়ো বৃত্ত দু'টির একটি হতে পারে ক্যাপেলা তারকা, অন্যটি অতিনবতারার শেষাংশ। জর্জ মাইকেনওস্কি মনে করেন অন্য বড়ো বৃত্তটি খুব সম্ভবত আদিবাসীদের অতিনবতারা বিস্ফোরণ দেখার স্বাক্ষ্য বহন করে।[১১]
১৮৫ খ্রিস্টাব্দে হান সাম্রাজ্যের জ্যোতির্বিদরা আকাশে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের দেখা পান। তাদের পর্যবেক্ষন অনুসারে এই নক্ষত্রটি আট মাস পর ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয় যায়,এটি তারার মতো ঝকঝক করছিল এবং ধূমকেতুর মতো তাড়াতাড়ি চলে যায়নি। এই পর্যবেক্ষণ অতিনবতারার অস্তিত্ব প্রমাণ করে এবং ধারণা করা হয় ১৮৫ সালের এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম সফলভাবে অতিনবতারার ইতিহাস সংরক্ষিত হয়। ধারণা করা হয় ১৮৫ সালের অতিনবতারাটি সম্ভবত রোমান সাম্রাজ্যতেও সংরক্ষিত হয়েছে, যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই।[১২] গ্যাসীও শেল আর-সি-ডব্লিউ ৮৬ কে এই ঘটনার অবশিষ্টাংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাম্প্রতিক কালের রঞ্জন রশ্মি'র এক গবেষণার মাধ্যমেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রকাশিত হয়।[১২][১৩] এই ঘটনাটি হান-পরবর্তী ঐতিহাসিক গ্রন্থেও উল্লেখ আছে যেখানে চীনের ২৫ থেকে ২৫০ খ্রিস্টাব্দের প্রামাণিক ইতিহাস বর্ণিত আছে।[১৪]
৩৯৩ সালে চীনের অধিবাসীরা আধুনিক বৃশ্চিক (তারকামণ্ডল)-এ 'এস এন ৩৯৩' নামক অন্য একটি আগন্তুক তারকার পর্যবেক্ষণ করে।[১৫] এছাড়াও অন্যান্য অনিশ্চিত অতিনবতারও যথাক্রমে ৩৬৯, ৩৮৬, ৪৩৭, ৮২৭ এবং ৯০২ সালে পর্যবেক্ষিত হয়।[২] যাই হোক, এগুলো এখনো অতিনবতারার শেষাংশের সাথে মিলেনি অর্থাৎ, এগুলো এখন শুধুমাত্র ধারণা।[২] পরবর্তী প্রায় ২,০০০ বছরের সময়কালে চীনের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরো ২০টি ঘটনা লিপিবদ্ধ করেন,যার মধ্যে পরবর্তীকালে মুসলমান, ইউরোপিয়ান এবং ভারতীয়দের দ্বারা পরিলক্ষিত ঘটনাগুলোও আছে।[২][১৬]
অতিনবতারা ১০০৬ দক্ষিণ তারকামন্ডল 'লুপাস' এ ১০০৬ সালে দেখা গিয়েছিল। ইতিহাসে এটি রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল অতিনবতারা ছিল। এই ঘটনাটি চীন, মিশর, ইরাক, ইতালি, জাপান এবং সুইজারল্যান্ড এর মানুষেরা নথিবদ্ধ করে রেখেছিল। এছাড়াও সম্ভবত ফ্রান্স, সিরিয়া এবং উত্তর আমেরিকা'র মানুষেরাও নথিবদ্ধ করেছিল। মিশরের জ্যোতির্বিজ্ঞানী আলি ইবনে রিদওয়ান তারকাটির উজ্জ্বলতা চাঁদের আলোর ৪ ভাগের ১ ভাগ হিসেবে মনে করেছিলেন। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন বিস্ফোরণটির শেষ অবশিষ্টাংশের দুরত্ব পৃথিবী থেকে ৭,১০০ আলোকবর্ষ।[১৭]
১০৫৪ সালে ১০৫৪ অতিনবতারা নামক আরেকটি অতিনবতারা দেখা গিয়েছিল যার তথ্য আরব, চীন এবং জাপানের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দ্বারা সংরক্ষিত হয়েছিল। সম্ভবত দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন অধিবাসীরা পাথর খোদাই করে এটি সংরক্ষণ করেছিল। বিস্ফোরণটি ঘটেছিল বৃষ তারকামন্ডলে,যেখানে এটি ক্র্যাব নেবুলার শেষাংশ প্রস্তুত করেছে। উচ্চাংশে, এর উজ্জ্বলতা সম্ভবত শুক্র গ্রহ থেকে ৪ গুণ বেশি ছিল এবং এটি দিনের আকাশে ২৩ দিন এবং রাতের আকাশে ৬৫৩ দিন দেখা গিয়েছিল। [১৮][১৯][২০]
১০৫৪ অতিনবতারা সংঘটিত হবার প্রায় ১০০ বছর পর কাশ্যপেয় তারকামন্ডলে ঘটিত ১১৮১ অতিনবতারারও কিছু সংরক্ষণলিপি রয়েছে। জাপান এবং চীনের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাটিও সংরক্ষণ করেছেন। পালসার ৩সি৫৮-কে এরই অবশিষ্টাংশ বলে ধরা হতো[১৮][২১] এবং তা বহুকাল ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো[৬][৭][২২] কিন্তু ২০২১ সালে আবিষ্কৃত আরেকটি নীহারিকা এই ধারণাকে বদলে দেয়।নব্য আবিষ্কৃত এই নীহারিকাটি সম্ভবত ১০০০ বছর পুরোনো।[৮]
ডেনমার্কের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ট্যুকো ব্রাহে, আইসল্যান্ড এর পর্যবেক্ষণকেন্দ্র থেকে রাতের আকাশে তার পর্যবেক্ষণের ফলাফল খুব যত্ন করে সংরক্ষণ করে রাখেন। ১৫৭২ সালে তিনি কাশ্যপেয় তারকামন্ডলে একটি নতুন তারকা পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তীকালে এর নাম দেওয়া হয় অতিনবতারা ১৫৭২। এই অতিনবতারার অবশিষ্টাংশ ১৯৬০ সাল পর্যন্ত আকাশে দৃশ্যমান ছিল।[১৯][২০]
ইউরোপীয়দের মধ্যে এই সময় একটি সাধারণ বিশ্বাস প্রচলিত ছিল।[২৩][২৪][২৫] তারা এরিস্টটল এর ধারণা বিশ্বাস করতো। তারা মনে করতো চাঁদ এবং গ্রহগুলি পৃথিবী থেকে বহু দূরে এবং সেগুলো স্থিতিশীল। তাই সমসাময়িক পর্যবেক্ষণকারীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই ঘটনাগুলো নিশ্চয়ই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভিতরেই ঘটেছে। যাইহোক, ট্যুকো লক্ষ্য করলেন যে বস্তুটি স্থির এবং কখনো এর লম্বন পরিবর্তন করতো না–অর্থাৎ, এটির অবস্থান অনেক দূরে।[২৩][২৪] তিনি তার পর্যবেক্ষণ লাতিন ভাষায় একটি ছোট বই-এ ১৫৭৩ সালে লিখে গেছেন। বইয়ের নাম, 'দে নোভা এত নুলিয়ুঁ আএঁভি মেমরিয়াঁ ভিসা স্তেল্লা' যার অর্থ–নতুন এবং পুরাতন অদৃশ্য তারকা সম্পর্কে। এর আধুনিক নাম– পরিবর্তনশীল তারকার আকস্মিক বিপর্যয়।[২১]
আমাদের আকাশগঙ্গায় অতি সম্প্রতি ঘটিত অতিনবতারা হলো অতিনবতারা ১৬০৪ যা ১৬০৪ সালে ৯ অক্টোবরে দেখা যায়। কিছু মানুষ এর পর্যবেক্ষণ করে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। তবে ইয়োহানেস কেপলার তাঁর পদ্ধতিগত গবেষণার কারণে উল্লেখযোগ্য হয় উঠেন। দে স্তেলা নোভা ইন পেদি সেরপেন্তারিঁ বইতে কেপলার তাঁর পর্যবেক্ষণ লিখে যান।[২৬][২৭] ট্যুকো'র মতো গ্যালিলিও গ্যালিলেই নতুন তারকার লম্বন পরিমাপ করতে গিয়েও ব্যর্থ হন এবং পরবর্তীকালে তিনি এরিষ্টোটলের আকাশের স্থিতিশীল অবস্থা তত্ত্বের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন।[২৮] এই সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ ১৯৪১ সালে মাউন্ট উইলসন মনমন্দির শনাক্ত করে।[২৯]
অতিনবতারার প্রকৃত অবস্থা কিছু সময়ের জন্য অস্পষ্ট ছিল। ধীরে ধীরে পর্যবেক্ষকরা এক ধরনের তারকার সন্ধান পেলেন যেগুলোর উজ্জ্বলতা দীর্ঘ সময়ের পর্যায়ক্রমিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যায়। জন রাসেল হাইন্ড এবং নরম্যান পগসন যথাক্রমে ১৮৪৮ সালে এবং ১৮৬৩ সালে কিছু তারকা শনাক্ত করেন যেগুলোর উজ্জ্বলতা হঠাৎ করে বদলে যায়। এই পর্যবেক্ষণটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কিছুটা নজর কেড়েছিল। অবশেষে ১৮৬৬ সালে ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হাগিন্স নবতারকার জন্য প্রথম বর্ণালী মানমন্দির স্থাপন করেন।[৩০] টি কর্ণিয়া বরালিস নবতারার অস্বাভাবিক হাইড্রোজেন বর্ণালি আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রটি তৈরী করেন। হাগিন্স অস্বাভাবিক বিস্ফোরণের অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়ার একটি তত্ত্ব প্রস্তাবনা করেন যা অন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীদেরও মনোযোগ আকর্ষণ করে।[৩১]
১৮৮৫ সালে, এস্তোনিয়ার, 'আর্নেস্ট হার্টউইং' দ্বারা এন্ড্রোমিডা ছায়াপথে একটি অতিনবতারা বিস্ফোরণের মতো কিছু একটা পর্যবেক্ষিত হয়। তখন 'এস এন্ড্রোমিডা'র ঔজ্জ্বল্যতা ৬ গুণ বেড়ে গিয়েছিল। ছায়াপথের কেন্দ্রের ঐজ্জ্বল্যতা অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তা আবার নবতারার মতো বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯১৭ সালে জর্জ উইলিয়াম রিৎচি সেই সময়ের এন্ড্রোমিডা ছায়াপথের দুরত্ব নির্ণয় করেন এবং পরিমাপের পরে ফলাফল অনুযায়ী এটি আগের ধারণার থেকে অনেক দূরে বিস্তৃত বলে ধরা হয়। এর মানে এস এন্ড্রোমিডা ছায়াপথের লাইনে ছিলনা বরং এটি ছায়াপথের কেন্দ্রেই ছিল এবং এটি প্রচুর শক্তি উৎপাদন করেছিল যা নবতারার থেকে অনেক বেশি।[৩২]
১৯৩০ সালের দিকে নতুন করে নবতারার পর্যবেক্ষন শুরু করেন ভাল্টার বাডে এবং ফ্রিট্জ জুইকি মাউন্ট উইলসনের পর্যবেক্ষন স্থল থেকে।[৩৩] তারা 'এস এন্ড্রোমিডা' শনাক্ত করেছিল যাকে তারা ভেবেছিল একটি সাধারণ অতিনবতারা, এটি একটি বিস্ফোরণ ছিল যার ফলে সূর্যের ১০৭ বছরের শক্তি উৎপন্ন হয়েছিল। তারা এই অস্বাভাবিক বিস্ফোরণটিকে বলতে শুরু করলো সুপারনোভা। তারা দাবি করলো যে সাধারণ তারকার মধ্যাকর্ষণ চাপের কারণে চুপসে যাওয়ার ফলে শক্তি নির্গত হওয়ার পর সেগুলো নিউট্রন তারাতে পরিণত হয়।[৩৪] সুপার-নোভা নামটি প্রথম ১৯৩১ সালে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির একটি লেকচারে ফ্রিটজ জুইকি নিজে ব্যবহার করেন। পরে ১৯৩৩ সালে আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি এর এক মিটিং-এ এটিকে সাধারণভাবে সুপারনোভা বলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৩৮ সালে সুপার-নোভার এর হাইফেন উঠে গিয়ে সুপারনোভা নামে ব্যবহার করা শুরু হয়,যার বাংলা অর্থ অতিনবতারা।[৩৫]
যদিও অতিনবতারা একটি বিরল ঘটনা তবুও প্রতি ৫০ বছরে এটি আমাদের ছায়াপথে ঘটেই থাকে।[৩৬] দূরের ছায়াপথগুলোকে নিরীক্ষণ করার সময়ও অতিনবতারার আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ হয় থাকে। ১৯৩৩ সালে প্রথম অতিনবতারা শনাক্তকরণ প্রকল্পের শুরু হয় জুইকি দ্বারা। ১৯৩৬ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির যোসেফ জনসন এর সাহায্যে সুপারনোভা সনাক্তকরণ অভিযানে যোগ দেন। প্যালমার মানমন্দির থেকে ৪০ সে.মি. স্মিট দূরবিক্ষণ যন্ত্র দ্বারা অতি-গ্যালাক্টিক ফটগ্রাফিক প্লেটের সাথে তুলনা করে তারা ৩ বছরে ১২টি নতুন সুপারনোভা আবিষ্কার করেন।[৩৭]
১৯৩৮ সালে, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভাল্টার বাডে প্রথম আবিষ্কার করেছেন সাধারণ নীহারিকা হলো সুপারনোভার ধ্বংসাবশেষ।[৩৮] তিনি প্রাথমিকভাবে বলেছিলেন ক্র্যাব নেবুলা হলো 'এস এন ১০৫৪' এর অবশিষ্টাংশ। তিনি উল্লেখ করেছেন যখন গ্রহ নীহারিকা দেখা যায় তখন সুপারনোভা বিস্ফোরণে বেগ সাধারণ থেকে অস্বাভাবিক রকমের বেশি হয়। একই বছরে বাডে'র প্রস্তাবনা অনুযায়ী আই.এ ধরনের সুপারনোভাগুলো সহায়ক দুরত্ব নির্দেশক। পরবর্তীকালে অ্যালান ট্যাম্যান এবং গুস্তাভ ট্যাম্যান এর গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে আই.এ ধরনের সুপারনোভাগুলো মহাবিশ্ব এর বড়ো দূরত্ব মাপতে এক ধরনের 'স্ট্যান্ডার্ড ক্যান্ডেল'।[৩৯] ১৯৪১ সালে সুপারনোভার এর বর্ণালিগত বৈশিষ্ট্যদ্বারা রুডলফ মিঙ্কোউইস্কি প্রথম মহাবিশ্বের বড় দূরত্ব মাপেন। সুপারনোভার বর্ণালিতে হাইড্রোজেন উপাদানের উপর ভিত্তি করে সুপারনোভাগুলোকে তিনি ২ ভাগে বিভক্ত করেছেন। পরে জুইকি আরো ৩ ধরনের সুপারনোভা আবিষ্কার করেন। যদিও জুইকির আরো ৩টি আবিষ্কার এখন আর একক সুপারনোভার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়না। পরবর্তীকালে বর্ণালি ক্যাটাগরির উপ-বিভাগকে আধুনিক সুপারনোভা মডেলে স্কিম বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর পর ফ্রেড হয়েল কীভাবে মহাবিশ্বের পরিবর্তনশীল বস্তুগুলো উৎপন্ন হয় তা নিয়ে গবেষণা করলো।[৪০] ১৯৪৬ সালে তিনি প্রস্তাবনা করেছেন, উচ্চ ভরসম্পন্ন তারকাগুলো থার্মোনিউক্লিয়ার বিক্রিয়া করে, আর নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার কারণেই তারকা থেকে শক্তি নির্গত হয় এবং এর ফলে তারকা চুপসে যায়। চুপসে যাওয়া তারকা ক্রমান্বয়ে অস্থির হয়ে যায় এবং বিষ্ফোরক বস্তু উৎপন্ন করে যা বিস্ফোরণের ফলে নক্ষত্রমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬০ সালে ফ্রেড হয়েল এবং উইলিয়াম আলফ্রেড ফাওলার দাবি করেন যে নিউক্লিয়ার ফিউশনই হলো সুপারনোভা বিস্ফোরণের শক্তির উৎস।[৪১]
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়- এ প্রথম ১৯৬০ সালে কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সুপারনোভা পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। তারা নিউ মেক্সিকোর কোরালিটস পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে ২৪ ইঞ্চির একটি টেলিস্কোপ তৈরী করে যা কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। টেলিস্কোপটি প্রতি মিনিটে একটি করে গ্যালাক্সি দেখতে পারতো এবং টিভি স্ক্রীনে পর্যবেক্ষকরা তা দেখতে পেত। এর মাধ্যমে তারা ২ বছরে ১৪টি সুপারনোভা আবিষ্কার করতে পারলো।[৪২]
১৯৭৩ সালে ওয়ালেন এবং আইবেনের একটি প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে বর্তমানে আই.এ ধরনের সুপারনোভা বিস্ফোরণের তত্ত্ব প্রচলিত হয়েছে। একই সময়ে এন.জি.সি ৫২৫৩ এর 'এস এন ১৯৭২ ই' এর আলোর বক্রতা ১ বছর ধরে পর্যবেক্ষিত হয়। সুপারনোভাটি প্রতিদিনে ০.০১ আপাত মান এ বিলীন হয়ে যেতে লাগলো।[৪৩] অন্য পরিমাপের এককএ রূপান্তর করলে বলা যেতে পারে এটি কোবাল্ট-৫৬ এর অবক্ষয় মানের সমান। যার হাফ-লাইফ হলো ৭৭ দিন। অবক্ষয়িত বিস্ফোরণ মডেল অনুসারে প্রায় সৌর ভরের সমান ভরের নিকেল-৫৬ এর উৎপাদন ঘটে বিষ্ফোরিত তারা দিয়েই ঘটে। নিকেল এবং কোবাল্টের অবক্ষয়ের কারণে সুপারনোভা বিস্ফোরণের শক্তি উৎপন্ন হয় এবং বিস্ফোরণের শেষ কালে তা বিকিরণ করে দেয়। কিছু পর্যবেক্ষণ এর উপর ভিত্তি করে ১৯৭২ সালের পরে অবক্ষয়-বিস্ফোরণ মডেলটি স্বীকৃতি পেতে থাকে।[৪৪]
আই.এ ধরনের সুপারনোভার আলোর বক্রতা পর্যবেক্ষণ করে আবিষ্কৃত হয় যে এগুলো একটি সর্বোচ্চ ঔজ্জ্বল্য প্রাপ্তির মাধ্যমে দেখা যায়।[৪৫] সুপারনোভাগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গ্যালাক্সির দূরত্ব সঠিকভাবেই অণুমান করা যায়। এভাবেই মহাবিশ্বের বড়ো দূরত্ব পরিমাপ করার জন্য এই ধরনের সুপারনোভাগুলো অনেক সাহায্য করে। ১৯৯৮ সালে, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে অনেক দূরের আই.এ সুপারনোভাগুলো খুবই অস্পষ্ট হয়। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে আমাদের মহাবিশ্বের বৃদ্ধি ত্বরিত হচ্ছে।[৪৬][৪৭]
যদিও ১৬০৪ সালের পর থেকে আমাদের ছায়াপথে কোনো সুপারনোভা দেখা যায়নি, এটা ভাবা হয় যে ৩০০ বছর আগে ১৬৬৭ থেকে ১৬৮০ সালের মাধ্যে ক্যাশিওপিয়ায় একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এর অবশিষ্টাংশ হলো ক্যাশিওপিয়া এ যা তারকামন্ডলের ধুলো দিয়ে অস্পষ্ট হয়ে আছে। এটিকে এরকম ভাবার কারণ হলো এটি কখনো স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। হতে পারে অন্য দিক থেকে একে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। যাই হোক, এটি আমাদের সৌরজগৎের থেকে বহুদূরে সবচেয়ে উজ্জ্বল বেতার উৎস।[৪৮]
১৯৮৭ সালে সুপারনোভা ১৯৮৭এ বড় 'মেগলানিক মেঘ' এর মধ্যে শুরু হবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দেখা গিয়েছিল। এটি ছিল প্রথম নিউট্রিনো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সনাক্তকৃত সুপারনোভা। সুপারনোভার আপেক্ষিক নৈকট্য এর বর্ণনা দিয়েছিল। এটী সুপারনোভা'র আধুনিক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছিল।[৪৯][৫০]
২০ শতকে সুপারনোভা'র আবিষ্কার ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো। ১৯৯০ সালে সুপারনোভা পর্যবেক্ষণের জন্য কিছু স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম আবিষ্কার হয়। ১৯৯২ সালে লেইজনার মানমন্দিরে সুপারনোভা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি প্রোগ্রাম বানানো হয়। একই বছরে এতে বের্কলি অটোমেটেড ইমেজিং টেলিস্কোপ প্রোগ্রামও স্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালে লিক মানমন্দিরে ক্যাটযম্যান অটোমেটিক ইমেজিং টেলিস্কোপের স্থাপনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী প্রগ্রামগুলো সফল হয়। ২০০ সালে লিক প্রোগ্রাম ৯৬ টি সুপারনোভা আবিষ্কার করেছিল। যার কারণে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা প্রোগ্রাম হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
১৯৯০ সালে একটি প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে টাইটানিয়াম-৪৪'র গামা রশ্মি এর মাধ্যমে সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ পাওয়া সম্ভব। এর হাফ-লাইফ হলো ৯০ বছর। এর ফলে গামা রশ্মি সহজেই গ্যালাক্সিতে প্রবেশ করতে পারবে। এর ফলে খুব সহজেই আমরা গত সহস্রাব্দের কোনো সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ শনাক্ত করতে পারি। পূর্বে ২ টি অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছিল। ক্যাশিওপিয়া-এ এবং আর.এক্স. জে০৮৫২.০-৪৬২২ যা ভেলা সুপারনোভা রেমন্যান্ট এর অধিক্রমণের মাধ্যমে আবিষ্কার হয়েছিল।[৫১]
এই অবশিষ্টাংশটি (আরএক্স জে০৮৫২.০-৪৬২২) অপেক্ষাকৃত বড় ভেলা সুপারনোভা রেমন্যান্ট এর সামনে দেখা গিয়েছিল।[৫২] টাইটানিয়াম-৪৪ এর অবক্ষয় থেকে প্রাপ্ত গামা রশ্মি দেখিয়েছিল যে এটি সম্ভবত ১২০০ সালের একটি বিস্ফোরণের অংশ, কিন্তু এর কোনো ঐতিহাসিক সংরক্ষণ নেই। গামা রশ্মি এবং এক্স রশ্মির প্রবাহ নির্দেশ করেছিল যে সুপারনোভাটি আমাদের অপেক্ষাকৃত কাছি ছিল (খুব সম্ভবত ২০০ পারসেক)। যদি তাই হয় তবে এটি খুব বিষ্ময়কর। কারণ ২০০ পারসেক এর কম দূরত্বে সুপারনোভাগুলো বছরে কমপক্ষে ১০০,০০০ বার চোখে পড়ে।[৫৩]
'এসএন ২০০৩এফজি' ২০০৩ সালে একটি নতুন বা গঠন হচ্ছে এমন গ্যালাক্সিতে আবিষ্কৃত হয়েছিল। রিয়েল-টাইম গবেষণার সময় এই সুপারনোভা উঠে আসে। এর ফলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্ন উঠে এসেছিল যেহেতু এটিকে দেখতে চন্দ্রশেখর সীমা এর বেশি ভরের মনে হচ্ছিল।[৫৫]
এসএন ২০০৬জিওয়াই সুপারনোভা যা এনজিসি ১২৬০ নামক একটি গ্যালাক্সিতে (২৪০ মিলিয়ন আলোক-বর্ষ দূরে) দেখা গিয়েছিল, ছিল ২০০৭ এর অক্টোবর পর্যন্ত সবচেয়ে উজ্জ্বল সুপারনোভা। এই বিস্ফোরণের ঐজ্জ্বল্যতা ছিল আগের অন্যান্য আবিষ্কৃত সুপারনোভার ঔজ্জ্বল্যতার কমপক্ষে ১০০ গুণ বেশি।[৫৬] সুপারনোভাটি যে তারকা থেকে উৎপন্ন হয়েছিল সেটি ছিল সূর্য থেকে ১৫০ গুণ বেশি ভরসম্পন্ন। যদিও সুপারনোভাটির বৈশিষ্ট্য আই.এ সুপারনোভার মতোই ছিল তবুও এর বর্ণালিতে হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।[৫৭] ধারণা করা হয় 'এসএন ২০০৬জিওয়াই' ছিল দুইটি অস্থায়ী সুপারনোভার একত্রিত রূপ।[৫৮][৫৯] এসএন ২০০৫এপি, যা রবার্ট কিম্বি আবিষ্কার করেছেন ছিল এসএন ২০০৬জিওয়াই এর মতোই সুপারনোভা। এবং এটি ছিল সাধারণ টাইপ ২ সুপারনোভার থেকে ৩০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল।[৬০]
২১ মে ২০০৮ সালে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেছিল যে তারা একটি ক্যামেরায় সদ্য বিস্ফোরণরত একটি সুপারনোভা শনাক্ত করেছে। পৃথিবী থেকে ৮৮ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এঞ্জিসি ২৭৭০ তে পর্যবেক্ষণের সময় হঠাৎ এক্স রশ্মির বিস্ফোরণ দেখে এসএন ২৭৭০ আবিষ্কার করা হয়ছিল। অবশেষে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়'র আলিসিয়া সোডারবার্গ এটি নিশ্চিত হয়েছিল যে এই বড়ো এক্স রশ্মির বিস্ফোরণটি ছিল সুপারনোভার জন্মের সূচনা।[৬১]
একজন শখের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্যারোলিন মুর, পাকেট অবজারভেটরি সুপারনোভা সার্চ টিম'র সদস্য ২০০৮ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে এসএন ২০০৮এইচএ নামক একটি সুপারনোভা পেয়েছিলেন। তখন মহিলা বিজ্ঞানী ক্যারোলিন মুরের বয়স ছিল ১৪ বছর। তাঁকে সবচেয়ে ছোট বয়সী সুপারনোভা আবিষ্কারক বলা হয়।[৬২][৬৩] ২০১১ সালের জানুয়ারিতে, ১০ বছরের এক মেয়ে 'ক্যাথরিন আরোরা গ্রে' বলেছেন যে তিনি একটি সুপারনোভা শনাক্ত করেছেন।[৬৪] তাই বর্তমানে তাঁকেই বলা হয় সবচেয়ে ছোট সুপারনোভা আবিষ্কারক। মিস. গ্রে, তাঁর বাবা এবং এক বন্ধু মিলে এসএন ২০১০এলটি নামক একটি সুপারনোভা দেখতে পায় যা পৃথিবী থেকে ২৪০ মিলিয়ন দূরে ইউসিজি ৩৩৭৮ গ্যালাক্সির ক্যামেরোপ্যারড্যালিস নক্ষত্রমন্ডলে অবস্থিত।
২০০৯ সালে এন্টার্টিকার গভীর স্থানের বরফ কোরে কঠিন কিছু পায় যেগুলো ১০০৬ এবং ১০৫৪ সালের সুপারনোভার সাথে সম্পর্কযুক্ত। সুপারনোভার গামা রশ্মি দ্বারা নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরী হয়েছিল। এই পদ্ধতিটি দ্বারা কয়েক হাজার বছর আগের সুপারনোভা সম্পর্কে তথ্য জানা যাবে।[৬৬]
২০১০ সালের ১৫ নভেম্বর, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নাসা'র চন্দ্র এক্স-রশ্মি মানমন্দির ব্যবহার করে ঘোষণা দিলেন, 'মেজিয়ার ১০০' গ্যালাক্সিতে 'এসএন ১৯৭৯সি' সুপারনোভা পরীক্ষা করার সময় তারা মাত্র ৩০ বছর বয়সী একটি কৃষ্ণ বিবর দেখতে পান। নাসা আরও সম্ভাবনা দেখিয়েছে যে কৃষ্ণ বিবরটি হতে পারে ঘূর্ণায়মান নিউট্রন তারা যা উচ্চ শক্তির কণিকা উৎপন্ন করে।[৬৭]
২০১১ সালের ২৪ আগস্ট, প্যালমার ট্রান্সিয়েন্ট ফ্যাক্টরির স্বয়ংক্রিয় জরিপ পিনহুইল গ্যালাক্সি এম১০১-এ আই.এ ধরনের সুপারনোভা 'এসএন ২০১১ এফএ' এর বিস্ফোরণের অল্প সময়ের মধ্যেই আবিষ্কার করে। ২১ মিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরের এই সুপারনোভার অস্তিত্ব আবিষ্কার করে খুব তাড়াতাড়ি সময়েই। এর ফলে বিজ্ঞানীরা এই ধরনের সুপারনোভার জন্ম সম্পর্কে জানতে সক্ষম হবে।[৬৮]
২০১২ সালের ১৬ই মার্চ টাইপ ২ সুপারনোভা যার নাম এসএন ২০১২এডব্লিউ, এম৯৫ গ্যালাক্সিতে আবিষ্কার করেন।[৬৯][৭০][৭১]
২০১৪ সালের জানুয়ারির ২২ তারিখে, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন অবজারভেটরিতে ছাত্ররা এম৮২ গ্যালাক্সি(সিগার গ্যালাক্সি)'র কাছাকাছি 'এসএন ২০১৪জে' নামক সুপারনোভা আবিষ্কার করেন। এটি পৃথিবী থেকে ১২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। সাম্প্রতিক কালে এই সুপারনোভাটিই হলো এই দশকের সবচেয়ে কাছের পর্যবেক্ষণকৃত সুপারনোভা।[৭২]
আনুমানিক ভাবে বলা হয় যে আমাদের ছায়াপথ গ্যালাক্সির আকার অনুযায়ী প্রতি ৫০ বছরে একবার সুপারনোভা বিস্ফোরণ হবে। এই মানটি আসল মান থেকে উচ্চ। এর মানে মহাকাশের ধূলিকণার কারণে পৃথিবী থেকে ভালো করে এগুলো দেখা যায়না। নতুন যন্ত্রপাতি যেমনঃ নিউট্রিনো ডিটেক্টর, তড়িৎচৌম্বক বর্ণালি দিয়ে হতে পারে ভবিষ্যতে এরকম সমস্যা থেকে মুক্তির পথ। পরবর্তীতে আমরা মহাকাশের ধূলিকণা ভেদ করেও হয়তো সুপারনোভাগুলো দেখতে পাবো।[৩৬]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-১৯।