অনাহিতা রাতেবজাদ (দারি/পশতু:آناهیتا راتبزاد; নভেম্বর ১৯৩১ - ৭সেপ্টেম্বর ২০১৪) একজন আফগান সমাজতান্ত্রিক ও মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাজনীতিবিদ এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি অব আফগানিস্তান (পিডিপিএ) ও বাবরক কারমালের নেতৃত্বে বিপ্লবী পরিষদের সদস্যা ছিলেন।[১] তিনি আফগান পার্লামেন্টে নির্বাচিত প্রথম মহিলাদের মধ্যে একজন, রাতেবজাদ ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রের উপপ্রধান ছিলেন।[১]
রাতেবজাদর জন্ম কাবুল প্রদেশের গুলদারায়।[২] তার বাবা ছিলেন আমানউল্লাহ খানের সংস্কারের একজন উকিল। এর ফলে নাদের খানের শাসনামলে ১৯২৯ সালের ইরানে তার বাধ্যতামূলক নির্বাসন হয়। রতেজবাদ ও তার ভাই খারাপ পরিস্থিতিতে তাদের বাবাকে ছাড়া বড় হয়েছেন। তিনি ১৫ বছর বয়সে ডঃ কেরামুদ্দিন কাকরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি সেই সময়ের খুব অল্প সংখ্যক বিদেশী-শিক্ষিত আফগান সার্জনের একজন ছিলেন। রাতেবজাদ কাবুলের ফ্রাঙ্কোফোন মালালা লাইসিতে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত স্টেট ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের স্কুল অব নার্সিং থেকে নার্সিংয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিদ্যালয়ে নারীদের মেডিসিনে ভর্তির অনুমতি দেয়ায় তিনি প্রথম ব্যাচের অন্তর্ভুক্ত হন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতক হন।
তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা তার ও তার স্বামী ডক্টর কেরামুদ্দিন কাকারের মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করেছিল, যিনি তার রাজনৈতিক মতামত ও কর্মকান্ড অনুমোদন করেননি, কারণ তাকে জহির শাহের অনুগত হিসেবে বিবেচনা করা হত। রাতবেজদ ১৯৭৩ সালে তাদের বৈবাহিক বাড়ি ছেড়ে চলে যান। যদিও তারা কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘোষণা করেননি, তারা আলাদাভাবে বসবাস করত এবং যোগাযোগ এড়িয়ে চলত। তাদের এক মেয়ে ও দুই ছেলে সহ তিন সন্তান ছিল। শুধুমাত্র তার মেয়ে তার রাজনৈতিক পথ অনুসরণ করে এবং আফগানিস্তানের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপিএ) সদস্যা হয়; তার ছেলেরা তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।
রতবজাদ ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে ও সমগ্র ৬০-এর দশকে প্রথম প্রকাশ্যে স্পষ্টবাদী সামাজিক ও রাজনৈতিক আফগান-নারী আন্দোলনকর্মীদের একজন ছিলেন। তিনি ১৯৫৭ সালে সিলনে এশিয়ান মহিলা সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফগানিস্তান রাজ্যের প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম আফগান-মহিলা প্রতিনিধি দলেরও অংশ ছিলেন।
দাউদ খানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পর্দা ঐচ্ছিক[৩] হয়ে গেলে, রতেবজাদ ১৯৫৭ সালে মহিলা নার্সদের একটি দলকে কাবুলের আলিয়াবাদ হাসপাতালে পুরুষ রোগীদের উপস্থিতির জন্য নিয়ে যান।
রতেবজাদ ১৯৬৪ সালে ডেমোক্রেটিক অর্গানাইজেশন অব আফগান উইমেন (ডিওএডব্লিউ) প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুসরণ করেনি;[৪] ২০১৩ সালে রাহনওয়ার্ড জরায়ব লিখেছিলেন যে "ডিওএডব্লিউ ১৩৪০-এর দশকে (১৯৬০-এর দশকে) প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন ছিল, যা বিদেশী ছিল অর্থায়িত বা সমর্থিত নয়। সংগঠনের সদস্যরা বুদ্ধিজীবী নারীরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে নারীর অধিকারের জন্য প্রচার ও কাজ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। "