অনুত্তরযোগতন্ত্র

অণুত্তরযোগতন্ত্র বা ব্লা-না-মেদ-পা'ই-র্গ্যুদ (ওয়াইলি: bla na med pa'i rgyud) একটি বৌদ্ধ তন্ত্র বিশেষ।

তিব্বতী বৌদ্ধধর্ম

[সম্পাদনা]

র্ন্যিং মা ধর্মসম্প্রদায়ের মহাযোগযানকে অণুত্তরযোগতন্ত্রের সমতুল বলে ধরা হয়।[][] তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে গ্সার-মা বা নতুন অনুবাদ বৌদ্ধসম্প্রদায়গুলি চর্যাতন্ত্রযান, ক্রিয়াতন্ত্রযান, যোগতন্ত্রযান ও অণুত্তরযোগতন্ত্র এই চার ধরনের তন্ত্রের মধ্যে অণুত্তরযোগতন্ত্রকে সর্বোত্তম বলে মনে করে। এই তন্ত্র মহামুদ্রা তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই তন্ত্রের মাধ্যমেই গৌতম বুদ্ধ প্রজ্ঞা ও ধ্যানের মাধ্যমে বোধিলাভের পথের শিক্ষাদান করেছেন বলে গ্সার-মার গেলুগ ধর্মসম্প্রদায় মনে করেন।[] তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে এই তন্ত্র উৎপত্তিক্রমসম্পন্নক্রম এই দুইটি স্তরে সাধনা করা হয়।[] ব্কা'-ব্র্গ্যুদ ধর্মসম্প্রদায়ের কার্মা-ব্কা'-ব্র্গ্যুদ ধর্মীয় গোষ্ঠীর তৃতীয় র্গ্যাল-বা-কার্মা-পা রাং-'ব্যুং-র্দো-র্জে দ্বারা রচিত জাব-মো-নাং-দোন নামক বিখ্যাত তিব্বতী গ্রন্থে এই তন্ত্র সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে।[]

বিভাগ

[সম্পাদনা]

গুহ্যসমাজ, যমান্তক, চক্রসম্বর, হেবজ্রকালচক্র এই পাঁচ ধরনের অণুত্তরযোগতন্ত্র প্রধানত মহাযোগতন্ত্র, যোগিনীতন্ত্র ও অদ্বৈততন্ত্র এই তিন ভাগে বিভক্ত।

মহাযোগতন্ত্র

[সম্পাদনা]

পালযুগে উদ্ভূত মহাযোগতন্ত্রকে তিব্বতে ফা-র্গ্যুদ (ওয়াইলি: pha rgyud) বলা হয়। শাক্যকাগ্যু ধর্মসম্প্রদায়ের মতে এই তন্ত্র আনন্দদায়ক সচেতনতার অভ্যাসের ওপরে জোর দেয়। পরবর্তীকালে গেলুগ ধর্মসম্প্রদায় এই তন্ত্রকে মায়াকায়ার মাধ্যমে বুদ্ধত্বপ্রাপ্তির সাধন হিসেবে উল্লেখ করে।[] গুহ্যসমাজযমান্তক এই তন্ত্রের দুইটি ভাগ।

যোগিনীতন্ত্র

[সম্পাদনা]

যোগিনীতন্ত্রকে তিব্বতে মা-র্গ্যুদ (ওয়াইলি: ma rgyud) বলা হয়। চক্রসম্বর, হেবজ্র ও চণ্ডমহারোষণ এই তিনটি তন্ত্র যোগিনীতন্ত্রের অন্তর্গত।[][] এই তন্ত্রে তৃষ্ণার সদ্ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে প্রভাস্বরের উপর মনোযোগ নিবদ্ধ করা হয়।[]

অদ্বৈততন্ত্র

[সম্পাদনা]

এই তন্ত্রে ক্রোধ ও তৃষ্ণা উভয়কে অবিদ্যাকে প্রতিষেধকরূপে ব্যবহার করা হয়। কালচক্র এই তন্ত্রের একমাত্র উদহারণ, যদিও শাক্য ধর্মসম্প্রদায় হেবজ্রকেও এই তন্ত্রের অন্তর্গত করে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Dudjom Rinpoche, The Nyingma School of Tibetan Buddhism: Its Fundamentals and History, Wisdom Publications, 2002. আইএসবিএন ০-৮৬১৭১-১৯৯-৮. page 283
  2. Gyatso, Tenzin (১৯৯৭)। The Gelug/Kagyu Tradition of Mahamudra। New York: Snow Lion Publications। পৃষ্ঠা 243। আইএসবিএন 1-55939-072-7  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  3. Mahamudra Tantra: The Supreme Heart Jewel Nectar, page 20, Tharpa Publications (2005) আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৪৮০০৬-৯৩-৭
  4. Beer, Robert (২০০৪)। The Encyclopedia of Tibetan Symbols and Motifs। Serindia Publications Inc.। পৃষ্ঠা 142আইএসবিএন 1-932476-10-5 
  5. Schaeffer, Kurtis R. (1995). The Englightened Heart of Buddhahood: A Study and Translation of the Third Karma pa Rang byung rdo rje's Work on Tathagatagarbha. (Wylie: de bzhin pa'i snying po gtan la dbab pa). University of Washington. Source: [১] (accessed: Friday February 12, 2010), p.16.
  6. Essence of Vajrayana: The Highest Yoga Tantra Practice of Heruka Body Mandala, Tharpa Publications (1997) আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৪৮০০৬-৪৮-৭
  7. Guide to Dakini Land: The Highest Yoga Tantra Practice of Buddha Vajrayogini, page 3, Tharpa Publications (2nd. ed., 1996) আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৪৮০০৬-৩৯-৫
  8. Simmer-Brown, Judith (২০০২)। Dakini's Warm Breath:The Feminine Principle in Tibetan Buddhism। Boston & London: Shambhala Publications Inc.। পৃষ্ঠা 141আইএসবিএন 978-1-57062-920-4 

আরো পড়ুন

[সম্পাদনা]