অপটিক স্নায়ু | |
---|---|
স্নায়ুসংস্থান | দর্শন ইন্দ্রিয় |
শনাক্তকারী | |
মে-এসএইচ | D009900 |
নিউরোনেমস | 289 |
টিএ৯৮ | A14.2.01.006 A15.2.04.024 |
টিএ২ | 6183 |
এফএমএ | FMA:50863 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
করোটিক স্নায়ু |
---|
|
অপটিক স্নায়ু এছাড়াও করোটিক স্নায়ু II বা কেবল CN II নামে পরিচিত, হচ্ছে এক জোড়া করোটিক স্নায়ু যা রেটিনা থেকে মস্তিষ্কে দর্শন অনুভূতি বহন করে। মানুষের মধ্যে, অপটিক স্নায়ু বিকাশের সপ্তম সপ্তাহে অপটিক বৃন্ত থেকে উদ্ভূত হয় এবং রেটিনার গ্যাংলিওন কোষের অ্যাক্সন ও গ্লিয়াল কোষ দ্বারা গঠিত হয়; এটি অপটিক ডিস্ক থেকে অপটিক কায়জমা পর্যন্ত প্রসারিত হয় এবং অপটিক ট্রাক্ট হিসাবে ল্যাটারাল জেনিকুলেট নিউক্লিয়াস, প্রাকটেকটাল ক্ষেত্র এবং সুপিরিয়র কলিকুলাস পর্যন্ত ব্যপ্ত থাকে।[১][২]
অপটিক স্নায়ু বারো জোড়া করোটিক স্নায়ুর মধ্যে দ্বিতীয় জোড় হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যদিও এটি প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ নয়, বরং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ, কারণ ভ্রুণীয় বিকাশের সময় এটি ডায়েনসেফালনের (অপটিক বৃন্ত) একটি বর্ধিত থলি থেকে উদ্ভূত হয়। এর ফলে, অপটিক স্নায়ুর তন্তুগুলো প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের শোয়ান কোষের পরিবর্তে অলিগোডেনড্রোসাইট থেকে উৎপন্ন মাইলিন আবরণী দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে এবং মেনিনজেসের মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় বিরাজ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] গুলেন বারি সিনড্রোমের মতো প্রান্তীয় স্নায়ুরোগসমূহ অপটিক স্নায়ুকে প্রভাবিত করে না। তবে, সাধারণত অপটিক স্নায়ু বাকি এগারো জোড়া করোটিক স্নায়ুর সাথেই শ্রেণীবদ্ধ হয় এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
অপটিক স্নায়ু প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের এপিনিউরিয়াম, পেরিনিউরিয়াম এবং এন্ডোনিউরিয়ামের বদলে মেনিনজেসের ( ডুরা , অ্যারাকনয়েড, এবং পায়া ম্যাটার) তিনটি স্তর দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। স্তন্যপায়ীদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের তন্তুপথগুলোর (Fiber tracts) পুনরুতপাদনশীলতার ক্ষমতা প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের গুলোর তুলনায় একেবারেই কম।[৩] তাই, বেশিরভাগ স্তন্যপায়ীদের ক্ষেত্রে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে অপরিবর্তনীয় অন্ধত্ব সৃষ্টি হয়। রেটিনা থেকে আসা তন্তুগুলো মস্তিষ্কের অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কের নয়টি প্রাথমিক দর্শন নিউক্লিয়াসে চলে যায়, যা প্রাথমিক দর্শন কেন্দ্রে একটি প্রধান রিলে যোগান দেয়।
অপটিক স্নায়ু রেটিনার গ্যাংলিওন কোষের অ্যাক্সন এবং গ্লিয়াল কোষ দ্বারা গঠিত। প্রতিটি মানব অপটিক স্নায়ুতে ৭,৭০,০০০ থেকে ১৭ লাখ স্নায়ু তন্তু থাকে,[৪] যা শুধু একটিমাত্র রেটিনার গ্যাংলিওন কোষের অ্যাক্সন। ফোভিয়াতে, যা অতিরিক্ত আলো সংবেদী, এই গ্যাংলিওন কোষগুলো ৫ টির মত ফটোরিসেপ্টর কোষের সাথে সংযোগ স্থাপন করে; তবে রেটিনার অন্যান্য অংশে, তারা কয়েক হাজার ফটোরিসেপ্টর কোষের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারে।
অপটিক নার্ভ উজ্জ্বলতা, রঙ এবং ছবির সঠিক বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার দৃষ্টিলব্ধ তথ্য মস্তিষ্কে প্রেরণ করে। এটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্নায়বিক প্রতিবর্তের জন্য প্রয়োজনীয় স্নায়ু উদ্দীপনা বহন করে: আলোক প্রতিবর্ত এবং উপযোজন প্রতিবর্ত। আলোক প্রতিবর্ত দ্বারা উজ্জ্বল আলোতে পিউপিল দুটির ছোট হয়ে যাওয়াকে বোঝায়। জায়গা বদল না করে, কেবল বস্তু ও চোখের মধ্যকার দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখেই যে কোন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুকে সুস্পষ্টভাবে দেখার জন্য চোখে যে বিশেষ ধরনের প্রতিবর্ত ক্রিয়া সংঘটিত হয় তাকে উপযোজন প্রতিবর্ত বলে। [১]
অপটিক স্নায়ু রেটিনার যে জায়গা দিয়ে চোখ থেকে বের হয়ে যায়, সেখানে ফটোরিসেপ্টর কোষ না থাকার কারণে চোখের অন্ধবিন্দুটি সৃষ্টি হয়।[১]
অপটিক স্নায়ুর ক্ষতি সাধারণত দৃষ্টিশক্তির সম্ভাব্য এবং স্থায়ী মারাত্মক ক্ষতি ঘটায়, তেমনি একটি অস্বাভাবিক আলোক প্রতিবর্ত সৃষ্টি করে, যা স্নায়ুর ক্ষতি শনাক্তকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।