অমল আল্লানা | |
---|---|
জন্ম | [১] | ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭
মাতৃশিক্ষায়তন | ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা |
পেশা | মঞ্চনাটক পরিচালক, শিক্ষাবিদ[২] |
কর্মজীবন | ১৯৭০–বর্তমান |
অমল আল্লানা একজন ভারতীয় মঞ্চনাটক পরিচালক, মঞ্চ দৃশ্য পরিকল্পক ও মঞ্চপোশাক পরিকল্পক যিনি বর্তমানে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার সভাপতি পদে কর্মরত আছেন। এছাড়াও, তিনি ২০০০ সাল থেকে, তার ও তার স্বামী নিসার আল্লানার সহপ্রতিষ্ঠিত, ড্রামাটিক আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন একাডেমি পরিচালনা করে থাকেন।[৩][৪][৫] তিনি ৫৫ টিরও বেশি মঞ্চনাটক পরিচালনা করেছেন, যেগুলোর অনেক মঞ্চনাটকই ভারতীয় মঞ্চনাটক জগতে ব্যাপক জনপ্রিয়।[৩][৬][৭] ১৯৯৮ সালে তাকে পরিচালনা ক্ষেত্রে সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়।[৮]
১৯৪৭ সালে মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন অমল আল্লানা। তার পিতার নাম এব্রাহিম আলকাজি এবং মাতার নাম রোশন আলকাজি। তার বাবা ছিলেন আরব বংশোদ্ভূত ও তার মাতা এসেছিলেন গুজরাতি ইসমাইল খোজা পরিবার থেকে। তার বাবা ছিলেন ভারতের বিখ্যাত মঞ্চনাটক পরিচালক এবং "ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা"র প্রথম পরিচালক।
বাবা থিয়েটার অঙ্গনে বিখ্যাত বলে খুব ছোট বয়স থেকেই অমল ভারতের বিখ্যাত মঞ্চ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেখতে পেয়েছিলেন। মঞ্চনাটক পরিচালক আলেক পদমসী ছিলেন তার মামা। এছাড়া তার ভাই ফয়সাল আলকাজি পরবর্তী জীবনে মঞ্চনাটক পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।
স্কুলজীবন শেষ করার পর তিনি ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি স্নাতক হন এবং সেখানে থেকে নির্দেশনায় গিরিশ ঘোষ পুরস্কার ও সেরা ছাত্র বিভাগে ভারত পুরস্কার লাভ করেন।[৩][৯]
১৯৬৯ সালে তিনি আগের পূর্ব জার্মানি সরকারের থেকে বৃত্তি লাভ করেন ও উচ্চশিক্ষার্থে পূর্ব জার্মানি গমন করেন।[১০] এছাড়াও তিনি অধিকতর জ্ঞানার্জনের জন্য জাপান গমন করেছিলেন।[৩]
পূর্ব জার্মানি থেকে ফেরার পর ১৯৭০ সালে তিনি উর্দু মঞ্চনাটক তিন টাকে কা সং পরিচালনা করেন।[১১] এরপর থেকে তিনি পঞ্চান্নটিরও অধিক মঞ্চনাটকের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তিনি চন্ডিগড়ের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় মঞ্চনাটক বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৭৭-৭৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময় তিনি দ্য এক্সসেপশন অ্যান্ড দ্য রুল মঞ্চস্থ করেন। এটিতে অভিনয় করেছিলেন পাঞ্জাবি কবি মঞ্জিত তিওয়ানা, অনুপম খের, অনিতা কাঁওয়ার সহ আরো অনেকে।
১৯৭৬ সালে তিনি আধে আধুরে মঞ্চনাটকের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৩ সালে বিদেশি নাটকের ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হিম্মত মাই মঞ্চনাটকের সাথেও যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি বিরজিস কাদার কা কুনবা (১৯৮০), আসাধ কা এক দিন (১৯৮১), মহাভোজ (১৯৮২), আওরাত ভলি রামকালি (১৯৮৪), রাজা যশবন্ত সিং (১৯৮৯) সহ আরও অনেক নাটকের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তিনি আধে-আধুরে, বেগম বার্ভে, চার চৌঘি ও তিন টাকে কা সং এর মত দূরদর্শন নাটক পরিচালনা করেছেন।
২০০৬ সালে তিনি নটী বিনোদিনী নামের একটি মঞ্চনাটক প্রযোজনা করেন, যেটির কাহিনি বাঙালি মঞ্চাভিনেত্রী বিনোদিনী দাসীর জীবনী অবলম্বনে লেখা হয়েছিল। মঞ্চনাটকটির জন্য দুই বছর ধরে গবেষণা করেছিলেন তিনি। মঞ্চনাটকটি দিল্লিতে মঞ্চস্থ হয়েছিল। মঞ্চ নাটকটিকে সমালোচক রমেশ চন্দর তার সর্বোত্তম কীর্তি বলে অভিহিত করেছেন।[১২][১৩][১৪]
১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মত আয়োজিত হয় ভারত রঙ্গ মহোৎসব। মঞ্চনাটকভিত্তিক এই উৎসবে প্রথম যে নাটকটি মঞ্চস্থ হয় সেটি ছিল নাগমন্ডল যেটি পরিচালনা করেছিলেন তিনি।[১৫] ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি এবং তার স্বামী ড্রামাটিক আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন একাডেমি পরিচালনার সাথে যুক্ত আছেন। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি 'দিল্লি ইবসেন উৎসব'এ মঞ্চনাটক উৎসবের আয়োজন করেছিল।[১৬]
এছাড়াও তিনি গান্ধী (১৯৮২) ও মহেশ ভাটের সারাংশ (১৯৮৪) চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন।[১৭]
তিনি ভারতীয় মঞ্চনাটকের পোশাক নিয়ে দুইটি বই রচনা করেছেন। এগুলো হল:
তিনি নিসার আল্লানার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। নিসার আল্লানা পেশায় একজন ডাক্তার হলেও তার মতই মঞ্চে কাজ করেন। ১৫ বছর বয়সে তার বাবার থিয়েটার গ্রুপে নিসার আল্লানার সাথে তার প্রথম দেখা হয়। একমাত্র কন্যা জুলেখা চৌধুরিও মঞ্চনাটকের সাথে যুক্ত আছেন। জুলেখা চৌধুরি মঞ্চনাটক পরিচালনা করে থাকেন।[৩]