অমল কুমার রায়চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ জুলাই ২০০৫ | (বয়স ৮১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | রায়চৌধুরী সমীকরণ |
দাম্পত্য সঙ্গী | নমিতা সেন[১] |
সন্তান | অম্লানভা, অসীমভা, মধুক্ষরা এবং পারোঙ্গামা [২] |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞানী |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | আশুতোষ কলেজ[৩] ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা |
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী | নারায়ণ চন্দ্র রানা |
স্বাক্ষর | |
অমল কুমার রায়চৌধুরী (১৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৩ - ১৮ জুন, ২০০৫) একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। আপেক্ষিকতার বিশ্বতত্ত্বে অবদান বিশেষ করে রায়চৌধুরী সমীকরণের জন্য তিনি বিখ্যাত। সাধারণ আপেক্ষিকতায় পেনরোজ-হকিং সিংগুলারিটি তত্ত্বগুলো প্রতিপাদনের জন্য তার এই সমীকরণ খুবই উপযোগী। তার কেবল এই একটি অবদানই পদার্থবিজ্ঞানে এতো গুরুত্বের দাবীদার যে অনেকে তাকে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানীর কাতারে ফেলেন।
রায়চৌধুরী ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই সেপ্টেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সুরেশচন্দ্র রায়চৌধুরী একজন স্কুলশিক্ষক ছিলেন, তিনি ছিলেন গণিতের শিক্ষক। বাবাকে দেখে অণুপ্রাণিত হয়েই ছোটবেলা থেকেই অমল গণিত বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন, গণিতের সমস্যা সমাধান করতে ভালবাসতেন। ১৯৪২ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক এবং ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সেসে যোগ দেন। কিন্তু দীর্ঘ চার বছর গবেষণা করেও কোন তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল বের করতে না পেরে তিনি বেশ হতাশ হয়ে পড়েন। সে সময় তিনি আশুতোষ কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। সে সময় অধ্যাপক নিখিলরঞ্জন সেন সেখানে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব পড়াতেন। অমল অধ্যাপক সেনের সান্নিধ্যে আপেক্ষিকতা তত্ত্ব শিখতে শুরু করেন এবং তার সাহায্যেই প্রথম কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। পরের দিকে তিনি একা একাই গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। গবেষণার এই পর্যায়ে এসেই তিনি তার বিখ্যাত সমীকরণটি আবিষ্কার করেন। কাছাকাছি সময়েই তিনি IACS এ দ্বিতীয় দফায় গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
অমল কুমার রায়চৌধুরী তার সমীকরণটি ১৯৫৩ সালে বের করলেও এটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ করার জন্য তাকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়। ১৯৫৫ সালে তার গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় বিখ্যাত জার্নাল ফিজিক্যাল রিভিউ –তে। এই গবেষণা প্রবন্ধের হাত ধরেই অমল আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তখনো কিন্তু তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেননি। তার পিএইচডি সম্পন্ন হয় ১৯৫৯ সালে।
একজন মেধাবী বিজ্ঞানী হবার পাশাপাশি অমল কুমার রায়চৌধুরী একজন প্রাণবন্ত শিক্ষকও ছিলেন। মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে তার শেষ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়। বই পড়তে ভালবাসতেন, ছিলেন রবীন্দ্রসংগীতের ভক্ত। রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ রাখতেন, প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ না করলেও বিভিন্ন প্রবন্ধে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা উল্লেখ করেছেন।
একটি একক টাইম-লাইক ভেক্টর ফিল্ড এর জন্য রায়চৌধুরী সমীকরণটিকে এভাবে লেখা যায়-
যেখানে
যথাক্রমে শিয়ার টেনসরের (অ-ঋণাত্বক) চতুর্মুখী পরিবর্তন
এবং ভোর্টিসিটি টেনসর
এখানে,
সম্প্রসারণ টেনসর এবং হল এর ট্রেস, যাকে বলা হয় সম্প্রসারণ স্কেলার, এবং
হল হাইপারপ্লেনের অর্থোগোনাল থেকে পর্যন্ত প্রজেকশন টেনসর। এছাড়াও, ডট ডিনোট ব্যবকলন গণনা করা সঠিক সময়ের সাপেক্ষে পার্থক্য বোঝায়। অবশেষে, টাইডাল টেনসর এর ট্রেসকে
হিসাবেও লেখা যেতে পারে।
একে কখনও কখনও রায়চৌধুরী স্কেলার বলা হয়।