অমৃতেশ্বর মন্দির, অমৃতপুরা | |
---|---|
গ্রাম | |
স্থানাঙ্ক: ১৩°৪৪′২৮″ উত্তর ৭৫°৫১′১৪″ পূর্ব / ১৩.৭৪১° উত্তর ৭৫.৮৫৪° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | কর্ণাটক |
জেলা | চিকমাগালুর জেলা |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | কন্নড় |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
অমৃতেশ্বর মন্দির ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের চিকমাগালুর জেলার চিকমাগালুর শহরের অমৃতপুর গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির। মন্দিরটি চিকমাগালুর শহর থেকে ৬৭ কিমি উত্তরে অবস্থিত। হাসান থেকে এর দূরত্ব ১১০ কিমি এবং শিবমোগ্গা থেকে ৫০ কিমি দূরে এনএইচ ২০৬ রাস্তার ধারে। অমৃতেশ্বর মন্দিরের জন্যই অমৃতপুরার পরিচিতি। মন্দিরটি ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দে হৈসল রাজা দ্বিতীয় বীর বল্লালের অধীনে অমৃতেশ্বর দণ্ডনায়ক তৈরি করেছিলেন।[১]
মন্দিরটি হৈসল স্থাপত্য রীতি মেনে একটি প্রশস্ত খোলা নাটমন্দির সহ নির্মিত।[২] মন্দিরটির ঠিক বাইরে একটি প্রাচীর রয়েছে। এই প্রাচীরটি নির্মাণকালের সময়কার আদি প্রাচীর। এতে অনন্য শৈলীর বৃত্তাকার শিল্পকলা খোদিত রয়েছে। মন্দিরটির একটি বিমান (মন্দির এবং টাওয়ার) রয়েছে। তাই এটি একটি এককুট নকশার মন্দির।[৩] এতে একটি বদ্ধ নাটমন্দির (হল) রয়েছে যা মন্দিরের গর্ভগৃহটিকে বড় খোলা আরও একটি নাটমন্দির সাথে সংযুক্ত করে।
এটি একটি মাঝারি আকারের হৈসল মন্দির যার নির্দিষ্ট কিছু বাস্তু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর নাটমন্দির গঠন এবং আকার বেলাবাদির বীর নারায়ণ মন্দিরের মতো। উন্মুক্ত নাটমন্দিরটিতে ২৯টি সারি রয়েছে।[৪] বদ্ধ নাটমন্দিরটিতে একটি পাশের বারান্দা সহ নয়টি সারি রয়েছে যার দক্ষিণ দিক ধরে গেলে একটি পৃথক মন্দিরের দিকে নিয়ে যায়। মন্দিরটির বর্গাকার আকৃতির উপর রয়েছে এর মূল উপরিকাঠামো ( শিখর ) যা কীর্তিমুখের ভাস্কর্য (দানবের মুখ) ও ক্ষুদ্র আলংকারিক টাওয়ার ( এডিকিউল ) দ্বারা শোভিত। উপরের কাঠামোর নীচে যে স্থানে সাধারণ হিন্দু দেবতাদের সাধারণত দেখা যায় সেখানে সেই ধরনের প্যানেল অনুপস্থিত। দেয়ালের গোড়ায় পাঁচটি ছাঁচ রয়েছে যা শিল্প সমালোচক ফোকেমার মতে একটি "পুরানো হৈসল শৈলী[৫]"। সুকানাসি, ভেস্টিবুলের উপরে অবস্থিত টাওয়ার যা গর্ভগৃহকে বদ্ধ নাটমন্দিরের সাথে সংযুক্ত করে।[৬] সিংহের সাথে লড়াই করা "সালা" এর আসল হৈসল প্রতীক রয়েছে।[৭][৮]
নাটমন্দিরের ছাদকে ঘিরে স্তম্ভের সারি রয়েছে। নাটমন্দিরটি অনেক বড় গম্বুজ বিশিষ্ট অভ্যন্তরীণ ছাদের কাঠামো নিয়ে গঠিত। যেগুলি ফুলের নকশা দিয়ে সুশোভিত।[৯] খোলা মণ্ডপের বাইরের প্রাচীরে হিন্দু মহাকাব্যের চিত্র সহ মোট একশ চল্লিশটি ভাস্কর্য রয়েছে। অনেক হৈসল মন্দিরের বিপরীতে যেখানে প্যানেলগুলি ছোট এবং ক্ষুদ্রাকৃতিতে খোদাই করা থাকে, সেখনে এই প্যানেলগুলি তুলনামূলকভাবে বড়। রামায়ণ নিয়ে দক্ষিণ দিকের দেয়ালে সত্তরটি প্যানেলে মূর্তি রয়েছে। পৌরিণিক গল্পগাথাগুলি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক অনুসরণ করে বেশ কিছুটা অস্বাভাবিকভাবে এগিয়ে চলে। উত্তর দিকের দেয়ালে, সব চিত্রই ঘড়ির কাঁটার গতির অভিমুখে নির্মিত। এটি হৈসল স্থাপত্যের একটি আদর্শ নিদর্শন। পঁচিশটি প্যানেলে হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের জীবন চিত্রিত করা হয়েছে এবং বাকি পঁয়তাল্লিশটি প্যানেলে মহাভারত মহাকাব্যের দৃশ্য চিত্রিত করা আছে।[৯]
সুপরিচিত ভাস্কর ও স্থপতি রুভারি মল্লিতাম্মা এই মন্দিরের মূল মণ্ডপের গম্বুজযুক্ত ছাদের কাজ করে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বলে জানা যায়।[১০]
বারান্দার কাছে বড় পাথরের শিলালিপিতে মধ্যযুগীয় কন্নড় কবি জান্নার কবিতা রয়েছে, যিনি কবিচক্রবর্তী ( "কবিদের মধ্যে সম্রাট") নামে সম্মানিত হয়েছিলেন।[১]