ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্তে অবস্থিত অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের অরুণাচলি রন্ধনশৈলী তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভারতীয় রন্ধনশৈলী তালিকায় বিদ্যমান। অরুণাচলীদের খাবারের ধরন উপজাতীয় প্রভাব অনুসারে অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়। অরুণাচলের প্রধান উপজাতি গোষ্ঠীরা হল পতানি, চুকি, আদি এবং নিশি এবং এদের নিজস্ব গৃহস্থালির রন্ধন অরুণাচলি রন্ধনশৈলীতে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে।
উত্তর-পুর্বের অন্যান্য সীমান্তবর্তী রাজ্যের মতো গাঁজন পদ্ধতিতে প্রস্তুত খাবার ও পানীয় অরুণাচলে বিশেষ জনপ্রিয়। গাঁজানো চাল বা বাজরা থেকে তৈরি আপং হল অরুণাচল প্রদেশের একটি জনপ্রিয় মদ্যপ পানীয়।[১] বিভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন প্রকার চাল গেঁজিয়ে মদ প্রস্তুতিতে অরুণাচলিরা সিদ্ধহস্ত।
অরুণাচলের প্রধান খাদ্য হল ভাত। ভাতের সাথে মাছ, মাংস (লুক্টার) এবং অনেক সবুজ শাকসবজির পদ পরিবেশিত হয়। এই রাজ্যে বিভিন্ন জাতের ধান খাদ্যবস্তু হিসাবে গৃহীত হয় ও বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতির উপকরন হিসাবে ব্যবহার হয়য়। সব্জীর মধ্যে অরুনালে লেটুস সবচেয়ে সহজলভ্য এবং অরুণাচলিদের অত্যন্ত পছন্দের সবজি। লেটুসের মধ্যে আদা, ধনে ও কাঁচা মরিচ এবং চিমটি লবণ দিয়ে তা সিদ্ধ করে অরুণাচলিরা একধরনের খাদ্যপদ প্রস্তুত করে যা স্থানীয়ভাবে বেশ জনপ্রিয়। অরুণাচলিরা পাতায় মুড়িয়ে ভাত সিদ্ধ করে এক ধরণের রাইস কেক প্রস্তুত করে। রান্না করা ভাত সংরক্ষণ করার এটি একটি জনপ্রিয় উপায়। তিরাপ এবং চাংলাং-এর মতো পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে খাবার তৈরির পদ্ধতিতে কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
অরুণাচলের স্থানীয় অনেক অনেক বন্য লতা ও গুল্ম স্থানীয় লোকেরা খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে। শুকনো বাঁশের অংকুর রান্নায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাজা বাঁশের অংকুরুও খাদ্য উপাদান হিসাবে বিশেষ জনপ্রিয়।
বন্য পাখি এবং প্রাণী তাদের খাদ্যতালিকার একটি বড় অংশ ছিল, কিন্তু শিকারের উপর আধুনিক বিধিনিষেধের ফলে তারা এখন শিকারী প্রানী ভক্ষন করতে অসমর্থ।