অলীক কল্পকাহিনী |
---|
মাধ্যম |
বর্গবিভাগ |
বিষয়শ্রেণীসমূহ |
অলীক কল্পকাহিনী বা ফ্যান্টাসি কল্পকাহিনীর একটি বর্গ বা শ্রেণী যা সম্পূর্ণভাবে কাল্পনিক কোনও জগতে ঘটে এবং এতে সাধারণত বাস্তবের সাথে মিল আছে এমন কোনও স্থান, ঘটনা বা লোকজনের উল্লেখ পাওয়া যায়না। অধিকাংশ অলীক কল্পকাহিনীতেই মূল আখ্যান, বিষয় বা সংস্থাপন হিসেবে জাদু বা অতিপ্রাকৃত উপাদান ব্যবহৃত হয়। এসবের জগতে অনেক কাল্পনিক প্রাণীও দেখা যায়। বিজ্ঞান বা ভৌতিক বিষয়গুলি এড়িয়ে যাবার কারণে একে সাধারণত কল্পবিজ্ঞান ও ভৌতিক সাহিত্য থেকে আলাদা করে দেখা হয়। তবে উপর্যুক্ত তিনটিই কল্পসাহিত্যের উপবর্গ হওয়ায় এদের মধ্যে মিলও প্রচুর।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে অলীক কল্পকাহিনী ধারাটি প্রধানত মধ্যযুগীয় রূপবিশিষ্ট। অবশ্য ব্যাপক অর্থে, আগেকার দিনের পৌরাণিক কাহিনী ও কিংবদন্তির বহু লেখক, শিল্পী, চলচ্চিত্রনির্মাতা এবং সঙ্গীতশিল্পী থেকে শুরু করে এসময়ের অনেক জনপ্রিয় সৃষ্টিকর্মও অলীক কল্পকাহিনীর অন্তর্ভুক্ত।
অলীক কল্পকাহিনী নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা করা হয়, যেমন ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষা, সাংস্কৃতিক গবেষণা, তুলনামূলক সাহিত্য, ইতিহাস এবং মধ্যযুগীয় গবেষণা। এই ধারায় কাজ হয়েছে জ্বাটান টোডোরোভের কাঠামোগত "লিমিনাল স্পেস" তত্ত্ব থেকে মধ্যযুগতত্ত্ব এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতির মধ্য সম্পর্ক বিবিধ বিস্তৃত ক্ষেত্রে।[১]
যদিও আধুনিককালের অলীক কল্পকাহিনী দুই শতাব্দীরও কম পুরনো, কিন্তু এর পূর্ববর্তী ধারার রয়েছে একটি বৃহৎ এবং ভিন্ন ইতিহাস। ধ্রুপদী পৌরাণীক কাহিনীগুলি অলীক কল্পকাহিনীতে পরিপূর্ণ এবং এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত (এবং সম্ভবত বর্তমান যুগের রূপকথার সঙ্গে অধিক মিল রয়েছে) হোমারের কাজগুলো।[২] তার রচিত ওডিসি অলীক কল্পকাহিনীর সংজ্ঞাকে সমর্থন করে।[৩] প্লেটোর দর্শন অলীক কল্পকাহিনীতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।[৪] মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য অলীক কল্পকাহিনীগুলোর মধ্যে ছিল আরব্য রজনী। উইলিয়াম মরিস এবং জে. আর. আর. টলকিনের মতে মধ্য যুগের ইউরোপীয় সাগাগুলো পরবর্তী সময়ের অলীক কল্পকাহিনীতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।[৫]
ইংরেজি ভাষার সাহিত্যে ভিক্টোরীয় যুগে অলীক কল্পকাহিনীর নতুন ধারার সূচনা হয়; এ ব্যাপারে মেরি শেলি, উইলিয়াম মরিস এবং জর্জ ম্যাকডোনাল্ডের কাজ উল্লেখ্য।