অসন্ধিমিত্রা | |
---|---|
উত্তরসূরি | তিষ্যরক্ষা (প্রধান মহিষী পদে) |
জন্ম | অসন্ধিমিত্রা অসন্ধিবৎ রাজ্য |
মৃত্যু | ২৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পাটলিপুত্র, মৌর্য সাম্রাজ্য |
দাম্পত্য সঙ্গী | অশোক |
প্রাসাদ | মৌর্য রাজবংশ |
ধর্ম | বৌদ্ধ ধর্ম |
অসন্ধিমিত্রা (সংস্কৃত: असन्धिमित्रा,পালি :অসন্ধিমিত্তা) মৌর্য সম্রাট অশোকের প্রধান মহিষী ছিলেন।[১] মহাবংশ(পালি:মহাবংস) নামক সিংহলী বৌদ্ধ গ্রন্থে তাঁকে প্রশংসা করা হয়েছে।[২]
অসন্ধিমিত্রা অসন্ধিবৎ নামক উত্তরাপথের এক ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজকন্যা ছিলেন।এটি উত্তর ভারতে হরিয়ানায় অবস্থিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। [৩] পরবর্তীকালে তাঁর সঙ্গে মৌর্য রাজকুমার অশোকের বিবাহ সম্পন্ন হয়।[৪] অসন্ধিমিত্রার পূর্বপরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে সমসাময়িক কিছু রাজ্যাঙ্ক ও পরবর্তীকালের কিছু গ্রন্থ থেকে তাঁর বিবাহোত্তর জীবন নিয়ে কিছুটা জানা যায়।
অশোক সিংহাসনলাভ করার পর অসন্ধিমিত্রা তাঁর প্রধান মহিষীর মর্যাদা লাভ করেন[৫] এবং ২৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত অশোকের প্রধান পত্নী রূপে মর্যাদা পান।[৬]তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পাটলীপুত্রের প্রাসাদে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অন্য সম্রাজ্ঞী ও উপপত্নীদের তুলনায় প্রভাবশালী ছিলেন[৭]। মহাবংশ নামক সিংহলীগ্রন্থে রয়েছে তিনি সম্রাট অশোকের মৃত্যুর চার বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। এই সম্রাজ্ঞী সন্তানহীনা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[৫] ত্রৈভূমিকথা নামক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে অসন্ধিমিত্রা সম্রাট অশোককে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণে উৎসাহিত করেছিলেন এবং ৮৪০০০ স্তূপ ও ৮৪০০০ বৌদ্ধবিহার নির্মাণেও অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন।[৮]
সিংহলীগ্রন্থ মহাবংশে রয়েছে যে তাঁর অস্থিসন্ধিগুলো শুধু ভাঁজ করলে দৃশ্যমান হতো।তাই তাঁর নাম অসন্ধিমিত্রা। সম্ভবত এখানে তাঁর দৈহিক গঠনকে "অদৃশ্য" উপমা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আক্ষরিকভাবে "অসন্ধিমিত্রা" শব্দের অর্থ হতে পারে বিচ্ছিন্নের (অসন্ধি) বন্ধু (মিত্রা)।
অসন্ধিমিত্রা সম্পর্কে পালিগ্রন্থ দসবত্থুপ্পকরণ ও ত্রৈভূমিকথায় পৌরাণিক ভঙ্গির কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।[৯]পূর্বজন্মে অসন্ধিমিত্রা একজন প্রত্যেকবুদ্ধকে (যে বুদ্ধ নিজেই নিজের শিক্ষক) একখণ্ড বস্ত্র দান করেছিলেন। এরপর পরজন্মে একদিন তিনি ইক্ষু ভক্ষণ করছিলেন। তখন সম্রাট অশোক তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে কৌতুক করলেন এবং বললেন তুমি নিজের কর্মের দ্বারা লব্ধ বস্তু না ভক্ষণ করে অন্যের পরিশ্রমের ইক্ষু ভক্ষণ করছ। অসন্ধিমিত্রা বললেন, এটা আমার নিজেরই কর্মফল। অশোক বললেন, প্রমাণ দিতে হবে। তুমি যদি ৬০,০০০ বস্ত্র দান করতে পার তবেই বিশ্বাস করব। রাতে দেবদূত এসে তাঁকে জানিয়ে দিল যে পূর্বজন্মে তিনি একখণ্ড বস্ত্র দান করেছিলেন। এই ভালো কাজের বিনিময়ে ৬০,০০০ বস্ত্র অলৌকিকভাবে উৎপন্ন হয়ে যাবে।[১০]