অ্যাঞ্জেলা ব্যাসেট | |
---|---|
Angela Bassett | |
![]() ২০১৫ সালে ব্যাসেট | |
জন্ম | অ্যাঞ্জেলা ইভলিন ব্যাসেট আগস্ট ১৬, ১৯৫৮ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএ, এমএফএ) |
পেশা | অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক, সক্রিয়কর্মী |
কর্মজীবন | ১৯৮৫-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | কোর্টনি বি. ভেন্স (বি. ১৯৯৭) |
সন্তান | ২ |
অ্যাঞ্জেলা ইভলিন ব্যাসেট ভ্যান্স (জন্ম ১৬ আগস্ট ১৯৫৮) একজন মার্কিন অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক ও সক্রিয়কর্মী। তিনি ১৯৮০-এর দশকের শেষভাগ থেকে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্রে কাজের জন্য তিনি অধিক পরিচিত। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দুটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জয়সহ দুটি একাডেমি পুরস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার ও সাতটি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন।
তিনি হোয়াট্স লাভ গট টু ডু উইথ ইট (১৯৯৩) চলচ্চিত্রে টিনা টার্নারের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া ব্যাসেট ম্যালকম এক্স (১৯৯২) ও প্যান্থার (১৯৯৫) চলচ্চিত্রে বেটি শাবাজ চরিত্রে, দ্য জ্যাকসন্স: অ্যান আমেরিকান ড্রিম (১৯৯২) চলচ্চিত্রে ক্যাথরিন জ্যাকসন, নটরিয়াস (২০০৯) চলচ্চিত্রে ভোলেটা ওয়ালেস এবং বেটি অ্যান্ড করেটা (২০১৩) চলচ্চিত্রে করেটা স্কট কিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ভূমিকা হল বয়েজ এন দ্য হুড (১৯৯১)-এ রেভা স্টাইলস, ওয়েটিং টু এক্সহেল (১৯৯৫)-এ বার্নি হ্যারিস, কনট্যাক্ট (১৯৯৭)-এ রেচেল কনস্ট্যানটাইন, অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন (২০১৩) ও লন্ডন হ্যাজ ফলেন (২০১৬)-এ লিন জ্যাকবস, ব্ল্যাক প্যান্থার (২০১৮) ও অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম (২০১৯), ব্ল্যাক প্যান্থার: ওয়াকান্ডা ফরেভার (২০২২)-এ রানি রামোন্ডা। শেষোক্ত চলচ্চিত্রের জন্য তিনি চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
ব্যাসেট ১৯৫৮ সালের ১৬ই আগস্ট নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা বেটি জেন (বিবাহপূর্ব গিলবার্ট; ১৯৩৫-২০১৪)[১] এবং পিতা ড্যানিয়েল বেঞ্জামিন ব্যাসেট (১৯২৪-১৯৮১)।[২] অ্যাঞ্জেলা হারলেমে বেড়ে ওঠেন।[১][৩][৪] তার নামের মধ্যাংশ তার ফুফু ইভলিনের নামানুসারে রাখা হয়েছিল।[৪] ব্যাসেট বংশনামটির উৎপত্তি হয় তার প্র-পিতামহ উইলিয়াম হেনরি ব্যাসেটের নিকট থেকে। তিনি তার সাবেক ক্রীতদাস মালিকের বংশনাম থেকে এই নামটি গ্রহণ করেন।[৫] ব্যাসেটের জন্মের ১০ মাস পর তার মাতা পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হন এবং দ্বিতীয় সন্তান ডিনেটের জন্ম দেন। ব্যাসেটের ভাষ্যমতে এই গর্ভধারণের ফলে বিষয়গুলো কঠিনতর হতে থাকে। ব্যাসেটের পিতামাতা তাকে তার ফুফু গোল্ডেনের কাছে রেখে আসেন। তার ফুফুর কোন সন্তান না থাকায় তিনি বাচ্চাদের পছন্দ করতেন এবং তাদের যত্ন করতেন।[৬]
১৯৮৫ সালে ব্যাসেট টিভি চলচ্চিত্র ডাবলটেক-এ যৌনকর্মী চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে টেলিভিশনে কাজ শুরু করেন। তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে এফ/এক্স (১৯৮৬) চলচ্চিত্রে সংবাদ প্রতিবেদক চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে, যার জন্য তাকে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডে যোগ দেওয়ার দরকার ছিল।[৭] ব্যাসেট আরও কাজ পাওয়ার জন্য ১৯৮৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে আসেন এবং বয়েজ এন দ্য হুড (১৯৯১) ও ম্যালকম এক্স (১৯৯২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। ম্যালকম এক্স চলচ্চিত্রে বেটি শাবাজ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ইমেজ পুরস্কার অর্জন করেন। পুরস্কার পেলেও চলচ্চিত্রটি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া অর্জন করতে পারেনি। সমালোচকগণ উল্লেখ করেন যে চলচ্চিত্রটি ম্যালকম এক্সের আত্মজীবনীর উন্মত্ততা ধরতে ব্যর্থ হয়।[৮] ম্যালকম এক্স নির্মাণকালে পরিচালক স্পাইক লি ব্যাসেটকে ম্যালকম এক্সকে গুলি করার সময়ের একটি টেপ দেখান, কারণ তারা এই দৃশ্যটি ধারণ করবেন। ব্যাসেট এই রেকর্ডিংটিকে "ভীতিপ্রদ" বলে উল্লেখ করেন; কিন্তু সম্পূর্ণ দৃশ্যের বিবরণ শোনার পর তিনি সেই যন্ত্রণা ধারণ করতে এবং এই দৃশ্যটি পুনঃসৃজনে সমর্থ হন। ব্যাসেট অনুভব করেন যে এই গুপ্তহত্যার দৃশ্যটি সঠিকভাবে ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ এবং অবাক হন বেটি কীভাবে সবকিছু সঠিকভাবে চলার, পরিবারের লালনপালন, তাদের শিক্ষিত করে তোলা ও তাদের নিয়ে বেঁচে থাকার মনোবল অর্জন করেছিলেন।[৯] ম্যালকম এক্স চলচ্চিত্রটি ১৯৯২ সালের ১৮ই নভেম্বর মুক্তি পায়। তিনি প্যান্থার (১৯৯৫) চলচ্চিত্রে পুনরায় বেটি শাবাজ চরিত্রে অভিনয় করেন।
ব্যাসেট পিক্সারের অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র সৌল-এ ডরোথিয়া উইলিয়ামস চরিত্রে কণ্ঠ দেন। চলচ্চিত্রটি ২০২০ সালের ২৫শে ডিসেম্বর ডিজনি+-এ মুক্তি পায়। তিনি ২০২১ সালের ১লা অক্টোবরে রাত্রীকালিন দর্শনীয় ডিজনি এনচেন্টমেন্ট-এ ম্যাজিক কিংডমের বর্ণনাকারী ছিলেন।[১০] ২০২২ সালে নভেম্বর মাসে তিনি ব্ল্যাক প্যান্থার: ওয়াকান্ডা ফরেভার চলচ্চিত্রে পুনরায় রানি রামোন্ডা চরিত্রে অভিনয় করেন।[১১] এই অনুবর্তী পর্বে তার অভিনয় প্রশংসিত হয় এবং তিনি ৮০তম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার আয়োজনে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কৃত হন, ফলে তিনি মার্ভেল কমিক্স ভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে প্রধান সারির পুরস্কার বিজয়ী প্রথম অভিনয়শিল্পী।[১২] এছাড়া তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারেরও মনোনয়ন লাভ করেন, ফলে তিনি মার্ভেল স্টুডিওজের চলচ্চিত্রে কাজ করা প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অভিনয় শাখায় একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন লাভ করেন।[১৩][১৪]