অ্যাডোরেশন অব ম্যাজাই (বাংলায়ঃ ম্যাজাইদের আদর) পদবাচ্যটি যীশুর জন্মের সময়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এক অলৌকিক আখ্যানের কথা বলে। এই আখ্যান অনুসারে বাইবেলে বর্ণিত ৩ জন ম্যাজাই (পণ্ডিত/রাজা) এক নক্ষত্রের পথ ধরে শিশু যীশুকে খুঁজে পান। তারা তাকে উপহার হিসেবে স্বর্ণ, কুন্দুরু (লোবান), গন্ধরস অর্পণ করেন। এবং তার আরাধনা করেন। বাইবেলে এই ঘটনাটি ম্যাথিউ ২:১১ তে এইরুপে বর্ণিত হয়েছে: "পরে তাহারা গৃহমধ্যে গিয়া, শিশুটিকে তাহার মাতা মরিয়মের সহিত দেখিতে পাইলেন, ও মাটিতে হাটু গেড়ে বসিয়া, তাহাকে প্রণাম করিলেন: এবং নিজেদের সম্পদের ডালা খুলিয়া, তাঁহাকে স্বর্ণ, কুন্দুরু, ও গন্ধরস; উপহার দিলেন। এরপর হেরডের কাছে ফিরে না যাওয়ার জন্য যে নির্দেশ স্বপ্নে পেয়েছিলেন তা অনুসরণ করে ভিন্ন পথ ধরে তারা ফিরে যান।"
মধ্যযুগের চিত্রশিল্পীরা তাদের তুলির আঁচড়ে এ ধারণাটিকেই প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন, যীশুই যে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর রাজা তা কিছু মানুষ যীশুর শিশু অবস্থাতেই বুঝতে পেরেছিল। যীশুকে ম্যাজাইদের আদরের এই ধরনের চিত্রকলা সেই অলৌকিক আখ্যানকেই অনুভব করায়।
মধ্য যুগে এই গল্পটি জনে জনে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শিশু যীশুর কাছে যাওয়া এ তিন ব্যক্তি কে তা নিয়ে নানাবিধ কল্পনা হতে থাকে। বহু লোক অনুমান করে এই তিনজন পূর্বের কোন জায়গা থেকে এসেছে।[১] পরিশেষে এটাই গৃহীত হয় যে এই তিন রাজা সে সময়ের তিনটি প্রধান মহাদেশ যথা: ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।[১] এই তিনজন রাজার পরিচয় হিসেবে যে তিনটি নামের কথা শত বছর ধরে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে তারা হলেন রাজা গেসপার (অথবা ক্যাসপার), মেলচিওর, এবং বালথাসার।[১]
মেজাইদের আগমনের ঘটনাটি এপিফেনি হিসেবে খ্রিষ্টান সমাজে উদযাপিত হয়। যদিও পূর্ব অর্থোডক্স গীর্জা ও পশ্চিমা খ্রিষ্টধর্মের গীর্জা বর্ষপঞ্জি কিছুটা ভিন্নতার জন্য এপিফেনি পালনের তারিখ ভিন্ন ভিন্ন দিনে হয়। পশ্চিমা খ্রিষ্টধর্মে এই দিনটিকে উদযাপন করা হয় ৬ জানুয়ারী এবং পূর্ব অর্থোডক্স গীর্জা যীশুর জন্মদিনেই (২৫ ডিসেম্বর) এই দিনটিকে উদযাপন করে।